কলকাতার নমুনায় ব্রিটেনের স্ট্রেন? দিল্লির দ্বারস্থ এনআইবিএমজি

ঋদ্ধীশ দত্ত |

Dec 30, 2020 | 1:29 AM

একজনের নমুনা পুনরায় পর্যালোচনা করার জন্য দিল্লির এনসিডিসি'তে পাঠানো হয়েছে। এনসিডিসি সেই নমুনা পরীক্ষা করে ব্রিটেনের স্ট্রেন রয়েছে কি না তা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়ে দেবে

কলকাতার নমুনায় ব্রিটেনের স্ট্রেন? দিল্লির দ্বারস্থ এনআইবিএমজি
ফাইল চিত্র

Follow Us

সৌরভ দত্ত:  ব্রিটেন ফেরত যুবকের নমুনা সিকোয়েন্স করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ’ (এনসিডিসি) কন্ট্রোলের উপর ছেড়ে দিল ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োমেডিক্যাল জিনোমিক্স (এন‌আইবিএমজি)। দিন‌ দশেক আগে ব্রিটেন থেকে ফেরার সময় কলকাতা বিমানবন্দরে দুই ব্যক্তির দেহে করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এলে তাঁদের দেহে উদ্বেগের স্ট্রেন রয়েছে কি না তা জানতে দু’জনকে আইসোলেশনে রাখা হয়। দু’জনের মধ্যে একজন হলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের প্রশাসনিক কর্তার পুত্র। তিনি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের‌ই কোভিড ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অপরজন রাজারহাট-সিএনসিআইয়ে ছিলেন। দ্বিতীয় ব্যক্তির সিএনসিআইয়ে আরটি-পিসিআর করানো হলে রিপোর্ট অসম্পূর্ণ আসে। স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে পুনরায় নমুনা পরীক্ষা হলে দ্বিতীয় ব্যক্তি কোভিড নেগেটিভ বলে জানা যায়।

এরপর কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন যুবকের পাশাপাশি তাঁর সঙ্গে বিমানে আসা মোট সাতজনের নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সের জন্য কল্যাণীতে অবস্থিত এন‌আইবিএমজি’তে পাঠানো হয়েছিল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রের খবর, সাতজনের মধ্যে ছয়জনের নমুনায় জিনোম সিকোয়েন্স করে কিছু পাওয়া যায়নি। একজনের নমুনা পুনরায় পর্যালোচনা করার জন্য দিল্লির এনসিডিসি’তে পাঠানো হয়েছে। এনসিডিসি সেই নমুনা পরীক্ষা করে ব্রিটেনের স্ট্রেন রয়েছে কি না তা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়ে দেবে। কেন্দ্রীয় গবেষকদের একাংশের বক্তব্য, কলকাতার নমুনায় তাৎপর্যপূর্ণ কিছু রয়েছে বলেই তা দিল্লিতে দ্বিতীয়বার পর্যালোচনার জন্য পাঠানো হয়েছে। তা না হলে একজনের নমুনা শুধু পাঠানো হত না। তবে এ নিয়ে জল্পনা না বাড়িয়ে রিপোর্টে কী রয়েছে তার সরকারি ভাবে ঘোষণার জন্য অপেক্ষা করাই উচিত বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় গবেষকদের একাংশ।

বস্তুত, এ ধরনের জল্পনায় অহেতুক আতঙ্ক ছড়াতে পারে বলে মনে করেন এন‌আইবিএমজি’র অধিকর্তা তথা ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সের প্রফেসর সৌমিত্র দাস। তাঁর কথায়, “ব্রিটেনের কোন‌ও স্ট্রেন সে দেশে ছোঁয়াচে প্রমাণিত হয়েছে মানে এদেশেও তার কার্যক্ষমতা এক‌ই হবে তা কিন্তু নয়। আমাদের দেশের মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আর ব্রিটেনের মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এক নয়।” কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে খবর, এন‌আইবিএমজি’র পর্যবেক্ষণ পর্যালোচনা করে এনসিডিসি তাদের সিদ্ধান্ত রাজ্যতে জানিয়ে দিয়েছে। কলকাতার যুবকের দেহে ব্রিটেনের স্ট্রেনের অস্তিত্ব নিয়ে এন‌আইবিএমজি’র পর্যবেক্ষণে খুব একটা তারতম্য ঘটেনি বলেই খবর।

আরও পড়ুন: করোনার গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে? উদাসীন নেতা-মন্ত্রীরা, উদ্বেগে চিকিৎসকরা

রিপোর্ট কী পেয়েছেন? স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, বুধবারের মধ্যে রিপোর্ট আসার কথা ছিল। এনসিডিসি’র রিপোর্টে কী রয়েছে তা খোঁজ নিয়ে জানতে হবে। কলকাতা নিয়ে এনসিডিসি’র রিপোর্ট বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, পুনের মতো পজিটিভ বলে এদিন রাতে একটি খবর ছড়িয়ে পড়ে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম পত্রপাঠ তা খারিজ না করে বলেন, “বিষয়টি সত্য কি না তা জানার চেষ্টা করছি।” গভীর রাত পর্যন্ত খবরটি সত্য এ কথা যেমন স্বাস্থ্যসচিব বলেননি, তেমন খবর অসত্য বলে জল্পনাতে ইতিও টানেননি।

আরও পড়ুন: জমা জলের বিরুদ্ধে রংতুলি দাগল খুদে পড়ুয়ারা, মুগ্ধ স্বাস্থ্যভবনের কর্তারা

Next Article