‘আলাপন সৎ আমলা, দক্ষ প্রশাসক, তাই নিষ্ঠুর-হৃদয়হীন আচরণ করছে কেন্দ্র’, তুলোধোনা তৃৃণমূলের
মুখ্যমন্ত্রী প্রধান উপদেষ্টার বিরুদ্ধে বিপর্যয় মোকাবিলা আইন প্রয়োগ করে যেভাবে তাঁকে দোষী বলা হচ্ছে, সেটা 'হাস্যকর' বলে ব্যাখ্যা করেন তৃণমূল সাংসদ।
কলকাতা: রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কড়া মনোভাব ভালভাবে নিচ্ছে না তৃণমূল কংগ্রেস। মঙ্গলবার সেটা আবারও সাফ করে দিল রাজ্যের শাসকদল। বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় এই প্রসঙ্গে বলেন, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের শৃঙ্খলাভঙ্গের সিদ্ধান্ত ‘হৃদয় বিদারক’। মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টার বিরুদ্ধে বিপর্যয় মোকাবিলা আইন প্রয়োগ করে যেভাবে তাঁকে দোষী বলা হচ্ছে, সেটা ‘হাস্যকর’ বলে ব্যাখ্যা করেন তৃণমূল সাংসদ।
মঙ্গলবার তৃণমূল ভবনে এক সাংবাদিক বৈঠক করে আলাপন ইস্যুতে কেন্দ্রকে নিশানায় নেন শাসকদলের দুই সাংসদ সৌগত রায় ও সুখেন্দু শেখর রায়। দু’জনেই একসুরে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, “যেভাবেই হোক রাজ্য সরকারকে এবং রাজ্যের আধিকারিকদের বিচলিত করাই কেন্দ্রের উদ্দেশ্য। কোনও মতে কাজ করতে দেওয়া যাবে না।”
রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনও পরামর্শ না করেই আলাপনকে দিল্লিতে তলবের চেষ্টাও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী বলে এ দিন উল্লেখ করেছেন সৌগত। রাজ্যের সঙ্গে কথা না বলেই রাজ্য সরকারে অধীনে কর্মরত আমলাকে দিল্লি ডেকে পাঠানো, এবং তার পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহকে এ দিন ‘প্রতিহিংসামূলক রাজনীতি’ বলেই আখ্যা দেন তিনি। যেহেতু আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় একজন ‘সৎ আমলা’, তাই তাঁর বিরুদ্ধে এহেন নিষ্ঠুর আচরণ করা হচ্ছে। এমনটাই মনে করেন সৌগত।
অন্যদিকে সুখেন্দু বলেন, “আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় একজন দক্ষ আমলা। প্রশাসক হিসেবে দারুণ কাজ করেছেন। তাই তাঁকে হেনস্থা করা হচ্ছে। আর্থিক অনিয়ম, তছরুপের অভিযোগ না থাকলে এমন চিঠি দেওয়া যায় না। অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসারদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনা যায় না। সুপ্রিম কোর্টের একাধিক রায় আছে। যত দ্রুত সম্ভব এই নোংরামি বন্ধ করা হোক।”
আরও পড়ুন: ‘লোকসভায় ভুল তথ্য দেওয়া বেআইনি’, নুসরতের বিরুদ্ধে অধ্যক্ষকে চিঠি বিজেপি সাংসদের
শনিবার সদ্য মাতৃবিয়োগ হয়েছে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তার মাসখানেক আগে হারিয়েছিলেন ভাইকেও। এমন ব্যক্তিগত শোকের সময়েই তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পথে অগ্রসর হয়েছে কেন্দ্র। কলাইকুণ্ডায় প্রধানমন্ত্রীর ইয়াস পরবর্তী রিভিউ বৈঠকে তিনি হাজির না থাকায় প্রাক্তন মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। জবাব দেওয়ার জন্য তাঁকে ৩০ দিন সময় দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনস্থ কর্মীবর্গ ও প্রশিক্ষণ বিভাগ।