
কলকাতা: ‘বন্দে মাতরম’-র দেড়শো বছরের পূর্তি উদযাপনের মধ্যে কলকাতায় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির রক্ষণাবেঙ্গণ নিয়ে সরব হল বিজেপি। রাজ্য সরকার ও শাসকদলকে নিশানা করলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। রবিবার রীতিমতো বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের দুই বংশধরকে পাশে বসিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করলেন। সেখানেই রাজ্য বিজেপির সভাপতি বললেন, কলকাতায় বঙ্কিমচন্দ্রের বাড়িটি রক্ষণাবেঙ্গণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখবেন তাঁরা।
গতকাল বিজেপির সল্টলেকের দফতরে সাংবাদিক বৈঠকে শমীকের পাশে ছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পরিবারের পঞ্চম প্রজন্মের দুই সদস্য সজল চট্টোপাধ্যায় ও সুমিত্র চট্টোপাধ্যায়। কলকাতার ৫ নম্বর প্রতাপ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে বঙ্কিমচন্দ্রের বাসভবনের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে সরব হন তাঁরাও। ওই বাড়িটি ২০০৬ সালে অধিগ্রহণ করে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সেখানে একটি লাইব্রেরি তৈরি করেন। এরপর ২০১৪ সালে ওই বাসভবন চত্বরে বঙ্কিমচন্দ্রের একটি মূর্তি বসানো হয়।
গত ৭ নভেম্বর ওই বাসভবনের মূর্তিতে মালা দিয়ে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাতে গিয়েছিলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু, সেদিন বাসভবনটি বন্ধ ছিল। এমনকি, ওই বাসভবনে যাওয়ার রাস্তাটি খোঁড়া ছিল বলে অভিযোগ। এই নিয়ে শোরগোল পড়ার পর রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করেন শমীক।
সেখানেই বঙ্কিমচন্দ্রের বংশধর সজল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। আমি যতদিন গিয়েছি, কোনওদিন লাইব্রেরি খোলা পাইনি। ওখানে যা ইচ্ছা তাই হচ্ছে। অধিগ্রহণ হয়েছে। কিন্তু আমরা তো দান করিনি। কেন সেদিন ওঁদের (শুভেন্দু অধিকারী ) ঢুকতে দেওয়া হয়নি, আমার জবাব চাই। লাইব্রেরি খোলা হয় না। ওখানে জামা কাপড় মেলে দেওয়া হয়। আমি জিজ্ঞাসা করাতে কেউ মারতে এসেছিলেন। আমরা চাই ওই বাড়ির সংস্কার হোক।”
এরপরই শমীক বলেন, “বঙ্কিমচন্দ্র ওই বাড়িতে বাস করতেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-সহ বাংলার মনীষীরা ওই বাড়িতে আসতেন। তা রক্ষণাবেক্ষণ হয় না। পুরো বিষয়টি জানিয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিচ্ছি। বিশেষ করে ৭ নভেম্বরের ঘটনা জানাব।” তারপরই তিনি বলেন, “দলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি জানাচ্ছি। যদি কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও বিভাগ এই বাড়ির পরিচালনভার গ্রহণ করতে পারে টেকিনিক্যালি, তাহলে তারা যেন গ্রহণ করে।” বঙ্কিমচন্দ্রের পরিবারের দুই সদস্যও জানান, বাড়িটি যে কেউ রক্ষণাবেক্ষণ করলে, তাঁদের কোনও আপত্তি নেই।