Indian Railway: ‘বাংলায় রেলের কাজে উদাসীন রাজ্য’, বাজেটের দিনেই ক্ষোভ প্রকাশ রেলমন্ত্রীর
Indian Railway: শুধু যে রেলমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এমনটা নয়, ক্ষুব্ধ রেলের কর্তারাও। এদিন সাংবাদিক বৈঠক করেন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার মিলিন্দ কে দেউসকর এবং চিফ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অফিসার (কনস্ট্রাকশন) প্রমোদ কুমার শর্মা। একযোগে ক্ষোভ প্রকাশ করে রাজ্যের সদিচ্ছা নিয়ে।
কলকাতা: অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের হাত ধরে পেশ হয়েছে অন্তর্বতী বাজেট। তৃণমূল বলছে কাজের কাজ কিছুই হল না। পুরোটাই অন্তঃসারশূন্য। এদিকে এরইমধ্য়ে আবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। বললেন, “বাংলা থেকে ২০০৯-২০১৪ সাল রেলমন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু মাত্র ৪৩৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পশ্চিমবঙ্গের জন্য ১৩ হাজার ৮১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করল।” সোজা কথায়, এদিন সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের ভূমিকা এবং সদিচ্ছা নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন রেলমন্ত্রী।
এখানেই না থেমে তিনি আরও বলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে সাহায্য মেলে না। আটকে থাকা প্রকল্পগুলি চালু করার ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কোনও সদিচ্ছা নেই। অনেক কাজ করা যেতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন রয়েছে রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে। রেলমন্ত্রকের আধিকারিকরা বারবার করে এ ব্যাপারে রাজ্যের আলোচনায় বসার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করলেও রাজ্য কোনও সদিচ্ছা দেখায় না।
শুধু যে রেলমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এমনটা নয়, ক্ষুব্ধ রেলের কর্তারাও। এদিন সাংবাদিক বৈঠক করেন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার মিলিন্দ কে দেউসকর এবং চিফ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অফিসার (কনস্ট্রাকশন) প্রমোদ কুমার শর্মা। তাঁদের দাবি, মোট ৪০ টি রেল প্রকল্প সম্পূর্ণ জমির কারণে আটকে রয়েছে। হয় সেখানে সমীক্ষা করতে দেওয়া হচ্ছে না, নয়তো সমীক্ষা হয়ে গেলেও বাকি কাজ করার ক্ষেত্রে রাজ্যের তরফে কোনও সাহায্য মিলছে না। রাজ্য এবং রেলের তরফে যৌথ সমীক্ষা করার কথা। সেই কাজ করতে গিয়ে পুলিশের সাহায্য মিলছে না।
ক্ষোভ প্রকাশ করেন চিফ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অফিসার (কনস্ট্রাকশন) প্রমোদ কুমার শর্মা। বলেন, তারকেশ্বর থেকে বিষ্ণুপুর, তারকেশ্বর থেকে গোঘাটের মধ্যে দীর্ঘদিন জমির প্রয়োজন বলে রাজ্যের তরফের সাহায্য যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু কিছুই পাওয়া যায়নি। আরামবাগ- গোঘাট অংশে ভাবাদিঘি এলাকায় সামান্য জমি প্রয়োজন। প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হলেও জমি সমস্যার কোন সমাধান হচ্ছে না। নবদ্বীপ থেকে কৃষ্ণনগরের মাঝে নবদ্বীপ ধাম থেকে নবদ্বীপ ঘাটের মধ্যে নতুন লাইনের জন্য রেলব্রিজ তৈরি করা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সামান্য জমি প্রয়োজন বাকি লাইন পেতে মূল অংশের সঙ্গে সংযোগ করার জন্য। মাত্র ১৫ কিমি। কিন্তু সেই জমিও মিলছে না।
তাঁর দাবি, এই এই লাইন এর কাজ শেষ হয়ে গেলে কৃষ্ণনগর যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটাই সময় বেঁচে যাবে এবং মানুষের অভূতপূর্ব সুবিধা মিলিবে। তিনি এও জানান, নৈহাটি থেকে রানাঘাট এর মাঝে নতুন লাইন পাতার কাজ চলছে। কল্যাণী পর্যন্ত কাজ হওয়ার পর তারপর থেকে জমি সঙ্কটে বাকি কাজ আর রানাঘাট পর্যন্ত করা যাচ্ছে না। এই বিষয়টিও রাজ্য প্রশাসনের নজরে আনা হলেও কোন লাভ হয়নি বলেও জানালেন ওই রেল কর্তা। মাস কয়েক আগে খোদ রেলমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছিলেন রাজ্যে প্রায় ৬১ টি প্রকল্প শুধুমাত্র জমি এবং অন্যান্য সংকটে আটকে রয়েছে এ কথা জানিয়ে। কিন্তু তারপরেও রাজ্যের তরফে কোনরকম সদিচ্ছা না থাকায় আজ সাংবাদিক বৈঠকে শুরু থেকেই রেলমন্ত্রী এবং রেলকর্তারা রাজ্যের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেন।