কলকাতা : রাজ্য বাজেট (West Bengal Budget) প্রস্তাব পেশের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সুরেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ আর্থিক বঞ্চনার অভিযোগ তোলেন অমিত মিত্র (Amit Mitra)। বললেন, “২০২০-২১ আর্থিক বছরে বাজেটে উল্লেখিত ১৪ হাজার ২২৫ কোটি টাকা কেটে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের বৈধ প্রাপ্য টাকার মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৫ হাজার ৯৯৪ কোটি টাকা দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ, প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা বকেয়া জিএসটির (GST) টাকা এখনও অবধি দেয়নি কেন্দ্র। তার উপর আমাদের উপর ধার চাপিয়ে দিয়েছে ৬ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা।” কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আক্রমণের সুর চড়িয়ে তিনি আরও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী চিঠি লিখেছেন, আমি চিঠি লিখেছি। পাঁচ বছরের জন্য এই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা হয়েছিল। ১৪ শতাংশ আর্থিক বৃদ্ধির হিসেবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া ছিল।”
রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক বঞ্চনার প্রসঙ্গে অমিত মিত্র বলেন, “করোনার পর তিন বছর চলে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে গিয়ে দেখা করে বিষয়টি উত্থাপন করেছেন। অনুরোধ করেছিলেন, ক্ষতিপূরণ তিন থেকে পাঁচ বছর বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য। এখন জিএসটির টাকা নেই। জুন মাসে ক্ষতিপূরণের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে, তারপর আর পাওয়া যাবে না। শুধু আমাদের রাজ্যেরই নয়, সব রাজ্যের ক্ষেত্রেই একই অবস্থা। এ এক যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো বিরোধী চিন্তাভাবনা। বার বার যুক্তি দিয়ে চিঠি লেখা হচ্ছে, কিন্তু কোনও জবাব পাওয়া যাচ্ছে না।”
অমিত মিত্র আরও বলেন, “গোটা ভারতের কথা যদি ধরা যায়, তাহলে ফেব্রুয়ারি মাসে সাড়ে তিন কোটি বেকারত্ব রয়েছে। মুদ্রাস্ফীতির হার ৬.০১ শতাংশ। ৬ শতাংশ পার করলেই তা রেড লাইন। কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স ৬ শতাংশ পার করে গিয়েছে। হোলসেল প্রাইস ইনডেক্স ১২.৯৬ শতাংশ। মুদ্রাস্ফীতি এবং বেকারত্বের জন্য সাধারণ মানুষের উপর চাপ বাড়ছে। আম জনতাকে পরিষেবা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ কেন্দ্রীয় সরকার। সেই জায়গায় দাড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গ সরকার একের পর এক প্রকল্প চালু করছে সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পগুলির থেকে কী কী সুবিধা এসেছে, সেই প্রসঙ্গেও আজ ব্যাখ্যা দেন অমিত মিত্র। বললেন, “মানুষের কথা ভেবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের মাধ্যমে তাঁদের হাতে সরাসরি টাকা দেওয়ার প্রকল্প নিয়ে এসেছেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি তাদের হাতে টাকা দিচ্ছেন, যা তাঁরা খরচ করবেন এবং এর ফলে চাহিদা তৈরি হবে। শিল্পের বিনিয়োগে উৎসাহ তখনই তৈরি হবে, যখন চাহিদা তৈরি হবে। ২০২০-২১ সালে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি ৭.৩ শতাংশ পিছিয়ে গিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী যে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প নিয়ে এসেছেন, তার ফলে ২০২১-২১ সালে আর্থিক বৃদ্ধি হয়েছে ১.২ শতাংশ। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এক তাত্ত্বিক ম্যাক্রো ইকোনমিক নীতি অনুসরণ করছে।”
আরও পড়ুন : Bengal Budget: কোনও প্রকল্প বন্ধ হবে না, বাজেট প্রস্তাবের পর রাজ্যবাসীকে আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রী মমতার