AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Kolkata Weather: ৭ বছরে গ্রীষ্মের উষ্ণতম দিন কলকাতায়, ২০১৬-র এপ্রিলের রেকর্ড কি ভেঙে যাবে?

Weather Update: সাত বছর পর গ্রীষ্মে চল্লিশ-ছোঁয়া তাপমাত্রা আলিপুরে। শেষ বার ২০১৬ সালের ১ মে ৪০.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের গরম সইতে হয়েছিল কলকাতাকে।

Kolkata Weather: ৭ বছরে গ্রীষ্মের উষ্ণতম দিন কলকাতায়,  ২০১৬-র এপ্রিলের রেকর্ড কি ভেঙে যাবে?
তীব্র দাবদাহে নাজেহাল শহরবাসী
| Edited By: | Updated on: Apr 14, 2023 | 1:53 AM
Share

কলকাতা: আশঙ্কাই সত্যি। পূর্বাভাস অক্ষরে অক্ষরে মিলিয়ে চল্লিশ ছুঁয়ে ফেলল কলকাতার তাপমাত্রা (Kolkata Weather) । তৈরি হয়ে গেল নতুন রেকর্ড। এক নয়, একাধিক। সাত বছর পর এপ্রিলে চল্লিশ ছুঁল কলকাতার পারদ। বস্তুত, সাত বছর পর গ্রীষ্মে চল্লিশ-ছোঁয়া তাপমাত্রা আলিপুরে। শেষ বার ২০১৬ সালের ১ মে ৪০.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের গরম সইতে হয়েছিল কলকাতাকে। তার আগেই অবশ্য উত্তপ্ত এপ্রিল সয়েছিল মহানগর। এক-দু’দিন নয়, ৮ দিন ৪০ বা তার উপরে ছিল পারদ। শুকনো গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল গোটা বাংলাই।

এ বার কি ২০১৬ সালের রেকর্ড ভাঙবে কলকাতায়?

ভাঙতেই পারে। এই মুহূর্তে দহনের বৃহস্পতি তুঙ্গে! আপাতত ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। তবে তার স্থায়িত্ব আরও বাড়তে পারে। ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত কলকাতার তাপমাত্রা ৪০-৪১ ডিগ্রির মধ্যেই ঘোরাফেরা করার জোর আশঙ্কা। বৃহস্পতিবার পানাগড়ের তাপমাত্রা পৌঁছেছে ৪২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বাঁকুড়ায় তাপমাত্রা ৪১.৬ ডিগ্রি, বর্ধমানের তাপমাত্রা ৪১.৪ ডিগ্রি। শুধু তাই নয়, সল্টলেকের তাপমাত্রাও ৪১ ডিগ্রি ছুঁয়ে ফেলেছে। বৃহস্পতিবার দেশের উষ্ণতম স্থান ছিল ওড়িশার বারিপদা। তাপমাত্রা পৌঁছয় ৪৩.৫ ডিগ্রিতে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, বাংলার জনপদেও ৪৩ ডিগ্রি ছুঁয়ে ফেলা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।

অতীতে যে যে সময়ে এপ্রিলে ৪০ পেরিয়েছিল কলকাতার পারদ

এপ্রিলে গরম অস্বাভাবিক নয়। অস্বাভাবিকতা গরমের চরিত্রে। প্রথমত, বাংলার গরমের স্বাভাবিক চরিত্র অনুযায়ী কিছু দিন পর পর কালবৈশাখী আসার কথা। অর্থাত্‍, কিছু দিন ধরে তাপমাত্রা বাড়লে, সাময়িক স্বস্তি দিতে কালবৈশাখী হাজির হয়ে যায়। যার সাক্ষী সদ্য পেরিয়ে আসা মার্চই। দ্বিতীয়ত, রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল গরম হাওয়া বা লু-র সঙ্গে পরিচিত হলেও, কলকাতা ও লাগোয়া অঞ্চলে গরম মূলত আর্দ্রই হয়। অথচ, একটু বেলা বাড়লে কলকাতাতেও গরম হাওয়া বইছে। জোরে বাতাস বইছে, কিন্তু সবটাই গরম, ঝলসে দেওয়া! জলীয় বাষ্প এতটাই তলানিতে যে শীতকালের মতো ঠোঁট ফাটছে।

কেন এই ‘অস্বাভাবিক’ পরিস্থিতি?

মৌসম ভবনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান, অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের যুক্তি, ‘‘প্রথমত, বঙ্গোপসাগর থেকে দখিনা বাতাস ঢুকছে না। দ্বিতীয়ত, পশ্চিমী ঝঞ্ঝা অনেকটা উত্তর অক্ষাংশ হয়ে সরে যাচ্ছে। ফলে মার্চের মতো ঝড়-বৃষ্টি পাচ্ছি না আমরা। উল্টে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে যে শুকনো হাওয়া বইছে, তা উপকূল তো বটেই, বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত চলে যাচ্ছে। জলীয় বাষ্প না থাকায় ঝড়-বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।’’ লু-র একচ্ছত্র দাপট। সঙ্গে আকাশ পরিষ্কার হওয়ায় রোদের তেজ। জোড়া ফলায় জ্বলছে বাংলা। দহন-জ্বালায় দিল্লিকেও (৩৮.৬ ডিগ্রি) পিছনে ফেলেছে কলকাতা। রাজস্থানের জয়সেলমেরের সঙ্গেও আলিপুরের মধ্যে সমানে টক্কর। একবিন্দুতে দাঁড়িয়ে দু’জায়গার তাপমাত্রা।

বৃহস্পতিবার কোথায় কত তাপমাত্রা?

তবে এমন গরম এ বারই প্রথম নয় এপ্রিলে।

উত্তর জানতে হলে অতীতের খাতায় নজর রাখতে হবে। গড় তাপমাত্রার নিরিখে কলকাতার উষ্ণতম এপ্রিল ছিল ১৯৫৪ সালে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা গড় দাঁড়ায় ৩৮.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সে বার ৪৩.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও পৌঁছেছিল আলিপুরের তাপমাত্রা। তাপমাত্রার অঙ্কেই স্পষ্ট, কতটা নিষ্ঠুর ছিল সে বছরের এপ্রিল। ১৯৮০ সালের এপ্রিলেও একদিন ৪১.৭ ডিগ্রিতে পৌঁছয় কলকাতার তাপমাত্রা। চলতি শতাব্দীতে এপ্রিলে সবচেয়ে বেশি গরম পড়েছিল ১৪ বছর আগে, ২০০৯ সালে। সে বার সর্বোচ্চ তাপমাত্রার গড় ছিল ৩৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পাক্কা আট দিন কলকাতার তাপমাত্রা ছিল চল্লিশ ডিগ্রি বা তার উপরে। ২০১০, ২০১৪ সালেও এপ্রিলে পোড়া গরম পড়েছিল। তবে ২০০৯ সালকে সমানে টেক্কা দেয় ২০১৬। সে বার এপ্রিলেও আট দিন চল্লিশ ছুঁয়েছিল কলকাতার তাপমাত্রা।

ষোলোর সঙ্গে তেইশেরও বেশ কিছু মিল। এ বারের মতো সে বছরও চৈত্রেই চল্লিশের ঘরে ঢুকে পড়েছিল পারদ। মানে তড়িঘড়ি তাপের দাপট! একদিন নয়, চৈত্রে চার দিন আলিপুরের পারদ ছিল চল্লিশ-ছোঁয়া। তার মধ্যে একদিন আবার ৪১.৩ ডিগ্রির গরমও সইতে হয় কলকাতাকে।

পরিসংখ্যানে স্পষ্ট, এ বারের গরম একেবারেই অভূতপূর্ব নয়। হাল আমলেই এপ্রিলে গরমের দাপাদাপি দেখেছে বাংলা। আবার এটাও ঠিক, ২০১৬ পরবর্তী সময়ে কলকাতাকে চল্লিশ দেখতে হয়নি। যেটা এ বার দেখতে হল। আশঙ্কার জায়গা আছে আরও। এল নিনোর দাপটে ২০১৬ সাল দেশের উষ্ণতম বছরের তকমা পেয়েছিল। সেই রেকর্ড এখনও অক্ষত। আবার প্রশান্ত মহাসাগরের জলতলের তাপমাত্রা বাড়ছে। আবার শিয়রে এল নিনো। ষোলোর ব্যাটন কি তেইশ কেড়ে নেবে? মে মাস নিয়েও তো আশঙ্কার বার্তা দিয়ে রেখেছে হাওয়া অফিস!