কলকাতা: নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর সঙ্গে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তুলনা করেছিলেন। বলেছিলেন, যা নেতাজি পারেননি, তা করে দেখিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা নিয়েই বিতর্ক। আর বিতর্ক বাধতেই নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। আর সেই ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে নিজের মন্তব্যে অনড় থাকলেন। নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা জানিয়ে দিলেন, কে কী বললেন তাতে তাঁর কিছু যায় আসে না।
এদিন কুণাল বলেছিলেন, “নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আলাদা দল করেও দলীয় রাজনীতিতে সফল হতে পারেননি। তিনি ঐতিহাসিক বিপ্লবী। তবে সংসদীয় রাজনীতিতে দল গড়ে ব্যর্থ হয়েছেন।” তোলেন প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গও। তিনি বলেন, “প্রণব মুখোপাধ্যায়ও দল গড়ে ব্যর্থ হয়েছেন। ফলে বাংলার মাটিতে যদি আলাদা দল করে কেউ সফল হয়েছেন, তাহলে তিনি একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”
এই নিয়ে বিতর্ক তৈরি হতেই নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন কুণাল। কী বললেন? তাঁর বক্তব্য, “দল থেকে বেরিয়ে ব্যক্তিগত ক্যারিশ্মায় দল তৈরি করে মানুষের আশীর্বাদ পাওয়া। এই প্রসঙ্গে কথা হচ্ছিল। বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য মন্তব্য করেছেন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বহিষ্কার করা ভুল ছিল। সেই প্রসঙ্গে আলোচনা হচ্ছিল। সেই আলোচনা প্রসঙ্গে আমি কথাটা বলেছি। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু দেশবরেণ্য, আন্তর্জাতিক নায়ক। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর প্রথম প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত হওয়ার কথা। আজাদ হিন্দ সরকার তিনি গঠন করেছিলেন। ৬টা দেশ তাকে স্বীকৃত দিয়েছিল। যতদিনের জন্যই হোক, হয়েছিলেন তো। তাঁর সেই পার্টটা- স্বাধীনতাযোদ্ধা, বিপ্লবী, দেশনায়ক নেতাজি সেটা আলাদা।”
এরপরই মমতার সাফল্যের কথা তুলে ধরে তাঁর ব্যাখ্যা, “এবার আসুন, কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে যাঁরা দল গঠন করেছেন। সেটা সুভাষচন্দ্র বসু বলুন কিংবা প্রণব মুখোপাধ্যায়। কেউ সফল হননি। নেতাজি ফরওয়ার্ড ব্লক তৈরি করেছেন। প্রণববাবু একটি দল করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একমাত্র নেত্রী বাংলার বুকে, যিনি একক ক্যারিশ্মায় দল থেকে বেরনোর পর কিংবা বহিষ্কারের পর, একক কৃতিত্বে সংসদীয় রাজনীতিতে তাঁর দলকে সাফল্য এনে দিয়েছেন। জাতীয় রাজনীতিতে প্রভাব ফেলেছেন। আবার বাংলায় পরপর তিনবার সরকার গঠন করেছেন। চতুর্থবার হবে। আমি এই তুলনাটা করেছি। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু কিংবা প্রণব মুখোপাধ্যায়, তাঁরা নিজের জায়গায় আকাশছোঁয়া ব্যক্তিত্ব। কিন্তু, একা দল গড়ে ভারতের সংসদীয় গণতন্ত্রে ছাপ ফেলা, এটায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক নম্বর। আমি ভুলটা কী বলেছি? এবার আমায় কে কী বললেন, আমার ঘোড়ার ডিম।”