Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Weather Update: ‘দক্ষিণী’ বর্ষার দাপটে ফিকে উত্তুরে হাওয়া, এ বারও জোরাল শীতে লাগাম

Weather: ডিসেম্বরে ৩২% বেশি বৃষ্টির পূর্বাভাস দক্ষিণে। এ পর্যন্ত বৃষ্টি ৪৮% উদ্বৃত্ত। শুধু অক্টোবর-নভেম্বর মিলিয়ে ১১৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে চেন্নাইয়ে। হওয়ার কথা ৬২৫ মিলিমিটার। পুদুচেরিতে বৃষ্টি হয়েছে ১৪৩০ মিলিমিটার। হওয়ার কথা ৬৪৭ মিলিমিটার। বারবার বানভাসি তামিলনাড়ু, কেরল, কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ

Weather Update: 'দক্ষিণী' বর্ষার দাপটে ফিকে উত্তুরে হাওয়া, এ বারও জোরাল শীতে লাগাম
ফের কমবে তাপমাত্রা ফাইল ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 01, 2021 | 10:22 PM

  কমলেশ চৌধুরী: নভেম্বর শেষ। ডিসেম্বরের শুরু। কিন্তু, শীতের (Winter) দেখা নেই। হালকা শীতভাব অনুভূত হলেও সে সুখ বেশিদিন বাঙালির কপালে সইবে না! কারণ, সক্রিয় হচ্ছে দক্ষিণ ভারতের বর্ষা। আর এতেই শীতের দুয়ারে পড়েছে কাঁটা। অন্তত এমনটাই বলছেন আবহবিদরা।

৮ বছর আগে জানুয়ারি মাসে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছিল কলকাতার তাপমাত্রা। এ বার কি তেমন হতে পারে? সম্ভাবনা কম। কারণ, তাপমাত্রা ৯ বা ১০ ডিগ্রিতে নামার জন্য যে একটানা ঠান্ডার প্রয়োজন হয়, তার সম্ভাবনা এ বার প্রায় নেই। ঠান্ডা যে একেবারে পড়বে না, তা নয়। কিন্তু প্রবল শৈত্যপ্রবাহ বা হাড়-হিম ঠান্ডার অপেক্ষা কলকাতা কেন, বাংলায় বসেও না করাই ভালো। বুধবারের পূর্বাভাসে সেই ইঙ্গিতই দিয়ে দিল মৌসম ভবন।

কেন এই ইঙ্গিত? উত্তর দিতে গিয়ে আবহবিদরা নিয়ে যাচ্ছেন সোজা প্রশান্ত মহাসাগরে। গত কয়েক মাস ধরেই পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের জলতলের তাপমাত্রা কমছে। যে পরিস্থিতিকে ডাকা হয় ‘লা নিনা’ নামে। স্প্যানিশ শব্দের অর্থ, ছোট্ট মেয়ে। আর এই ‘লা নিনা’র ফলে বায়ুপ্রবাহে এমন পরিবর্তন হয়, তার ফলে উত্তর ভারতে প্রবল ঠান্ডা পড়ে, আবার দক্ষিণ ভারতের বর্ষাও সক্রিয় হয়ে ওঠে। যেমন, গত বছর ‘লা নিনা’র প্রভাবে কনকনে ঠান্ডার সাক্ষী হয়েছিল উত্তর ভারত। দিল্লিতে তাপমাত্রা নেমে যায় ১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

kolkata-winter-web

অলঙ্করণ: অভীক দেবনাথ

কিন্তু এ বার দিল্লির বরাতও এখনও খোলেনি। তার কারণই হল, অতিসক্রিয় উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বাতাস। জোরদার দক্ষিণ ভারতের বর্ষা। পুবালি বাতাস এতোই শক্তিশালী যে উত্তুরে-পশ্চিমী হাওয়া কিছুতেই সুবিধা করতে পারছে না। এমনকি, নভেম্বরে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার আনাগোনাও কমেছে। উল্টে, বারবার নিম্নচাপ। আর বারবার ঠান্ডার সামনে বাধার পাহাড়। এই যেমন, সপ্তাহান্তে বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ-এর ইঙ্গিত। আরব সাগরেও আরেকটি নিম্নচাপ। কাশ্মীরে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। একাধিক রাজ্যে ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা। দেশে শীত না বর্ষা, বোঝা মুশকিল। স্বাভাবিক ভাবেই আগামী কয়েকদিনে রাতের তাপমাত্রা ঊর্ধ্বমুখী হবে। পিছু হটবে শীত।

আবহবিদদের অঙ্ক বলছে, আগামী দিনেও ‘দক্ষিণী’ বর্ষা অতিসক্রিয় থাকবে। তাই শীতে বারবার লাগামছাড়া পারাপতন কঠিন। তাই পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি, এই তিন মাসে উত্তর-পশ্চিম ভারতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার গড় স্বাভাবিক বা তার চেয়ে বেশি থাকবে। উত্তর-পূর্ব ভারতেও তাই। আর ‘শীতের আঁতুড়ঘরেই’ যদি ঠান্ডা জোরাল না হয়, তাহলে স্বাভাবিক ভাবেই বাংলার বরাত খুলবে না। কারণ, শীতের ব্যাপারে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গ মোটেই আত্মনির্ভর নয়। উত্তুরে-পশ্চিমী বাতাসের জন্য রাজস্থান-দিল্লির দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়, আর উত্তুরে বাতাসের জন্য নেপাল-সিকিমের দিকে।

মৌসম ভবনের ডিরেক্টর জেনারেল মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বলছেন, “এ বার লা নিনার প্রভাবে দক্ষিণ ভারতের বর্ষা মাত্রাতিরিক্ত শক্তিশালী। তাই একের পর এক নিম্নচাপ, আর সে সবের প্রভাবে বারবার উত্তর ভারত পর্যন্ত পুবালি বাতাস ঢুকে পড়ছে। ফলে পশ্চিমী বাতাস অনেকটাই কোণঠাসা। এই প্রবণতা দেখেই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।”

ডিসেম্বরে ৩২% বেশি বৃষ্টির পূর্বাভাস দক্ষিণে। এ পর্যন্ত বৃষ্টি ৪৮% উদ্বৃত্ত। শুধু অক্টোবর-নভেম্বর মিলিয়ে ১১৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে চেন্নাইয়ে। হওয়ার কথা ৬২৫ মিলিমিটার। পুদুচেরিতে বৃষ্টি হয়েছে ১৪৩০ মিলিমিটার। হওয়ার কথা ৬৪৭ মিলিমিটার। বারবার বানভাসি তামিলনাড়ু, কেরল, কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ। অতিবৃষ্টির পূর্বাভাসের অর্থই হল, আরও নিম্নচাপের আশঙ্কা। পুণের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মেটেরোলজির জলবায়ু বিজ্ঞানী পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়ও বলছেন, “লা নিনার সঙ্গে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বাতাস সক্রিয় হওয়ার সম্পর্ক রয়েছে। কিছুটা টেলিকানেকশন বলা যায়। শীত জুড়েই লা নিনা থাকবে। উল্টে আরও শক্তিশালী হবে। ফলে ধরে নেওয়া যেতে পারে, শীতের এবার মন্দ কপাল।”

গত মরসুমেও শীতের বরাত ভালো ছিল না বাংলার। বিশেষ করে জানুয়ারিতে। মাসের শুরুতে ঠান্ডা প্রায় উধাও হয়ে যায়। জানুয়ারির চেয়ে বেশি ঠান্ডা পড়তে শুরু করে ফেব্রুয়ারিতে। কিন্তু তত দিনে শীতের পাততাড়ি গোটানোর পালাও চলে আসে। ফলে শীতপ্রেমীদের মন ভরেনি। মৌসম ভবন ব্যাখ্যা করে বলেছিল, লা নিনার প্রভাবে দেশের উত্তর-পশ্চিম অংশে দাপুটে ঠান্ডা পড়লেও, বাকি অংশে তার প্রতিফলন সেভাবে হয় না। সেই কারণেই বাংলার বরাত খোলেনি। পরে পরিসংখ্যানেও দেখা যায়, দেশে ১২১ বছরের মধ্যে দ্বিতীয় উষ্ণতম শীতের তকমা জোটে গত মরসুমের।

আরও পড়ুন:Duare Ration in Bankura: মাত্র ২ সপ্তাহ! থমকে গেল মুখ্যমন্ত্রীর সাধের দুয়ারে রেশন, ‘পরিকাঠামোর অভাব’ বলছেন ডিলাররা