কলকাতা: মধ্যরাতে তেলেঙ্গাবাগান থেকে এক যুবকের দেহ উদ্ধার। ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য তেলেঙ্গাবাগানের দত্তবাগান এলাকায়। মৃতের নাম লোকনাথ দত্ত (২৬)। তাঁর ২৬ দিনের এক কন্যাসন্তান রয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে উল্টোডাঙা থানার পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লোকনাথ দত্তবাগান এলাকারই বাসিন্দা। তিনি রবিবার রাতে তাঁরই বন্ধু গোপাল ভাদুড়ির সঙ্গে কোনও একটি অনু্ষ্ঠানে গিয়েছিলেন। এরপর এলাকারই এক পুজোর অনুষ্ঠানে যান তাঁরা। প্যান্ডেলের পিছনে বসে রাতে একসঙ্গে মদ্যপানও করেন বলে জানাচ্ছেন বাসিন্দাদের একাংশ।
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, যখন ঘটনাটি ঘটেছে তাঁরা সেভাবে কিছুই দেখতে পাননি। তবে চিৎকার চেঁচামেচি তাঁরা শুনতে পেয়েছিলেন। এলাকাবাসীরা জানাচ্ছেন, ওই এলাকাতে এমনিতেই মত্তদের তাণ্ডব চলতেই থাকে। মদ্যপানের পর অনেকেই চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকেন ওই এলাকায়। এলাকায় মদের কারবার বন্ধ করার জন্য একাধিকবার সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এক স্থানীয় বাসিন্দার বক্তব্য, “আমরা কোনওভাবেই এই অবস্থাটা আর সহ্য করতে পারছি না। আশঙ্কা করতাম কোনওদিন কোনও বড় দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। যেভাবে ওরা বেহুঁশ অবস্থায় পড়ে থাকে, মারপিট করে, তা অনিচ্ছাকৃতভাবে হলেও বড় দুর্ঘটনা ঘটতেই পারত। এটাও তেমন হল। পুজোর প্যান্ডেলের পিছন থেকে চিৎকার চেঁচামেচি শুনেছিলাম। কিন্তু কেউ কী আর ওদের ঝামেলায় জড়াতে চায়। কেউ যাইনি। তাতেই এত মর্মান্তিক ঘটনা।”
তাই এদিনের চিৎকার চেঁচামেচিকেও বিশেষভাবে আমল দেননি তাঁরা। পরে রবিবার মধ্যরাতে লোকনাথের দেহ একটি ভ্যানের ওপর পড়ে থাকতে দেখেন এলাকারই কয়েকজন। লোকনাথের গায়ে কোনও ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল না। তবে ভ্যানের ওপর কয়েক ফোঁটা রক্তের দাগ মিলেছে। ঘটনায় লোকনাথেরই বন্ধু গোপাল ভাদুড়ির নাম উঠে এসেছে। লোকনাথের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
তবে প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, ধাক্কাধাক্কির জেরে পড়ে যান লোকনাথ। আর তার জেরেই মৃত্যু। গোপাল ভাদুড়িকে আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে জেরাতে গোপাল তেমনটাই জানিয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তবে উল্টোডাঙা থানার পুলিশের সামনে একাধিক অভিযোগ তুলে ধরেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, সন্ধ্যার পর থেকেই ওই এলাকায় চলে মদ্যপদের তাণ্ডব। মদ্যপান, গালিগালাজ, মারধর চলতেই থাকে। দ্রুত এই অবস্থার বদল চান বলে দাবি করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “পুলিশের কাছে আমরা সবটা জানিয়েছি। এলাকায় যাতে মদের আসর না বসে, তার জন্য নজর দিতে বলা হয়েছে। এখান থেকেই শুরু হয় দুষ্কৃতীদের আনাগোনা।” উল্টোডাঙা থানার পুলিশ জানিয়েছে, আপাতত খুনের কারণ স্পষ্ট নয়। তবে মনে করা হচ্ছে, পুরনো কোনও শত্রুতা থেকেই বচসা, মারপিট। তার জেরে এই ঘটনা। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। এক জনকে আটক করে জেরা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Dharmatala Bus Accident: ফের দুর্ঘটনা, ফের নির্দেশ, ‘এবার বাজেয়াপ্ত হবে আনফিট বাস!’