Kolkata Durga Puja: কলকাতায় ঠাকুর দেখতে ৩০০ টাকার টিকিট! যত ইচ্ছা ছবি তুলুন, এবার বড় চমক শহরের এই তিন পুজোয়

Kolkata Durga Puja: অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, বিদেশেও কোনও ফেস্টিভ্যালে প্রবেশ করতে গেলে টিকিট কাটার ব্যবস্থা থাকে, তাহলে বাংলার দুর্গা পুজোয় নয় কেন!

Kolkata Durga Puja: কলকাতায় ঠাকুর দেখতে ৩০০ টাকার টিকিট! যত ইচ্ছা ছবি তুলুন, এবার বড় চমক শহরের এই তিন পুজোয়
ফাইল ছবImage Credit source: PTI

| Edited By: তন্নিষ্ঠা ভাণ্ডারী

Aug 01, 2025 | 2:22 PM

কলকাতা: বাঙালির প্রাণের পুজো আজ ইউনেস্কোর ‘হেরিটেজ’। বিসর্জন এখন ‘কার্নিভাল’। সাবেকি প্রতিমার অঙ্গে থিমের বেশ। কালের নিয়মে বদলেছে অনেক কিছুই। বারোয়ারি পুজোর গায়ে লেগেছে কর্পোরেট ছাপ। তবু কিছু কিছু বিষয় এখনও বদলায়নি। রাত জেগে, লাইনে ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে ঠাকুর দেখতে ক্লান্তি নেই আমবাঙালির। পুজোর আগে ভিআইপি পাস জোগাড় করার হুড়োহুড়ি পড়ে যায় ঠিকই, তাই বলে টিকিট কেটে পুজো দেখার কথা বোধ হয় ভাবেনি সাধারণ মানুষ। একটা প্যান্ডেল দেখতে ১০০-১৫০ টাকা! এবার কলকাতার পুজোয় এটাই চমক।

বর্তমানে মহালয়ার আগেই উদ্বোধন হয়ে যায় একাধিক মণ্ডপ। সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয় প্যান্ডেল। ফাঁকায় ফাঁকায় ঠাকুর দেখার জন্য কেউ কেউ ওই দিনগুলোয় বেরিয়েও পড়েন। এবার ওই সময় ঠাকুর দেখতে গেলে লাগবে টিকিট। কলকাতার তিনটি মণ্ডপে এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বালিগঞ্জ কালচারাল, দমদম পার্ক ভারত চক্র ও কেন্দুয়া শান্তি সঙ্ঘ- এই তিনটি পুজো মণ্ডপে মহালয়ার আগে ঠাকুর দেখতে গেলে কাটতে হবে টিকিট। কখন ঠাকুর দেখা যাবে, সেই সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তিনটি পুজোরই শিল্পী সুশান্ত শিবানী পাল। কেউ কেউ বলছেন, শিল্প প্রদর্শনে টিকিট কাটাই যেতে পারে। আবার কেউ কেউ বলেন, এতে বাঙালির সাবেকিয়ানার আবেগ ধাক্কা খাবে। লাইনে দাঁড়িয়ে, ভিড় টপকে ঠাকুর দেখাতেই আনন্দ বলে জানাচ্ছেন অনেকে।

বছর কয়েক আগে বাংলার দুর্গা পুজো পায় ইউনেসকোর হেরিটেজ স্বীকৃতি। তারপর থেকে দেশ-বিদেশের মানুষের আকর্ষণ বেড়েছে। কার্নিভালেও বিশেষ প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। বালিগঞ্জ কালচারালের উদ্যোক্তা অঞ্জন উকিল বলেন, “বিদেশ থেকে অনেকে এখন বাংলার দুর্গা পূজা দেখতে আসছেন। অনেক বয়স্ক মানুষও আসেন। তাঁদের পক্ষে ভিড় ঠেলে প্রবেশ করা সম্ভব নয়। ভিড়ের মধ্যে শিল্পটা উপভোগ করার সুযোগ হয় না। ছবি তোলার সুযোগও পান না মানুষ। এই ব্যবস্থায় সেই সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে।”

অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, বিদেশেও কোনও ফেস্টিভ্যালে প্রবেশ করতে গেলে টিকিট কাটার ব্যবস্থা থাকে, তাহলে বাংলার দুর্গা পুজোয় নয় কেন! শিল্পী সুশান্ত শিবানী পাল আশ্বস্ত করে বলছেন, বাংলার পুজো সর্বজনীনই থাকছে। মহালয়ার পর সবাই এমনিই ঠাকুর দেখতে পারবেন। কিন্তু দেবীপক্ষের আগে শিল্পটা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতেই এই ব্যবস্থা। শিল্পী বলেন, “হেরিটেজ স্বীকৃতি পাওয়ার পর অনেক মানুষ বাংলার এই পুজো দেখতে চাইছে। দেশের অনেক শিল্পমনস্ক মানুষও দেখতে চাইছেন। তাই এমন ব্যবস্থা।”

আগামী ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়া। তার আগে অর্থাৎ ১৯, ২০ ও ২১ সেপ্টেম্বর টিকিট কেটে এই তিনটি পুজো মণ্ডপে প্রবেশ করতে হবে। টিকিট কাটা যাবে অনলাইনে। টিকিট কেটে সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৩টে পর্যন্ত ঠাকুর দেখা যাবে। ১ জনের টিকিট ১০০ টাকা, ২ জনের টিকিট ১৫০ টাকা, ৩ জনের টিকিট ২০০ টাকা ও ৪ জনের টিকিট ৩০০ টাকা।

এই ব্যবস্থার বিরোধী মতও রয়েছে। শহরের আর এক পুজোর উদ্যোক্তা সজল ঘোষ বলেন, “পুজোর বারোয়ারি এতে এসেন্স নষ্ট হয়ে যাবে।” একটা বিভেদ চলে আসবে বলেও মনে করছেন তিনি।