Bansdroni Suicide: ছেলের মৃত্যুতে প্রতিবেশীদের বলেছিলেন এক কথা আর পুলিশকে আরেক! বাঁশদ্রোণীর ছাত্রমৃত্যুতে মায়ের বয়ানে ধোঁয়াশা
Bansdroni Suicide: প্রতিবেশীদের কথায় নতুন একটি তথ্য উঠে আসছে তদন্তকারীদের হাতে, তা নিয়েই ধোঁয়াশা। আদৌ কি আত্মহত্যা করেছে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র রবিন?
কলকাতা: বাঁশদ্রোণীর ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃ্ত্যুর ঘটনায় নতুন করে রহস্য দানা বেঁধেছে। প্রতিবেশীদের কথায় নতুন একটি তথ্য উঠে আসছে তদন্তকারীদের হাতে, তা নিয়েই ধোঁয়াশা। আদৌ কি আত্মহত্যা করেছে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র রবিন?
প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, মঙ্গলবার রাতে ঘটনার পর রবিনের মা যখন তাঁদেরকে ডাকতে যান, তখন বলেছিলেন রবিনের বাবা ছুরি মেরে টাকা পয়সা নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। তবে পরবর্তীতে তিনিই পুলিশের কাছে দাবি করেন, নিজের পেটে ছুরি মেরেছে রবিন। ধোঁয়াশা এখানেই। আদৌ ঘটনাকে কী ঘটেছে? কেন পুলিশের কাছে অন্য় কথা বললেন রবিনের মা? প্রাথমিক তদন্তে আত্মঘাতী হওয়ার তথ্য সামনে উঠে এলেও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই কীভাবে মৃত্যু, তা স্পষ্ট হবে বলেই জানাচ্ছেন তদন্তকারীরা।
বাঁশদ্রোণীতে ছুরিকাহত হয়ে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রের মৃত্যু হয় মঙ্গলবার রাতে। বছর তেইশের রবিন দেবনাথ দ্বাদশ শ্রেণিতে তিন বছর ধরে পড়ছিল। বারবার চেষ্টা করেও পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারছিল না সে। বারবার অকৃতকার্য হওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল সে। সঙ্গে জুটত বাবা-মায়ের বকুনি। লাঞ্ছনা সহ্য করতে পারছিল না রবীন। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, রবিনের পড়াশোনা নিয়ে তাদের বাড়িতে নিত্য অশান্তি লেগে থাকত।
এদিকে, ইদানীং করোনাকালে বাবা কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন। মা পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালাতেন। ফলে পরিবারে আর্থিক অনটন শুরু হয়েছিল। তাতে অশান্তির মাত্রা বেড়েছিল দ্বিগুণ। মানসিক চাপে বিধ্বস্ত ছিল রবিন। প্রতিবেশীরা সে কথা জানতেন। প্রত্যেকদিনের অশান্তিতে মানসিক চাপ আর নিতে পারছিল না সে। এদিনে রবিনের বন্ধুবান্ধবও কম ছিল। মনের চাপের কথা সেভাবে কারোর সঙ্গে সহ্য করতে পারছিল না।
প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যাতেও রবিনের বাড়িতে অশান্তি হয়। কিন্তু নিত্য পারিবারিক বিবাদ ভেবে তাঁরা প্রথমটায় বিশেষ আমল দেননি। পরে রবিনের মায়ের আর্তনাদেই তাঁরা বিপদ আঁচ করতে পেরেছিলেন। রবিনের ঘরে ঢুকতেই তাঁরা দেখেন মেঝেতে রক্ত পড়ে রয়েছে। এক প্রতিবেশীর কথায়, “রবিনের মা বলে ওর বাবা ছুরি মেরেছে। সব টাকা পয়সা নিয়ে চলে যাচ্ছে। পরে দেখি পুলিশের সামনে বলল রবিন নিজেই তার পেটে ছুরি ঢুকিয়েছে।”
এক প্রতিবেশী বলেন, “রোজ অশান্তি হত ওদের বাড়িতে। ছেলেটা ক্লাস টুয়েলভে পড়ত। পড়াশোনা করেও পাশ করতে পারছিল না। এই নিয়ে বাবা-মা রোজই বকত। তারপর পরিবারের টাকার অভাবও ছিল। সব মিলিয়ে নাজেহাল হয়ে পড়েছিল ওরা।” পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। রবিনের মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। আদৌ ঠিক কী ঘটেছিল, তা জানার চেষ্টা করছে।