কলকাতা: নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টির সম্ভাবনাকে সামনে রেখে কৃষি দফতরের সর্তকতা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে অ্যাডভাইজারি কৃষি দফতরের। প্রভাবিত হতে পারে এমন জেলার জেলাশাসকদের অ্যাডভাইজারি পাঠানো হয়েছে। জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, হুগলি, নদিয়া, হাওড়া, মুর্শিদাবাদ, মালদা – এই জেলাগুলিতে সর্তকতা জারি করা হয়েছে। দ্রুত মাঠের ধান কেটে নেওয়ার পাশাপাশি আলুচাষিদের চারা লাগাতে বারণ করা হয়েছে।
ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়। ১০ জেলার কৃষকদের কথা মাথায় রেখে একটি অ্যাডভাইজরি জারি করেছে নবান্ন। আলু বোনার কাজ এক সপ্তাহ পিছিয়ে দিতে হবে। পাকা ধান অবিলম্বে কেটে ফেলতে হবে। তৈলবীজ ও আলুর খেতে জল জমলে নিকাশি ব্যবস্থা উন্নত রাখতে হবে। দ্রুত যাতে জমা জল বেরিয়ে যায়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। পানের বরজ, পেপে, কলা বাগানে কী কী করণীয়, সেক্ষেত্রেও একটি অ্যাডভাইজরি জারি করা হয়েছে।
ইতিমধ্যেই বুধবার নবান্নে ভিডিয়ো কনফারেন্সে একটি বৈঠক হয়েছে। তাতে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী, কৃষি দফতরের সচিব ওঙ্কারসিং মিনা। জেলার আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। আগাম সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
বুধবার নবান্নে আসে কৃষকদের সংগঠনের একটি দল। তাঁরা দেখা করেছেন আধিকারিকদের সঙ্গে। ইয়াস, ইয়াস পরবর্তী পরিস্থিতিতে কী কী সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে, তা বিস্তারিত জানিয়েছেন তাঁরা। কৃষকদের বক্তব্য, অনেক সময় দেখা গিয়েছে, অ্যাডভাইজরি সঠিক সময়ে তাঁদের কাছে পৌঁছে গেলেও, নিম্নচাপ মোকাবিলায় সঠিক সময়ে পদক্ষেপ করার পরিকাঠামো তাঁদের কাছে থাকে না। ফলে ক্ষতির আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। জেলাশাসক ও আধিকারিকদের সতর্ক থাকতে বলেছে নবান্ন।
যে নির্দেশগুলি দেওয়া হয়েছে, তা এক নজরে
১. মাঠের পাকা ধান দ্রুত কেটে, ঝেড়ে, গুদামজাত করতে হবে। প্রয়োজনে যন্ত্রের সাহায্যে তা করতে হবে।
২. সবজি, তৈলবীজ, সরিষা কিংবা আলুর জমিতে জমা জল দ্রুত নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. আলু বোনার কাজ সাত দিন পিছিয়ে দিতে হবে।
৪. সবজি ও অনান্য ফল খেত বিশেষত পেঁপে, কলা জাতীয় ফসল, যেগুলোর ঝড়ে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, সেগুলিকে রক্ষা করতে হবে।
৫. সবজির মাচা ও পানের বরজকে শক্ত করে বাঁধনের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিকূল আবহাওয়া থেকে রক্ষা করতে হূবে।
৬. আবহাওয়ার পরবর্তী বুলেটিনগুলির ওপর লক্ষ্য রেখে ফসলের খেতে ব্যবস্থা নিন।
বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা। অগ্রহায়ণেও বড় দুর্যোগের মুখে বাংলা। শনিবার ও রবিবার একাধিক জেলায় অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা। উপকূলে বইতে পারে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া। রবিবার অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তা কলকাতাতেও।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য অভিমুখ ওড়িশা-অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল। থাইল্যান্ড থেকে আন্দামান সাগর হয়ে বঙ্গোপসাগরে আসছে নিম্নচাপ। পূর্ব উপকূলে পৌঁছনোর পথে দফা দফায় শক্তি বাড়ানোর আশঙ্কা। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদে জব্দ হবে শীত। চাষের ফের বড়সড় ক্ষতির আশঙ্কা।
আরও পড়ুন: Weather Update: ‘দক্ষিণী’ বর্ষার দাপটে ফিকে উত্তুরে হাওয়া, এ বারও জোরাল শীতে লাগাম