কলকাতা: মারের বদলে পাল্টা মারের নিদান দিয়েছেন বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল। তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। এবার এই কথার কারণ বিশ্লেষণ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বললেন, “শাসকদলের কোনও মন্ত্রীর বলা এই কথা আর বিরোধী দলের কোনও নেতানেত্রীর বলা এই কথার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।” কী সেই পার্থক্য, তারও বিশ্লেষণ করলেন বিজেপির বঙ্গ সভাপতি।
মারের বদলে মার
মারের বদলে পাল্টা মারের নিদান দিয়েছেন অগ্নিমিত্রা পাল। আসানসোল দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক দলীয় বৈঠকে মঙ্গলবার এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, কলকাতায় যা হয়েছে, তা আসানসোলেও হবে, তা মনে করার কোনও কারণ নেই। একই সঙ্গে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উত্সাহ দিতে জানান, আসানসোল পুরভোটে বিজেপির জয় নিশ্চিত করতে তিনি নিজে নির্বাচনের সময় থাকবেন।
সুকান্ত বোঝালেন বক্তব্যের আসল ব্যাখ্যা
ঠিক আসলে কী বলতে চেয়েছেন নেত্রী? এই কথার অন্তর্নিহিত অর্থই বা কী, এবার তা বিশ্লেষণ করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, “শাসকদলের কোন মন্ত্রী বা শান্ত্রী যখন বলছেন, যে কোন ভাবে জিতব। তখন বুঝতে হবে, পুলিশ প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে বেনজির সন্ত্রাস করা হবে। বিরোধী যখন বলেন, বুঝতে হবে কর্মীদের সর্বস্ব দিয়ে লড়তে বলছেন। দুটো বক্তব্যে একটু পার্থক্য আছে।”
প্রসঙ্গত, কলকাতা পুরভোটে শাসকদলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছে সব বিরোধীরাই। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের আর পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে উঠেছে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ। এই অভিযোগের আবহেই আগামী ২২ তারিখ চার পৌরনিগমের নির্বাচন। তার মধ্যে একটি আসানসোল। সম্প্রতি বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আনা হয়েছে অগ্নিমিত্রা পালকে। কলকাতা জোন ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা জোনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অগ্নিমিত্রাকে। আবার আন্দামান ও নিকোবরে ভোটের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এর মধ্যে নিজের এলাকা, আসানসোল পুরনিগমে ভোট। সেই ভোটে বাড়তি দায়িত্ব এসে পড়েছে। ফলে চাপ রয়েছে তাঁর ওপর। সঙ্গে কর্মীদের মনোবল চাঙা করার ‘এক্সট্রা অ্যাডেড প্রেশার’। ফলে সংগঠন চাঙা করতে কর্মীদের এই দাওয়াই দিয়েছেন তিনি। তবে তা কোনও আঙ্গিকে বলেছেন, তারই ব্যাখ্যা দিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার।
অগ্নিমিত্রার পাল্টা তৃণমূল
বিজেপি বিধায়কের পাল্টা দিতে দেরি করেনি ঘাসফুল শিবির। অগ্নিমিত্রার হুঁশিয়ারি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আসানসোল জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। তাঁর পাল্টা হুমকি, “বিজেপি মূর্খের স্বর্গে বাস করছে। বিজেপি যদি তৃণমূলের ক্ষমতা দেখতে চায় বিজেপির একজন কর্মীকেও খুঁজে পাওয়া যাবে না। তৃণমূল পুরভোটে কোনও অশান্তির মধ্যে যাবে না।”
তিনি আরও বলেন, “দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশ কোনওরকম অশান্তির মধ্যে যাব না। আমাদের দলীয় কর্মীরা যেন কোনও অশান্তির মধ্যে জড়িয়ে না যায় সেটাও আমরা দেখব। বিজেপির কোন নেতানেত্রী কী বলছেন, তা নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। তবে এটাও পরিষ্কার বলে দিচ্ছি, ক্ষমতা দেখতে এলে মূর্খের স্বর্গে বাস করছে তারা”। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।