কলকাতা: ঠান্ডা আমেজে নিম্নচাপের কাঁটা। বাংলার চাষির উদ্বেগ বাড়িয়ে আবার বৃষ্টিরও আশঙ্কা। শুক্রবারই দক্ষিণবঙ্গের ৬ জেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনা। বৃষ্টি হতে পারে দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, হাওড়া ও ঝাড়গ্রামে। শনিবার থেকে বৃষ্টির তীব্রতা ও বিস্তার দুই-ই বাড়বে। ফলে দুশ্চিন্তা বাড়বে কৃষকের।
ফের চাষে ক্ষতির আশঙ্কা। পাকা ধান থেকে শীতের সবজি। আরও পিছোতে পারে আলুচাষ। কমবে ঠান্ডা আমেজও। এক ডিগ্রি বেড়ে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পৌঁছেছে ১৮.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সপ্তাহান্তে আরও বাড়বে তাপমাত্রা। আন্দামান সাগরে নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। তারপর শক্তি বাড়িয়ে সরে আসবে বঙ্গোপসাগরে।
হাওয়া অফিসের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী দু দিন দুই বঙ্গেই অনুভূত হবে শীত। দিন দুয়েক পর থেকে রাতের তাপমাত্রা ৩ থেকে ৪ ডিগ্রি বাড়বে, ঠাণ্ডা কমে যাবে। ডিসেম্বরের ৩ তারিখে দক্ষিণবঙ্গে দুই মেদিনীপুর ও দুই ২৪ পরগনা, ঝাড়গ্রাম, হাওড়ায় হালকা বৃষ্টি হবে। বৃষ্টির পরিমাণ ৪ তারিখ থেকে বাড়তে শুরু করবে। সব জেলাতেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে।
শুধু উপকূলে ও দুই মেদিনীপুরে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হবে। বাকি জেলার মধ্যে দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া ও ঝাড়গ্রামে দু-এক জায়গায় ভারী বৃষ্টি হবে। তারপর ৫ তারিখ বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়বে। ৬ তারিখ পর্যন্ত চলবে বৃষ্টি। এর মূল কারণ থাইল্যান্ড উপকূলের দিকে একটি নিম্নচাপ আসছে। আগামী ১২ ঘন্টায় সেই নিম্নচাপ সরে এসে আন্দামান সাগরের ওপর অবস্থান করবে। তারপরে এটা উত্তর-পশ্চিম দিকে সরে যাবে এবং সঙ্গে সঙ্গে শক্তি বাড়াবে।
ডিসেম্বরের ২ তারিখ থেকেই এটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। এরপর উত্তর-পশ্চিম দিকে এগোবে ও ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে ৪ তারিখে অন্ধ্র প্রদেশ উপকূলে গিয়ে পৌঁছবে। এর প্রভাবেই আমাদের রাজ্যে এই বৃষ্টি হবে। এই ঘূর্ণিঝড়ের জন্য উপকুলের জেলাগুলোতে হাওয়ার গতি বেশি থাকবে। কারণ ৪ তারিখে যখন এই ঘূর্ণিঝড় ওড়িশার উপকূলে অবস্থান করবে, তখন আমাদের উপকূলের জেলায় হাওয়ার গতি থাকবে ৪৫ থেকে ৫৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। পরবর্তীতে হাওয়ার গতি বেড়ে ৭০ থেকে ৭৫ কিলোমিটার হতে পারে। ২ তারিখ পর্যন্ত শুষ্ক আবহাওয়া থাকবে তার পরেই আবহাওয়া পরিবর্তন হবে। উত্তরবঙ্গে খুব বেশি বৃষ্টি হওয়ার কথা নয়। ৪ তারিখে হালকা বৃষ্টি হতে পারে। মৎস্যজীবীদের ৩ তারিখ থেকে সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
যে সব কারণে শীত বাধা পেতে পারে সেগুলি হল, তামিলনাড়ুর নিম্নচাপ, বঙ্গোপসাগের উচ্চচাপ বলয়, জলীয় বাষ্পের দাপটে কোণঠাসা শুকনো বাতাস। এ ছাড়া উত্তরে পশ্চিমী বাতাস এখনও তেমন জোরদার নয়, সেই সঙ্গে রয়েছে বঙ্গোপসাগরে ফের শক্তিশালী নিম্নচাপের আশঙ্কা।