কুঁদঘাট: খাস কলকাতায় আবারও তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে। মদ্যপ অবস্থায় অটো নিয়ে রেষারেষির অভিযোগ। এলাকার তৃণমূল যুব নেতা প্রীতম সাহার অনুগামীকে ধাক্কা মারে এক অটো। অভিযোগ, এরপর রাত্রি আড়াইটে নাগাদ প্রীতমের লোকজন বেধড়ক মারধর করে ওই অটো চালককে। এমনকী অটো চালকের মাথা ফাটিয়ে দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। এখানেই শেষ নয়, ভাঙচুর করা হয় একাধিক অটো। তবে অটো চালকদের দাবি, তাঁরাও তৃণমূলের সক্রিয় সমর্থক।
কী ঘটেছে?
ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতা পুরসভার ১১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ওয়ার্ড অফিসের সামনে। জানা যাচ্ছে, কুঁদঘাট মেট্রোর দিক থেকে ঢালিপাড়ার দিকে আসছিল দুটো অটো। অপরদিকে, ঢালিপাড়া দিক থেকে কুঁদঘাটের দিকে যাচ্ছিল শ্রীপল্লী এলাকার বেশ কয়েকজন যুবক যাচ্ছিল বাইকে চড়ে। বাইক চালকদের দাবি, এলাকার একজন অসুস্থ। তাঁকেই হাসপাতালে দেখতে যাচ্ছিলেন তাঁরা। সেই সময়ই ওই দুই অটো চালক মদ্যপ অবস্থায় রেষারেষি করতে-করতে আসছিল। রাস্তা সরু হওয়ায় মুখোমুখি ধাক্কা লাগে। বাইক থেকে ছিটকে পড়ে এলাকার যুবক রণজিৎ মণ্ডল গুরুতর আহত হন। মাথা ফাটে। হাত ভেঙে যায়।
এরপরই এই ঘটনার প্রতিবাদে নামে এলাকার যুবকরা। প্রশ্ন তোলেন কেন মদ্যপ অবস্থায় অটো চালানো হয়েছে? সেই সময় অটো চালকদের কয়েকজন সাঙ্গোপাঙ্গরা এসে মারপিটে জড়িয়ে পড়ে। এতে রাজিব দত্ত নামে ওই এলাকার একটি ছেলের হাত ভেঙে দেওয়া হয় বলে অটো চালকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ। এরপর শ্রীপল্লীর ছেলেরা রণজিৎ নস্কর নামে এক অটো চালকের বাইকের চাবি, ওয়ালেট কড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে বলে দাবি। এরপর রণজিৎ পালিয়ে আসার চেষ্টা করেন ঢালিপাড়াতে। এরপর শ্রীপল্লীর ছেলেরা গিয়ে রণজিৎ-এর এলাকায় চড়াও হয়। মারধর করা হয়। অটো ভেঙে চুরমার করা হয়।
বস্তুত,রণজিৎ মণ্ডল কলকাতা পুরসভার ১১৪ নম্বর ওয়ার্ডের যুব তৃণমূল সভাপতি প্রীতম সাহার ঘনিষ্ঠ। রণজিৎ নস্করের দাবি, প্রীতম সাহার ছেলেরা এলাকায় দুষ্কৃতী তাণ্ডব চালাচ্ছে। এরা তৃণমূল কর্মী। তাঁরা নিজেরাও তৃণমূল কর্মী। অন্যদিকে, শ্রীপল্লীর এলাকার লোকজন আঙুল তুলেছে অটো চালকদের দিকে।
এক অটো চালক বলেন, “ঘটনাটা হয়েছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। হঠাৎ রাত্রিবেলা কিছু ছেলে এসে আমাদের এখানে ভাঙচুর করে।” আরও এক অটো চালক বলেন, “রাত্রিবেলা এসে হুমকি দিচ্ছে। বলছে আগুন লাগিয়ে দেব। মারধর করব এইসব করছে।”
১১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বজিৎ মণ্ড বিস্ফোরক। বললেন, “আমার কাছে খবর রয়েছে প্রীতম সাহা ওখানে ছিল। মারপিট করেছে। ওর এখানে থামানো উচিত ছিল। পরিস্থিতি সামাল দেওয়া উচিত ছিল। যারা মারধর করেছে এবং যারা মেরেছে প্রত্যেকেই আমার দলের কর্মী। তাই এই ধরনের ঘটনা অনভিপ্রেত।” দু’পক্ষই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।