South Calcutta Law College: ‘তৃণমূল ছাত্র পরিষদ না করলে পড়াশোনা করতে পারবে না’, বিস্ফোরক অভিযোগ আইন কলেজের ছাত্রের
South Calcutta Law College: এই ঘটনার পরই গভর্নিং বডির প্রধানের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক ভাইস প্রিন্সিপাল।
কলকাতা: বিস্ফোরক অভিযোগ উঠল আইন কলেজে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (TMCP) না করলে পড়াশোনা করা যাবে না বলে ফতোয়া জারির অভিযোগ উঠেছে সাউথ ক্যালকাটা ল’ কলেজে (South Calcutta Law College)। অভিযোগ তুলেছেন কলেজের প্রথম বর্ষের এক ছাত্র। তাঁর অভিযোগ, কলেজেরই কয়েকজন পড়ুয়া তাঁকে চাপ দেয়। কলেজে পড়াশোনা করতে হলে ইউনিয়ন করতে হবে এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদ করতে হবে বলে চাপ দেয় বলে অভিযোগ। অভিযোগকারীর দাবি, টিএমসিপি করার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাঁকে লাগাতার মারধর করা হয়। অভিযোগ আরও রয়েছে। কলেজের গভর্নিং বডির প্রেসিডেন্ট তথা বজবজের তৃণমূল বিধায়কের সামনে ওই ছাত্রকে হেনস্থা করারও অভিযোগ ওঠে। ইতিমধ্যেই কলেজ কর্তৃপক্ষকে ওই ছাত্র লিখিত আকারে বিষয়টি জানান। ওই ছাত্রের বক্তব্য, “আমি কলেজে পড়াশোনা করতে এসেছি। রাজনীতি সম্পর্কে আমার কোনও ভাবনাচিন্তাই নেই। অভিভাবক নিয়ে গিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পরও যা হল তারপর তো এখন আমি বাড়ি থেকে বেরোতেই ভয় পাচ্ছি।” যদিও এ বিষয়ে গভর্নিং বডির প্রেসিডেন্ট তথা বজবজের তৃণমূল বিধায়ক অশোক দেব বলেন, “এসবের ভিত্তি নেই। আমার কাছেও তো অভিযোগ এসেছে ভাইস প্রিন্সিপাল এখানে তৃণমূলের ইউনিট থাকতে দেবেন না বলছেন।”
প্রথম বর্ষের ছাত্রের অভিযোগ, তৃণমূলের ছাত্র পরিষদ করার জন্য তাঁকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। তিনি তাতে রাজি না হওয়ায় মারধর করা হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানানোর পর সমস্যা সমাধানের জন্য বুধবার কলেজে গভর্নিং বডির মিটিং ডাকা হয়। সেই বৈঠকে প্রথম বর্ষের ওই ছাত্র ও তাঁর পরিবারের সদস্যদেরও ডাকা হয় বলে জানা গিয়েছে। মিটিংয়ে ছিলেন গভর্নিং বডির প্রেসিডেন্ট অশোক দেবও। এদিকে এই বৈঠক থেকে বেরিয়ে সপরিবারে হেনস্থার শিকার হন ওই প্রথমবর্ষের ছাত্র। তাদের অভিযোগ, কলেজ ক্যাম্পাসে হেনস্থা, দরজা বন্ধ করে আটকে রাখা এবং মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। এমনকী কলেজ থেকে রাস্তায় বেরোনোর পর সকলকে ঘিরে ধরে মারধর করার অভিযোগও উঠেছে।
ইতিমধ্যেই প্রথমবর্ষের ওই ছাত্রের পরিবারের তরফে লিখিতভাবে কসবা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে ল’ কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল নয়না চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি সেদিন কলেজে ছিলাম। এক ছাত্র অভিভাবক নিয়ে এসেছিলেন। তাঁর ছেলের শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগে একটি চিঠি দেন ওই অভিভাবক। বুধবার একটি বৈঠক হয়। জিবি প্রেসিডেন্ট বিধায়ক অশোক দেবও আসেন। সেই মিটিংয়ে কিছু স্টুডেট ঢুকে পড়েন। পরে একটা ঝামেলার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।” একইসঙ্গে ভাইস প্রিন্সিপালের পাল্টা অভিযোগ, কলেজে পঠনপাঠনের যথাযোগ্য পরিবেশ নেই। তাঁকেও কাজের ক্ষেত্রে অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। এরকম পরিস্থিতি চললে তাঁকেই ইস্তফা দিতে হবে বলে দাবি করেন তিনি।
যদিও অশোক দেবের বক্তব্য, “জিবি মিটিং ছিল। সেখানে একটা মিটমাট হয়। বাইরে কী হয়েছে আমি জানি না। আমি কখনও চাইব না ছাত্রের বাবাকে গায়ে হাত দিক কেউ। আমি চলে আসার পর শুনলাম এই ঘটনা ঘটেছে। আমি কলেজে গিয়ে আগে কথা বলি, জানি। যদি অভিযোগের সত্যতা থাকে আবারও গভর্নিং বডির বৈঠক হবে। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” একইসঙ্গে ভাইস প্রিন্সিপালের অভিযোগের পাল্টা অশোক দেব বলেন, “এসব বলে লাভ নেই। আমি একা সিদ্ধান্ত নিই না। জিবির মিটিংয়ে সর্বসম্মতিক্রমে যা সিদ্ধান্ত হওয়ার হয়। যাঁরা সদস্য তাঁরা মতামত দেন। আমার মত চান। সকলের মত বিনিময়েই সিদ্ধান্ত হয়। আমি কোনও সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিই না। ওনার উচিৎ সকলকে নিয়ে চলা।”