কলকাতা: আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলেছেন। ভারতকে জিতিয়েছেন। তারপরও রোহিত শর্মার অবসর নেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। এই মন্তব্যের জন্য এবার তৃণমূল এই সাংসদকে আক্রমণ করলেন দলেরই আর এক বর্ষীয়ান নেতা মদন মিত্র। তাঁর কটাক্ষ, “শিক্ষিত লোক যখন অশিক্ষিত, অসভ্য, অভদ্র, ইতরের মতো কথা বলে, তখন মানুষ কষ্ট পায়।”
কয়েকদিন আগে রোহিত শর্মাকে নিয়ে সৌগত দাবি করেছিলেন, রোহিতের ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়া উচিত নয়। গতকাল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ৭৬ রান করেন রোহিত। ভারতের জয়ের পর রোহিতের প্রশংসা করলেও সৌগত রায় বলেন, “অবসর নিয়ে নেওয়া উচিত। আজকেও যেভাবে স্ট্যাম্প আউট হয়েছে, সেটা উচিত হয়নি। সবাই আশা করেছিল, ভাল খেলছে। সেঞ্চুরি করবে। সেটা হয়নি। ৭৬ করেছে। আজ ভাল খেলেছে।” রোহিতের অবসর নিয়ে নিজের মন্তব্যে অনড় থাকেন তিনি।
বর্ষীয়ান এই তৃণমূল সাংসদের মন্তব্য নিয়ে এদিন মদন মিত্র বলেন, “অশিক্ষিত লোক যখন শিক্ষিতের মতো কথা বলে, তখন খারাপ লাগে না। কিন্তু, শিক্ষিত লোক যখন অশিক্ষিত, অসভ্য, অভদ্র, ইতরের মতো কথা বলে, তখন মানুষ কষ্ট পায়। সৌগতবাবু ঠিক কী বলতে চেয়েছেন, আমি বলতে পারব না। তবে আমি একসময় ক্রীড়ামন্ত্রী ছিলাম। খেলোয়াড়দের মনোবল বাড়াতে হয়। এই ধরনের কথা গোটা টিমের মনোবলে আঘাত করতে পারে। যিনি এ ধরনের কথা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে সংসদে রয়েছেন। এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী হতে পারে। কাল যদি ঘটনাচক্রে রোহিত শর্মা খারাপ খেলত, তার অনেকটা দায়িত্ব সৌগত রায়কে নিতে হত।”
সৌগত রায়ের এই ধরনের মন্তব্য করা ঠিক হয়নি জানিয়ে মদনের টিপ্পনি, “এগুলো করবেন না। আর আপনি যদি চান, আমার প্রতিপত্তি যতটুকু রয়েছে, তা খাটিয়ে রোহিতের জায়গায় আপনাকে টিমে জায়গা করে দিতে পারি। দেখা যাক, আপনি কেমন খেলেন।”
বছর সাতাত্তরের সৌগত রায়কে নিয়ে মদন আরও বলেন, “তাঁকে নিয়ে ট্রোল হচ্ছে, মিম হচ্ছে। এগুলো মানুষের চোখেও লাগে। মানুষও বোঝেন, তোমার যেটা বিষয় নয়, সেটায় যাচ্ছো কেন। আসলে বাহাত্তরের একটা ব্যাপার আছে তো। বাহাত্তর কেটে গিয়ে এখন বিরাশি চলে গিয়েছে।”
সৌগত যেমন রোহিতের অবসর নেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন। তেমনই আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি চলাকালীন রোহিতকে ‘ফ্যাট আনফিট’ বলেছিলেন কংগ্রেস নেত্রী শামা মহম্মদ। এই নিয়ে সৌগত ও শামা মহম্মদকে আক্রমণ করে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র তথা সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “টুর্নামেন্ট চলাকালীন সৌগত রায় ও শামা মহম্মদ যে বক্তব্য রেখেছিলেন, তাতে বোঝা যাচ্ছে ২ জনের ডিএনএ এক। না হলে টুর্নামেন্ট চলাকালীন দেশের অধিনায়কের সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছিলেন, তা তো তাঁর মনোবলকে ভেঙে দেওয়ার প্রচেষ্টা। যদিও তার জবাব রোহিত শর্মা দিয়েছেন। মুখে লিউকোপ্লাস্ট লাগিয়ে দিয়েছেন। বুঝিয়ে দিয়েছেন, কথা একটু কম বলবেন।”