কলকাতা : রাজ্যপালের ভাষণে পুরভোটের সন্ত্রাস সংক্রান্ত কোনও কথা নেই, সেই দাবি জানিয়েই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিধানসভায় বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। আর সেই বিক্ষোভের পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা তৃণমূল বিধায়কদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন শুভেন্দু। তাঁর দাবি, অধিবেশন কক্ষের মধ্যে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে। মমতার ইশারাতেই মহিলা বিধায়করা ধাক্কা দিয়েছেন বলে অভিযোগ তাঁর। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শশী পাঁজার নাম করে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।
শুভেন্দু এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, রাজ্যপাল নিগৃহীত হয়েছেন বিধানসভা কক্ষে। নন্দীগ্রামের বিধায়ক বলেন, ‘রাজ্যপাল স্বীকার করবেন কি করবেন না, জানি না। তবে রাজ্যপালকে ধাক্কা মেরেছে তৃণমূলের গুণ্ডা বিধায়করা। মুখ্যমন্ত্রীর চোখের ইশারায়, একাধিক মহিলা বিধায়ক শারীরিক নির্যাতন করেছে রাজ্যপালকে।’ রাজভবনে গিয়ে তাঁর স্বাস্থ্যর খোঁজ নেবেন বলেও জানিয়েছেন বিজেপি নেতা। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার কথাও বলবেন রাজ্যপাল ধনখড়কে। শুধু তাই নয়, শুভেন্দুর আরও দাবি, বিজেপি বিধায়কদের অশালীন ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে।
শুভেন্দু অধিকারী আরও অভিযোগ করেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা চেয়েছেন, সেটাই রাজ্যপালকে পড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে। বিজেপির দাবি, রাজ্যপালে বক্তৃতার কপিতে নেই পুরভোটের ভোটলুটের কথা, নেই কর্মসংস্থানের কথা, নেই জমি নীতির উল্লেখ। তিন মাস পর পর কেন রাজ্য সরকারকে বড় অঙ্কের ঋণ নিতে হচ্ছে তার উল্লেখও নেই। অবসরপ্রাপ্তদের নিয়ে কোনও দিশা নেই। চুক্তিবদ্ধদের সম কাজে সম বেতনের বিষয়ে কোনও দিশা নেই বলে দাবি করেছেন তিনি। শুভেন্দু জানান, রাজ্যপালের বক্তৃতার কপি নিয়ে আপত্তি থাকায় এ দিন গণতান্ত্রিক উপায়ে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছিল বিজেপি।
ওই ঘটার পর মিছিল করে রাজভবনের দিকে যান বিজেপি বিধায়করা। শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, রাজ্যপালের খোঁজ নিতেই যাচ্ছেন তাঁরা।
বাজেট অধিবেশনের শুরুতে রাজ্যপাল এ দিন ভাষণ শুরু করার আগে থেকেই বিজেপি বিধায়করা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পুরভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। বিজেপি বিধায়করা স্লোগান তোলেন, ‘‘ভারত মাতা কী জয়, ছাপ্পা ভোটের সরকার আর নেই দরকার।” এরই মধ্যে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রাজ্যপালের বক্তব্য সকলের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। সেটাই টেবিল করা হবে বলে জানান স্পিকার। তখনই রাজ্যপাল মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতেই বলেন, তিনি হতবাক হচ্ছেন। তিনি না বললে কীভাবে তাঁর ভাষণ টেবিল হতে পারে? প্রশ্ন তোলেন রাজ্যপাল।
আরও পড়ুন : West Bengal Assembly: ‘হেরেও লজ্জা নেই বিজেপির’, বিধানসভায় রাজ্যপালকে গাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে বললেন মমতা