
কলকাতা: এক দশকে বদলে গিয়েছে বাবা। রাজ্যে ভোটার তালিকার নিবিড় পরিমার্জন পর্বে ধরা পড়ল সেই ছবিই। ২০১৪ সাল রাজহাট নিউটাউন বিধানসভা কেন্দ্রের ১০৫ নম্বর পার্টে এসে উঠলেন সুদেব হালদার। সেই বছরের ভোটার তালিকা অনুযায়ী, সুদেবের বাবার নাম অবনী হালদার। এরপর ১১ বছরের ফারাক। বাবা হয়ে গেলেন কাকা। সুদেব পেলেন নতুন বাবা।
২০২৫ সালের ভোটার তালিকা অনুযায়ী, সুদেবের বাবার নাম জগদীশচন্দ্র হালদার। কিন্তু এই এক দশকের সামান্য বেশি সময়ে কী এমন ঘটল? রাতারাতি যিনি বাবা ছিলেন, তিনিই বা কীভাবে কাকাতে পরিণত হয়ে গেলেন? ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা এই প্রসঙ্গে দিয়েছেন ‘বাংলাদেশি’ তত্ত্ব। অভিযোগ, এই সুদেব হালদার বাংলাদেশের বরিশালের বাসিন্দা। ভোটার কার্ডে উল্লেখিত তাঁর বাবা জগদীশচন্দ্র হালদারও বাংলাদেশের বাসিন্দা।
তা হলে এই অবনী হালদার কীভাবে বাবা হলে সুদেবের? আর রাতারাতিই কাকাতেও পরিণত হলেনই বা কীভাবে? ২০১৩ সালে নিউটাউনের মৃধা মার্কেটে জমি কেনার নামে তাঁর কাছে এসেছিলেন সুদেব। তারপর জমি কেনার জন্য অবনীর ভোটার কার্ড সংগ্রহ করেন তিনি। অভিযোগ, সেই কার্ডকে ব্য়বহার করেই বাংলাদেশি পরিচয় ঢেকে নিজেকে ভারতীয় বানিয়েছেন সুদেব। এদিন অবনী হালদার বলেন, ‘জমির কাগজ করানোর জন্য এসেছিল আমার কাছে। তখন আমায় বলেছিল আমি তোমাকে কাকা বানালাম।’
কিন্তু ২০১৪ সালের ভোটার তালিকা বলছে, ‘অজান্তেই’ অবনী হয়ে গিয়েছিলেন সুদেবের বাবা। অভিযোগ, এরপর নিজের ভারতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে মৃধা মার্কেটে নিশ্চিন্তে নিজের ব্যবসা খুলে ফেলেছেন সুদেব। এই ‘বাংলাদেশি’ অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল সুদেবকে। তিনি যেন পক্ষান্তরে স্বীকারও করে নিয়েছেন। সুদেবের কথায়, ‘আমি সিএএ-তে আবেদন জানিয়েছি। বাবা এখানে নেই। ওদের ভোটার কার্ডও নেই। আমি প্রথমে কাকাকে বাবা বানিয়েছিলাম। নাম উঠেছে। কিন্তু পরবর্তীতে নাম ট্রান্সফারও হয়েছে। এখন সম্পর্ক ভাল নেই। তাই কাকা হয়তো সম্পর্ক রয়েছে স্বীকার করছেন না।’
এদিন স্থানীয় ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিল মনোরঞ্জন ঘোষ বলেন, ‘যাকে বাবা বানাচ্ছে, সেই এখন বলছে ছেলে নয়। এটা তো বিরাট মিথ্যা। তবে এঁদের আমি অনুপ্রবেশকারী মনে করি না। আমি নিজে পাকিস্তানে ছিলাম। অত্যাচারের জেরে এখানে চলে এসেছি। আমরা শুধুমাত্র বাংলাদেশের মুসলিমদের অনুপ্রবেশকারী বলব।’