সৌরভ দত্ত, কলকাতা: কোভিড পরিকাঠামোয় কাটছাঁট শুরু করে দিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর (State Health Department)। করোনা (COVID-19) মোকাবিলায় সারা রাজ্যে একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল অধিগ্রহণ করেছিল স্বাস্থ্য ভবন। সেই সব হাসপাতালের অধিগৃহীত সিসিইউ (CCU), এইচডিইউ (HDU)-সহ সাধারণ শয্যা বেসরকারি হাসপাতাল (Private Hospital) কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করলেন রাজ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী। কলকাতার কেপিসি মেডিক্যাল কলেজের পাশাপাশি উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, দার্জিলিং-সহ একাধিক জেলায় এই পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে নির্দেশিকায়।
বৃহস্পতিবার বিজ্ঞপ্তি জারি করে সরকার অধিগৃহীত ১২টি বেসরকারি হাসপাতালে সিসিইউ, এইচডিইউ এবং সাধারণ শয্যা মিলিয়ে মোট ৭৪৮টি শয্যার উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ তুলে নিল স্বাস্থ্য ভবন। ওই ১২টি হাসপাতালের মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনার চারটি, হাওড়ার দুটি, দার্জিলিং, মালদহ, হুগলি, রামপুরহাট, পশ্চিম বর্ধমানের একটি করে হাসপাতাল এবং কলকাতার কেপিসি মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে।
আরও পড়ুন: “সংসদ তৈরির টাকা কৃষকদের দিতে পারত”, কেন্দ্রকে আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রীর
অতিমারী মোকাবিলায় একডজন হাসপাতালের মোট ১৪৪৮টি শয্যা অধিগ্রহণ করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। সেই অধিগৃহীত শয্যা ফিরিয়ে দেওয়ারই কাজ শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীর সই করা বিজ্ঞপ্তিতে নিয়ন্ত্রণ শিথিল করার কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, এখন রাজ্যে সক্রিয় রোগী (Active Patient)-র সংখ্যা কমে এসেছে। হাসপাতালে করোনা আক্রান্তের ভর্তির হারও নিম্নমুখী। সেই জন্য এই পদক্ষেপ করা হল। এরই মধ্যে সরকারি ক্ষেত্রেও কোভিড হাসপাতালের চিকিৎসকদের জন্য থাকার ব্যবস্থা এবং যাতায়াতের খরচে রাশ টানা হয়েছে। আগামি দিনে খাবারের খরচের ক্ষেত্রেও একই ভাবনা রয়েছে বলে খবর।
যদিও বেসরকারি হাসপাতালে শয্যা-মুক্তির পিছনে স্বাস্থ্যসাথী অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন দফতরের আধিকারিকদের একাংশ। তাঁরা বলছেন, দুয়ারে সরকার কর্মসূচির হাত ধরে রাজ্যের বিপুল সংখ্যক মানুষের হাতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পৌঁছে গিয়েছে। কোভিড হাসপাতালের সংখ্যা কমিয়ে না আনলে বেসরকারি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসাথীর চাহিদা অনুযায়ী পরিষেবা কতখানি দেওয়া যাবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। পাশাপাশি, অবাধে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড বিলি হওয়ায় বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষদের মধ্যে উষ্মা তৈরি হয়েছে। তাঁরা বলছেন, স্বাস্থ্যসাথীর যা রেট তাতে বিপুল সংখ্যক মানুষকে পরিষেবা দিয়ে লাভের মুখ দেখা সম্ভব নয়। সে জন্যই অধিগৃহীত কোভিড হাসপাতালের শয্যা নিয়ন্ত্রণ মুক্ত করে ক্ষোভ প্রশমন প্রক্রিয়া শুরু হল বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশ।
আরও পড়ুন: মুখ্যসচিব ও ডিজিপির সঙ্গে বৈঠকের ফল “দুর্ভাগ্যজনক”, বললেন রাজ্যপাল