কলকাতা: বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক মুখ্যমন্ত্রীর। আর সেই বৈঠকে মুখ্য আলোচ্য বিষয় হতে চলেছে বিএসএফের এক্তিয়ার নিয়ে কেন্দ্রের নয়া নির্দেশিকা। সোমবার দিল্লি উড়ে যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে এমনটাই বলে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে তীব্র নিন্দা করেন ত্রিপুরা সরকারের।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার রয়েছে বুধবার। রাজ্যের বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আমি কথা বলতে যাচ্ছি। বিশেষ করে বিএসএফের ইস্যুটা নিয়ে আমি কথা বলতে যাচ্ছি। গায়ের জোরে এলাকা দখল করতে দেব না। বিএসএফ তো আর আমার শত্রু নয়। ওরাও বন্ধু আমার। বিজেপি যে ভাবে মনে করছে বিএসএফ মানে বিজেপি সেফ সেটা তো ঠিক নয়। প্রত্যেক সংগঠনের একটা নিজস্বতা আছে। এলাকায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব রাজ্য পুলিশের। আবার সিআইএসএফ, বিএসএফ তারাও ক্যাডার। প্রত্যেকের নিজস্ব ক্ষেত্র আছে। কিন্তু সেটা না করে এরা গায়ের জোরে এজেন্সিগুলিকে নিজের পার্টির কাজে লাগাচ্ছে।”
একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে তৃণমূল সাংসদদের সাক্ষাতের সময় না পাওয়া নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লি যাওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি জানতে পেরেছি আমাদের সাংসদরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দফতরের সামনে ধরনায় বসেছেন ত্রিপুরার ঘটনা নিয়ে। রবিবার সন্ধ্যাতেই তাঁরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের সময় দেওয়া হয়নি। জানি না কেন! কেন ত্রিপুরা এখন অগ্নিগর্ভ। আমি কল্যাণ, ডেরেকের সঙ্গে কথা বললাম। কোনও সময় এখনও তাঁরা পায়নি। দিল্লিতে নেমে আমি আমার সাংসদদের সঙ্গে দেখা করতে যাব। তবে ধরনায় আমি যোগ দেব না।”
ত্রিপুরায় শুধু তৃণমূল কংগ্রেসকেই নয়, সমস্ত সংবাদমাধ্যমেরও কন্ঠরোধ করা হচ্ছে, বক্তব্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ত্রিপুরা, উত্তর প্রদেশ, অসম সর্বত্রই একই রকম ঘটনা ঘটছে। খুব দুর্ভাগ্যজনক। অভিষেক ত্রিপুরায় গিয়েছে। সায়নী, কুণাল, অর্পিতা, ব্রাত্য সকলেই ওখানে আছে। ওরা আজ ভোটের শেষ প্রচার করবে। যদি রাজ্য সরকার মিটিংটাও না করতে দেয় তা হলে ভোটে কী হবে তা আমি জানি না। তবে মানুষ জবাব দেবেই।”
বিজেপি এতটাই উগ্র হয়ে উঠেছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পর্যন্ত তারা মানছে না বলে অভিযোগ মমতার। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “আমরা সবসময় আদালতের নির্দেশকে সম্মান করি। কিন্তু ত্রিপুরায় দেখছি সে নির্দেশও মানা হচ্ছে না। সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত তা মানছেন না। আমি সর্বোচ্চ বিচারদাতার কাছে অনুরোধ করব তাঁদের নির্দেশ যখন অমান্য করা হচ্ছে তাঁরাও যেন আইন মেনে ব্যবস্থা নেন।”
কলকাতা ছাড়ার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিএসএফটা বড় ইস্যু। ক্ষমতা দখল করতে চাইছে। ফেডারেল পরিকাঠামো ধ্বংস করতে চাইছে ওরা। এই বিষয়গুলো নিয়েই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমি কথা বলব। তবে অন্যান্য বিষয়ও অবশ্যই উঠবে।”
আরও পড়ুন: বাড়ল জটিলতা! স্বাস্থ্যসাথী নিয়ে এবার মামলা হাইকোর্টে, রাজ্যের কাছে হলফনামা চাইল আদালত