
কলকাতা: শুক্রবার শুভেন্দুর ‘রক্ষাকবচ’ প্রত্যাহার ঘিরে যে জল ঘোলা শুরু হয়েছিল, তাতে এবার ডুব দিলেন খোদ তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষও। রাজ্য়ের বিরোধী দলনেতার ‘রক্ষাকবচ’কে ‘অমরত্বের বর’ বলেই কটাক্ষ করলেন তিনি। পাশাপাশি, কলকাতা হাইকোর্টেও তৃণমূলের তোলা দীর্ঘদিনের দাবি মান্যতা পেয়েছে বলেই মত তাঁর।
মাঝে ব্যবধান বছর চারেক। রাজ্যের শাসকশিবির বারংবার সুর চড়িয়েছে। কিন্তু দিনশেষে জয় ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছেন শুভেন্দুই। কোনও মতে তাঁর নামের পাশ থেকে মুছে ফেলা যায়নি হাইকোর্টের দেওয়া ‘রক্ষাকবচের’ নির্দেশ। তবে সেই সবটাই এখন অতীত। একুশ সালে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের দেওয়া নির্দেশকে কাটল অন্য সিঙ্গল বেঞ্চ। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার দেওয়া ‘রক্ষাকবচ’ সরিয়ে নিলেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। যা ঘিরে স্বাভাবিক নিয়মেই চড়ল রাজনীতি। তৃণমূল জাহির করল নিজেদের ‘জয়’। বিজেপি বলল, এসবে ভয় নেই। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বললেন, ‘রাজনীতির পথ আরও প্রশস্ত হল’।
এদিন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘এটা মহিসাসুরের ব্রহ্মার থেকে পাওয়া অমরত্বের বরের মতো। খুব সমস্যার বিষয়। তবে আজকের এই নির্দেশ তৃণমূল কংগ্রেসের বক্তব্যগুলিকেই মান্যতা দিয়েছে। আমরা প্রথম থেকেই বলেছিলাম, এই রক্ষাকবচ আইনসিদ্ধ নয়। যা শুভেন্দু ও বিজেপির জন্যও একটা বড় ধাক্কার সমান। অবশ্য ওরা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে। কিন্তু আসল কথাটা হল, জোর কা ঝাটকা, ধীরে সে লাগা।’
অন্যদিকে তৃণমূল সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেন, ‘শুভেন্দু অধিকারীর রক্ষাকবচ আপাতত প্রত্যাহার করা হয়েছে। ওনার বিরুদ্ধে অনেকগুলো অভিযোগ ছিল। বেশ কয়েকটা খারিজ করেছে আদালত। চার-পাঁচটা মামলায় তদন্তের জন্য সিবিআই ও রাজ্য পুলিশের একটা যুগ্ম সিট গঠন করা হয়েছে।’ কুণালের সুরে তোপ তৃণমূল কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তীরও। অনির্দিষ্টকালের জন্য রক্ষাকবচ চলতে পারে না বলেই মত তাঁর। এদিন তিনি বলেন, ‘অনির্দিষ্টকালের জন্য হাইকোর্ট কাউকে রক্ষাকবচ দিয়ে চলতে পারে না। এই মন্তব্য করে কলকাতা উচ্চ আদালতের বিচারপতি মাননীয় শ্রী জয় সেনগুপ্ত শুভেন্দু অধিকারীর সুরক্ষাকবচ প্রত্যাহার করেছেন।’
তাঁর সংযোজন, ‘এই নির্দেশের ফলে শুভেন্দু অধিকারী যে একচেটিয়া আইনি সুবিধা পাচ্ছিলেন, এমনকি তাঁর একাধিক উস্কানিমূলক মন্তব্যে সমাজে অস্থিরতা বৃদ্ধি পাওয়া কিংবা তাঁর কনভয়ে গাড়ি চাপা পড়ে মানুষের মৃত্যুর পরেও তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর নিতে পারছিল না পুলিশ। তা আপাতত বন্ধ হবে।’