
কলকাতা: দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। সোমবার সন্ধেয় কালীঘাট স্কাইওয়াকের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্কাইওয়াকের উদ্বোধন করতে গিয়ে শান্তির বার্তাও দিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বললেন, “অনুমতি নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করার অধিকার সবার রয়েছে। কিন্তু, আইন হাতে তুলে নেবেন না।”
এদিন কালীঘাট স্কাইওয়াকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তৃণমূলের একাধিক সাংসদ, বিধায়ককে দেখা যায়। ছিলেন দেব, সৌগত রায়, মালা রায়, অদিতি মুন্সি, সোহম, মদন মিত্র। কলকাতা পৌরনিগমের মেয়র ফিরহাদ হাকিম-সহ পুরপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। কালীঘাট স্কাইওয়াকের পাশাপাশি নবনির্মিত হকার্স কর্নারেরও এদিন উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী।
কালীঘাট স্কাইওয়াকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “দক্ষিণেশ্বরে স্কাইওয়াক করার সময়ই আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, কালীঘাট স্কাইওয়াকও করতে হবে। কিন্তু, সেখানে অনেকটা জায়গা ছিল। এখানে অবশ্য জায়গা একটু কম।” মুখ্যমন্ত্রী জানান, স্কাইওয়াকটির দৈর্ঘ্য ৪৩৫ মিটার, প্রস্থ ১০.৫ মিটার। মমতা বলেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান কোটি কোটি মানুষকে আকৃষ্ট করে। বিভিন্ন মন্দির, মসজিদ, গুরুদ্বারের উন্নয়নে রাজ্য সরকার কী কী কাজ করেছে, সেকথাও তুলে ধরেন তিনি।
কালীঘাট স্কাইওয়াকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
এরপরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আমরা সব জায়গাতেই যাই। অন্য কোনও অনুষ্ঠানে গেলে আমার বিরুদ্ধে লেখা হয়। আমার টাইটেলও বদলে দেওয়া হয়। কারা এটা করে। ধর্ম নিয়ে অধার্মিক খেলা খেলতে নেই। ধর্ম মানে শ্রদ্ধা। ধর্ম মানে ভালবাসা। ধর্ম মানে শান্তি। ধর্ম মানে সম্প্রীতি। ধর্ম মানে একতা। মানুষকে ভালবাসার থেকে বড় ধর্ম আর কিছু হতে পারে না। আমরা যখন জন্মাই, একা জন্মাই। আর যখন চলে যাই, একা যাই। তাই কীসের হিংসা, কীসের লড়াই, কীসের অশান্তি। মনে রাখবেন, মানুষকে ভালবাসলে সব কিছু জয় করা যায়। কিন্তু, নিজেকে আলাদা করে রাখলে কাউকে জয় করা যায় না।”
এখানেই না থেমে তিনি বলেন, “মনে রাখবেন, কারও উপর আঘাত আসলে, সে শোষিতই হোক, অবহেলিতই হোক, সে বঞ্চিতই হোক, সে নির্যাতিতই হোক, সে কোনও ধর্মের লোকই হোক, আমরা কিন্তু, সবার পাশে দাঁড়াই।”
কোনও ঘটনার উল্লেখ না করেই মমতা বলেন, “আমি সবাইকে বলব, অনুমতি নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করার অধিকার সবার রয়েছে। কিন্তু, আইন হাতে তুলে নেবেন না। সে যে হোক না কেন। আইনের রক্ষক রয়েছে। আইনের ভক্ষক দরকার নেই। কেউ কেউ প্ররোচনা দেবে কোনও ব্যাপারে। কিন্তু, প্ররোচিত হবেন না। যে মাথা ঠান্ডা রাখে, সেই তো জয় করে। আপনারা জয়ী হোন। জয় হোক মানুষের। জয় হোক সত্যের।” নিজের বক্তব্যের শেষে মমতা বলেন, “বাংলার মাটি শান্তির মাটি। শান্তি বজায় রাখুন। বাংলার মাটিকে ভালবাসুন।”