Ghorer Bioscope awards 2025: আমাদের একটাই জীবন বোঝার পর থেকে দ্বিতীয় জীবন শুরু হয়: টিভি৯ নেটওয়ার্কের এমডি ও সিইও বরুণ দাস
TV9 Network MD and CEO Barun Das: ঘরের বায়োস্কোপ অনুষ্ঠানে টিভি৯ নেটওয়ার্কের এমডি ও সিইও বরুণ দাস বলেন, "আবার আমাদের ভুল থেকেও শিক্ষা নিতে হবে। যদি আমরা আমাদের ভুল নিয়ে চোখ বন্ধ করে থাকি, তাহলে আমরা সুযোগ হারাব। তাই এই দুটো একসঙ্গে করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমরা ইতিবাচক অনুঘটকের কাজ করব। পরের বছর আরও বড় করে ঘরের বায়োস্কোপ হবে আশা করি।"

কলকাতা: টিভি৯ বাংলার ঘরের বায়োস্কোপের তৃতীয় সংস্করণে চাঁদের হাট। রবিবার শহরের এক পাঁচতারা হোটেলে সেই অনুষ্ঠানে বাংলা সিনেমার অগ্রগতি নিয়ে আশার আলো দেখালেন টিভি৯ নেটওয়ার্কের এমডি ও সিইও বরুণ দাস। বাংলা সিনেমার উজ্জ্বল অতীতকে পাথেয় করে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দিলেন তিনি।
এই সন্ধেয় বরুণ দাসের বক্তব্যে ঘুরে ফিরে এসেছে অবসরের কথা। টিভি৯ নেটওয়ার্কের এমডি ও সিইও-কে বলতে শোনা যায়, “এতদিন আমরা শুনেছি সুইট সিক্সটিন। এখন আমার মনে হয় এটা বদলে সুইট সিক্সটি হওয়া উচিত। তবে এটা শুধু আমার ভাবনা। আমরা যাঁরা ষাটের সান্নিধ্যে এসে গিয়েছি কিংবা যাঁরা ষাটোর্ধ্ব, আমার মনে হয়, তাঁরা একটা প্রতিকূলতাকে এড়িয়ে যেতে পেরেছেন।”
এরপরই বরুণ দাস যোগ করেন, “সেই প্রতিকূলতার আসলে দুটো দিক রয়েছে। একটা এআই(AI)। আর অন্যটা জেন জি। কী কী হচ্ছে বিশ্বে, সেটা যদি আমরা দেখি, আমাদের মাথা খারাপ হয়ে যাবে। ওয়ার্নার ব্রাদার্স ডিসকভারির জন্য নেটফ্লিক্স ৭২ বিলিয়নের একটা টেকওভারের বিড করেছিল সম্প্রতি। তাকে ছাপিয়ে আমেরিকার আর একটা মিডিয়া কোম্পানি প্যারামাউন্ড স্কাই ডান্স ১০৮ বিলিয়ন ডলার অফার করেছে। পুরো পশ্চিমবঙ্গের বার্ষিক জিডিপি ২৫০ বিলিয়ন ডলারের আশপাশে। আর ওখানে কোম্পানি কেনাবেচা হচ্ছে এত টাকায়। তাহলেই বুঝুন।”
AI প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, “আর এআই-র কথা যদি বলি, এনভিডিয়ার একজন প্রাক্তন চিনা কর্মী মুর থ্রেডস নামে একটি কোম্পানি তৈরি করেছেন। এই কোম্পানিটি চিনের স্টার মার্কেটে লিস্ট করতে চেয়েছিল। তারা এক বিলিয়ন ডলার আশা করেছিল। কিন্তু, ৪ হাজার ৫০০ গুণ সাবক্রিপশন এল। মানে ওরা ১ বিলিয়ন ডলার আশা করেছিল। কিন্তু, পেল ৪.৫ ট্রিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ চিনের লোকেরা ওই কোম্পানিতে ৪.৫ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে চেয়েছেন। ভারত এই মুহূর্তে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। আর আমাদের দেশের জিডিপি ৪ ট্রিলিয়ন ডলার। এর থেকেই পরিষ্কার হয় আসল ছবিটা।”
আর এর ঠিক পরই জেন জির প্রসঙ্গে চলে আসেন বরুণ দাস। তিনি বলেন, “ওরা একদম অন্যরকম। যেন অন্য গ্রহের। ওরা বিশ্বাস করে ইনক্লুসিভিটিতে। ওরা বিশ্বাস করে স্বচ্ছতা, প্রকৃতিতে। ওরা নিজেদের গ্লোবাল সিটিজেন মনে করে। ওদের সঙ্গে আমাদের ডিল করতে হবে।”
বাংলা সিনেমার ভবিষ্যৎ নিয়েও আশাবাদী তিনি। বলেন, “আমি চির আশাবাদী। আমি দেখছি একটা সুযোগ রয়েছে। সেই সুযোগটা হল, রিক্রিয়েশন। রিক্রিয়েশনে সবাই শূন্য থেকে শুরু করে। ওরা হয়তো কিছুটা আগে রয়েছে। কিন্তু, সবাই একটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে থাকবে। সবার জন্য একটা হেড রুম থাকবে, উন্নতির জন্য। সেই হেড রুমটা আমরা বাঙালিরা, মিডিয়া ও এন্টারটেনমেন্ট ওয়ার্ল্ড দখল করতে পারি। আমাদের কিছু কিছু সুবিধা রয়েছে। যেমন আমাদের অতীত। যদিও আমি মনে করি, অতীত দু’দিক থেকে প্রাসঙ্গিক। এক, আমরা অতীত থেকে শিখব। আর দুই, অতীত থেকে অনুপ্রাণিত হব। অতীত থেকে অনুপ্রাণিত হওয়ার জন্য আমাদের অনেক কিছু রয়েছে। ভারতে সিনেমার শুরুই এই বাংলাতে। নির্বাক চলচ্চিত্রের সময় কলকাতাই ছিল সিনেমা তৈরির কারখানা। হীরালাল সেন যখন ১৯০৩ সালে সিনেমা বানান, দাদাসাহেব ফালকে তখনও সিনেমা বানিয়ে উঠতে পারেননি। তারপর নীতীশ বোস, বিএন সরকার। যখন বম্বেতে সবাই চলে গেলেন, তখনও হিমাংশু রায়, দেবীকা রানি… আমরা সবসময় আগে ছিলাম। এরপর সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক, মৃণাল সেন। ফলে আমাদের পরম্পরা যথেষ্ট মজবুত।”
শুনুন কী বললেন টিভি৯ নেটওয়ার্কের এমডি ও সিইও বরুণ দাস-
ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার কথা জানিয়ে বরুণ দাস বলেন, “আবার আমাদের ভুল থেকেও শিক্ষা নিতে হবে। যদি আমরা আমাদের ভুল নিয়ে চোখ বন্ধ করে থাকি, তাহলে আমরা সুযোগ হারাব। তাই এই দুটো একসঙ্গে করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমরা ইতিবাচক অনুঘটকের কাজ করব। পরের বছর আরও বড় করে ঘরের বায়োস্কোপ হবে আশা করি।”
সবশেষে তাঁর অবসরের ভাবনা নিয়ে টিভি৯ নেটওয়ার্কের এমডি ও সিইও বলেন, “আমাদের সবারই দুটো জীবন আছে। আমরা দ্বিতীয় জীবন সেদিন থেকেই বাঁচি, সেদিন আমরা ভাবি যে আমাদের একটাই জীবন রয়েছে।”
