কলকাতা: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ডায়মন্ড হারবার মডেল’ নিয়ে এই মুহূর্তে রাজনৈতিক মহলে তরজা তুঙ্গে। বাকযুদ্ধ কম হচ্ছে না তৃণমূলের অন্দরেও। দলের অন্দরেই দু’পক্ষ ভাগ হয়ে গিয়েছে এই ‘মডেল’ ঘিরে। একপক্ষ বলছে, নতুন কিছু ভাবায় সমস্যা কোথায়? অপর পক্ষের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এ রাজ্যে চলে। তিনিই তৃণমূল সুপ্রিমো। তাই অভিষেকের আবার আলাদা ‘মডেল’ কী? এই নিয়ে বৃহস্পতিবার তুমুল তরজায় জড়িয়েছিলেন দলের বর্ষীয়ান সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। এরই মধ্যে জল্পনা বাড়াল কুণালের টুইট, ‘চ্যাপ্টার ক্লোজজ’।
শুক্রবার কুণাল ঘোষ টুইটারে লেখেন, ‘চ্যাপ্টার ক্লোজড’। সঙ্গে একটি হাসির ইমোজি। তবে কি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজিয়ায় ইতি টানলেন কুণাল? গত শনিবার ডায়মন্ড হারবার লোকসভা এলাকায় কোভিড নিয়ন্ত্রণে আলাদা রূপরেখা তৈরি করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পরদিন থেকেই অভিষেক অনুগামীদের হাত ধরে তা সোশাল মিডিয়ায় #diamondharbourmodel বলে প্রচারিত হতে শুরু করে।
Chapter Closed ?
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) January 14, 2022
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য সরকারের মডেল বনাম অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মডেল প্রসঙ্গ উঠে আসে। রাজ্য রাজনীতিতে জোরাল হয় তরজাও। কেউ কেউ প্রশ্ন তোলেন, তা হলে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে ছাপিয়ে কিছু করতে চাইছেন অভিষেক? আলাদা করে নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন? এ নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে জোর আলোচনা শুরু হয়।
এই আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতেই বৃহস্পতিবার তৃণমূলের ভিতরকার কোন্দল কার্যত চরমে ওঠে। কুণাল ঘোষ সাংবাদিক সম্মেলন করেন। পাল্টা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মডেল প্রসঙ্গ নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন। চূড়ান্ত রাজনৈতিক আলোচনা শুরু হয় শাসকদলের দুই নেতার এই বাক-তরজা ঘিরে। দলের ভাবমূর্তিতে স্বাভাবিকভাবেই তা ছাপ ফেলে। এভাবে প্রকাশ্যে দুই নেতার বিবৃতি দেওয়া নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়।
এরই মধ্যে শুক্রবার সকালে কুণাল ঘোষ অর্থবহ টুইটটি করেন। মনে করা হচ্ছে দলের শীর্ষস্তরের নেতাদের এভাবে বিতর্কে জড়িয়ে পড়া, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো পরিস্থিতির আবহ তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়াচ্ছে। সেই অস্বস্তি সামাল দিতেই কি কুণাল ঘোষের ‘চ্যাপ্টার ক্লোজড’ টুইট? অর্থাৎ এই বিতর্কের অবসানের প্রয়াস চালালেন কুণাল? এমনও মনে করা হচ্ছে, দলের তরফেই মূলত এই প্রয়াস চালানো হয়েছে। সেটা কুণালের টুইটের হাত ধরে তুলে ধরা হয়েছে মাত্র। যদিও সত্যিই কি এই বিতর্ক চাপা পড়ে গেল, তা নিয়ে কিন্তু প্রশ্নের অবকাশ থাকছেই।
যদিও এদিনই সাংবাদিক সম্মেলনে খুব হালকা চালে ‘চ্যাপ্টার ক্লোজড’-এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন কুণাল। তাঁর বক্তব্য, “আমি কোভিড পজিটিভ ছিলাম। ডাক্তাররা বললেন সুস্থ আছি। তাই লিখেছি চ্যাপ্টার ক্লোজড।”
আরও পড়ুন: ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম অভিষেক এটা স্পষ্ট…ইন্ধন ছাড়া কল্যাণ এমন মন্তব্য করবেন না’