ঘাসফুলে নয়া ‘কাঁটা’ তবসসুম! ‘তৃণমূলের নেতারা এবার কি টিকাও দেবে নিজে হাতে?’ প্রশ্ন অগ্নিমিত্রা, ফুয়াদের

যদিও এ প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের বক্তব্য, কেউ আসল টিকা দিলে এত চেঁচামেচির কোনও কারণই নেই।

ঘাসফুলে নয়া 'কাঁটা' তবসসুম! 'তৃণমূলের নেতারা এবার কি টিকাও দেবে নিজে হাতে?' প্রশ্ন অগ্নিমিত্রা, ফুয়াদের
নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 03, 2021 | 7:33 PM

কলকাতা: কোনওরকম প্রশিক্ষণ ছাড়াই করোনার টিকা দিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন আসানসোলের বিদায়ী ডেপুটি মেয়র। অভিযোগ, পুরসভা আয়োজিত টিকাদান শিবিরে গিয়ে ‘অত্যুৎসাহী’ হয়ে এক মহিলাকে ইনজেকশন দেন তিনি। সে ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে মুহূর্তে। এরপরই এই ঘটনা ঘিরে শুরু হয় হইচই। একইসঙ্গে এই ঘটনাকে ইস্যু করে ময়দানে নেমে পড়ে বিজেপি। বিজেপি ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছে, তৃণমূল নেতা হলে এবার কি তাঁরা ভ্যাকসিনও দিতে পারবেন? যদিও তৃণমূলের তরফে ঘটনার সত্যতা বিচারের ভার স্বাস্থ্যদফতরের হাতেই ছেড়ে রাখা হয়েছে। দলীয় সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের বক্তব্য, কেউ আসল টিকা দিলে এত চেঁচামেচির কোনও কারণই নেই।

সুখেন্দুশেখর রায় শনিবার বলেন, “আমি জানি না এমন কোনও ঘটনা ঘটেছে কি না। তা ঘটে থাকলে স্বাস্থ্যদফতর দেখবে। ভারতবর্ষে তো শুনছি কোয়াকদেরও কাগজে কলমে মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে। সারা ভারতবর্ষজুড়ে কোয়াকরাও ডাক্তাদের মতো কাজ করবেন। তাঁদের কি মেডিক্যাল প্রফেশনাল হিসাবে কোনও সার্টিফিকেট আছে? তাঁরা যদি চিকিৎসা ব্যবস্থায় শামিল হতে পারেন তবে একজন অতি উৎসাহী হয়ে ভ্যাকসিন দিলে তা যদি ভুয়ো না হয় আমার মনে হয় না এ নিয়ে এত হইচইয়ের কিছু আছে। তবে হ্যাঁ ইনজেকশনটা দেওয়ার আগে সেটা সম্পর্কে ধ্যানধারনা থাকা দরকার। কী ভাবে দিতে হয় তা জানা দরকার। নইলে এটা বিপজ্জনক হতে পারে।”

আরও পড়ুন: দিদিগিরি! ট্রেনিং ছাড়াই টিকাদান যৌনকর্মীদের, কাঠগড়ায় তৃণমূলের বিদায়ী ডেপুটি মেয়র

প্রসঙ্গত, এদিন তৃণমূলের তবসসুম আরার বেশ কয়েকটি ছবি-ভিডিয়ো ভাইরাল হয়। যেখানে দেখা যায়, আসানসোলের বিদায়ী ডেপুটি মেয়র করোনার টিকা দিচ্ছেন। যে ভাবে ইনজেকশনের সিরিঞ্জ তিনি শরীরে ঢোকাচ্ছেন তা রীতিমতো চমকে দেওয়ার শামিল। এদিকে পাশেই দাঁড়িয়ে চিকিৎসক, নার্স। এ নিয়ে তবসসুমও যথাযথ জবাব দিতে পারেননি। কখনও বলেছেন, তিনি ইনজেকশন দেননি। সিরিঞ্জটা ধরে রেখেছেন। পরক্ষণেই আবার জানিয়েছেন, তাঁদের স্কুলে নাকি নার্সিংয়ের প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। তিনি সেই প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এখন আবার ইনসুলিনও নেন নিজে হাতেই।

এ প্রসঙ্গে আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের বক্তব্য, “দেখে মনে হচ্ছে তৃণমূল নেতা হলেই এবার তাঁরা ভ্যাকসিনও নিজে হাতে দিতে পারবেন। আমি যা জানি, তবসসুমের কোনও নার্সের ডিগ্রিও নেই৷ দেবাঞ্জন দেব ভুয়ো আইএএস হয়ে শহরের প্রাণকেন্দ্রে ভুয়ো ভ্যাক্সিনেশন ক্যাম্প করলেন। এবার তৃণমূলের নেতা নিজে ভ্যাকসিন দিচ্ছেন। বিরোধী দলনেতা এখনও আমাদের কর্মসূচি জানাননি। তবে বিধানসভায় এই ভ্যাকসিনকাণ্ড নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত।”

টিকাদানে এই ছেলেখেলার অভিযোগ প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা ও চিকিৎসক ফুয়াদ হালিম বলেন, “উনি কখনও কোনও চিকিৎসকের সঙ্গে কাজ করেছেন কি না, এই টিকাকরণ প্রক্রিয়ার জন্য যে মানবসম্পদ তৈরি করা হচ্ছে তার কোনও প্রশিক্ষণ তিনি নিয়েছিলেন কি না এগুলি জানা দরকার। যদি না নিয়ে থাকেন, শুধুমাত্র জনপ্রতিনিধি, ভোট পেয়েছেন বলে ইনজেকশন দেওয়ার অধিকার পেয়ে গেলেন বলে ধরে নিলে এ তো খুবই দুঃখজনক। সম্পূর্ণ ঘটনার তদন্ত হওয়ার উচিৎ। দোষ প্রমাণ হলে শাস্তিও দেওয়া দরকার।”