Adhir Chowdhury on Kalyan Banerjee’s Comment: ‘মমতা বনাম অভিষেক স্পষ্ট! কল্যাণকে ইন্ধন দিচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমোই’

TMC: নিজের অবস্থানে অনড় থেকে কল্যাণের দাবি, কেন একজন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের নিজস্ব মত থাকবে, যার সঙ্গে দলের মিল নেই!

Adhir Chowdhury on Kalyan Banerjee's Comment: 'মমতা বনাম অভিষেক স্পষ্ট! কল্যাণকে ইন্ধন দিচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমোই'
'কল্যাণ খাঁড়া লোক' মন্তব্য অধীরের, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 14, 2022 | 3:48 PM

মুর্শিদাবাদ: দলের শীর্ষ নেতৃত্বর অন্দরে বিরোধ বাড়ছে। প্রকাশ্যে এসেছে শাসকদলের কোন্দল। বিরোধের সূত্রপাত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে। পুর নির্বাচন প্রসঙ্গে  তাঁর ‘ব্যক্তিগত মত’ প্রকাশের পরেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংসদের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বিরুদ্ধাচারণ করছেন অভিষেক। এ বার, সেই প্রসঙ্গে মন্তব্য করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)। প্রবীণ কংগ্রেস নেতার দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ইন্ধন’ ছাড়া কল্যাণ (Kalyan Banerjee) এমন মন্তব্য করতে পারেন না।

অধীরের কটাক্ষ

সাংবাদিক বৈঠকে অধীর বলেন, “কল্যাণ লোকটা খাঁড়া লোক। সোজা কথা বলে। ওঁ যা বলেছে তা থেকে স্পষ্ট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইন্ধন ছাড়া এমন কথা কল্যাণ বলতে পারেন না। খুব পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।”

তাঁর আরও সংযোজন, “ডায়মন্ড হারবার মডেল কার মাথার বুদ্ধি! এতবড় একটা কাজ হচ্ছে আর মুখ্যমন্ত্রী তাতে চুপ কেন! তিনি এখনও বাংলার মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। কেন ডায়মন্ড হারবার মডেল প্রত্যেক জেলায় হবে না? আজ যে ভাইপোর বিরুদ্ধে কথা হচ্ছে তা কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে না জানিয়ে হচ্ছে! তিনি কি অবগত নন!”

বিতর্কের সূত্রপাত কোথায়? 

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুদিন আগেই তাঁর ‘ব্যক্তিগত মতামত’  প্রকাশ করে বলেছিলেন, “এখন মেলা, খেলা, ভোট সব বন্ধ রাখা উচিত। দু’‌মাস সব বন্ধ রাখা উচিত। মানুষ বাঁচলে আমরা বাঁচব।” অভিষেকের এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে কটাক্ষ হেনেছিলেন সাংসদ কল্যাণ। কল্যাণের দাবি, অভিষেকের এই মন্তব্য পারতপক্ষে  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধাচারণ। এভাবে রাজ্য সরকারকেই চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।

কল্যাণের এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে পাল্টা তাঁকে তোপ দেগেছেন সাংসদ অপরূপা পোদ্দার। অপরূপার দাবি, কল্যাণের দলের চিফ হুইপ পদ ত্যাগ করা উচিত। তিনি ‘ঘরশত্রু বিভীষণের’ মতো আচরণ করছেন। যদিও, এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কল্যাণের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে, তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও বর্ষীয়ান আইনজীবী সাংসদের বিরুদ্ধেই মন্তব্য করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় শৃঙ্খলা কমিটির পক্ষে ‘সব বিষয়ের’ ওপর নজর রাখছেন। তাঁর দাবি, বিতর্ক সরিয়ে যদি দেখেন, অভিষেক যা বলেছেন, তা মানুষের মনের কথাই বলেছেন। এ নিয়ে কোনও প্রকাশ্য বিতর্ক পার্টি ভালচোখে দেখছে না। অনাবশ্যক জটিলতা তৈরি করা হচ্ছে।

পাল্টা কল্যাণ জানিয়েছেন, তাঁর মন্তব্যের জন্য কুণালের শংসাপত্র দরকার নেই। কল্যাণ বলেন, “কুণাল মমতাকে নিয়ে কি কদর্য কথা বলেছেন! দলের মুখপাত্র হয়ে ব্যক্তিগত ভাবে আমার চরিত্র হনন করেছেন কুণাল, আমি এটা দেখে নেব।…আমাকে কখনও জেলে বসে সাংবাদিক বৈঠক করতে হয়নি।”

এখানেই শেষ নয়, নিজের অবস্থানে অনড় থেকে কল্যাণের দাবি, কেন একজন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের নিজস্ব মত থাকবে, যার সঙ্গে দলের মিল নেই! তাঁর কথায়, “দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পদটি সর্বক্ষণের। তাই এই পদে থেকে কারও ব্যক্তিগত কোনও মত থাকতে পারে না”। তিনি আরও বলেন, “অভিষেকের নেতৃত্ব প্রমাণিত হয়নি। অভিষেক একজন পদাধিকারী। নেতা মমতাই। ত্রিপুরা, গোয়া জিতিয়ে দাও, মুখ্যমন্ত্রী করে দাও, তবে অভিষেককে নেতা বলে মেনে নেব।”

উল্লেখ্য, বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ‘ঘরওয়াপসি’-র ইচ্ছে প্রকাশ করেন। তখনই তাঁকে দলে ফেরানো না হলেও, ত্রিপুরার জনসভা থেকে অভিষেকের হাত থেকে পতাকা নিয়ে তৃণমূলে ফেরেন রাজীব। রাজীবের ঘরে ফেরা বিশেষ ভাল চোখে দেখেননি কল্যাণ। ক্ষোভ ছিলই। সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হল অবশেষে এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট  মহলের একাংশ।

আরও পড়ুন: Anubrata Mondal on Suvendu Adhikari: ‘নেংটি ইঁদুর একটা, চুরি করে জিতে আবার বড় বড় কথা!’