West Bengal Assembly: ‘হেরেও লজ্জা নেই বিজেপির’, বিধানসভায় রাজ্যপালকে গাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে বললেন মমতা
West Bengal Assembly: বিজেপি বিধায়করা তাঁদের বিক্ষোভ তখনও অব্যাহত রেখেছিলেন। সেসময় ভাষণ পাঠ না করেই নেমে যেতে উদ্যত হয়েছিলেন রাজ্যপাল। তাঁকে বাধা দেন তৃণমূলের মহিলা বিধায়করা।
কলকাতা: “বিজেপি আজ যা করেছে, সেটা গণতন্ত্রের পক্ষে লজ্জার। আমাদের কথায় এটা বিজেপির পরিকল্পিত বিক্ষোভ।” বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণের আগে বিজেপির ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শনের প্রসঙ্গে বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার সকাল থেকেই উত্তপ্ত ছিল বিধানসভা। রাজ্যপালের জগদীপ ধনখড়ের ভাষণ শুরুর আগেই ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি বিধায়করা। বিষয়টি নিয়ে তুলকালাম হয় বিধানসভায়। নজিরবিহীন ঘটনা বলে অ্যাখ্যা দেন স্পিকার। বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিরোধীদের বিধায়করা স্লোগান করেন, সাউটিং করেন। এরকম ঘটনা আগে বিধানসভায় ঘটেনি। এর আগে রাজ্যপালের ভাষণ বন্ধ হয়নি। এটা অসাংবিধানিক। আমরা এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেছি। আমাদের বিধায়করা কেউ কোনও কথা বলেনি। স্পিকার নিজে হাত জোড় করে আবেদন করেছেন। আমি অনুরোধ করেছি। বিজেপি আজ যা করেছে, সেটা গণতন্ত্রের পক্ষে লজ্জার। আমাদের কথায়, এটা বিজেপির পরিকল্পিত বিক্ষোভ। হেরেও ওদের লজ্জা নেই।”
সোমবার সকালে বিধানসভার চিত্রটা ঠিক কী রকম ছিল?
রাজ্যপালের ভাষণ শুরুর আগে থেকেই এদিন সকালে বিজেপি বিধায়করা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পুরভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। রাজ্যপাল সেসময় বাজেট ভাষণ পাঠ করার অপেক্ষা করছিলেন। তখনই বিজেপি বিধায়করা স্লোগান তোলেন, ‘‘ভারত মাতা কী জয়, ছাপ্পা ভোটের সরকার আর নেই দরকার।” এরইমধ্যে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রাজ্যপালের বক্তব্য সকলের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। সেটাই টেবিল করা হবে বলে জানান স্পিকার। তখনই রাজ্যপাল মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতেই বলেন, তিনি হতবাক হচ্ছেন। তিনি না বললে কীভাবে তাঁর ভাষণ টেবিল হতে পারে? প্রশ্ন তোলেন রাজ্যপাল।
বিজেপি বিধায়করা তাঁদের বিক্ষোভ তখনও অব্যাহত রেখেছিলেন। সেসময় ভাষণ পাঠ না করেই নেমে যেতে উদ্যত হয়েছিলেন রাজ্যপাল। তাঁকে বাধা দেন তৃণমূলের মহিলা বিধায়করা। তাঁরা প্রত্যেকেই রাজ্যপালকে ঘিরে রাখেন। তৃণমূলের মহিলা বিধায়করাও পাল্টা স্নোগান দিতে থাকেন। সে সময় বক্তৃতা না পড়েই বসে পড়েন রাজ্যপাল।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এরই মধ্যে তাঁর আসন ছেড়ে দিয়ে মুখ্যসচিবের সঙ্গে গিয়ে আলাদা করে বৈঠক করেন। এদিকে রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পর বিরোধীদের শান্ত হওয়ার অনুরোধ করেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি রাজ্যপাল অন্তত দু লাইন ভাষণ পাঠের অনুরোধ করেন। কিন্তু তাতেও দমেননি বিজেপি বিধায়করা।
বিজেপির বিক্ষোভের মাঝেই ওঠে ভাষণ পাঠ শুরু করেন রাজ্যপাল। ভাষণ শুরু হতে হতেই শেষ হয়ে যায়। প্রথম ও শেষ লাইন পাঠ করেন রাজ্যপাল। বেলা ৩.০৭ মিনিটে রাজ্যপাল বিধানসভা ছাড়েন। তাঁকে গাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিতে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে হাত জোড় করে প্রণাম করতেও দেখা যায়। এরপরই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এটা বিজেপির পরিকল্পিত বিক্ষোভ।’
আরও পড়ুন: নবম-দশম শ্রেণিতে শিক্ষক নিয়োগে ‘দুর্নীতি’, এবার ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ কমিশন