কলকাতা: রাজ্যের ১০৮টি পুরসভায় ভোটগ্রহণ চলছে। সকাল থেকেই এই ভোট ঘিরে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়েছে বিভিন্ন এলাকা। কামারহাটি থেকে ধুলিয়ান, হালিশহর থেকে ময়নাগুড়ি হিংসার অভিযোগ ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছে এলাকা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অভিযোগের আঙুল উঠেছে শাসকদলের বিরুদ্ধে। গা-জোয়ারির পুরভোট হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস সবদলই। পুলিশ, কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে তারা। যদিও পাল্টা তৃণমূলের দাবি, ১১ হাজারের বেশি বুথে ভোট হচ্ছে। অথচ ঝামেলার অভিযোগ আসছে ১.২ শতাংশ জায়গা থেকে। যা আমল দিতে নারাজ তারা।
সিপিএম নেতা সুশান্ত ঘোষের কটাক্ষ, সঠিক ভূমিকা পালন না করলে মানুষই তা বুঝিয়ে দেবে পুলিশকে। সুশান্ত ঘোষের কথায়, ” শাসকদলের একেবারে কর্মী হয়ে কাজ করাটা গণতন্ত্রের পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক। কিছু অংশের পুলিশ বোধহয় তা বুঝতে পারছে না। এদের একটা বড় অংশই এখনও মনে হয় না যে বোঝার জায়গায় এসেছে। তবে জনগণ কিন্তু সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী। জনগণ সবটা পারেন। তেমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে বুঝিয়ে দেবেন কোনটা ঠিক কোনটা বেঠিক।”
অন্যদিকে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, কেন্দ্রীয়বাহিনী না থাকায় অবাধে ভোট লুঠ করা হচ্ছে। লাগামহীন হিংসার অভিযোগ তুলে শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “যেটা হওয়ার কথা ছিল সেটাই হচ্ছে। আমাদের দক্ষিণ দমদম পুরসভার এক মহিলা প্রার্থীকে বুথের ভিতর ঢুকে মারধর করা হয়েছে। একই মানুষ ঘুরে ঘুরে সব জায়গায় ভোট দিচ্ছেন। এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। সমস্ত দলের এজেন্টই মার খেয়েছেন। হাইকোর্ট শান্তিপূর্ণ ভোটের কথা বলছিল। সুপ্রিমকোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল এই পুলিশের উপর। তারাও আস্থা রেখেছিল। এবার তারা চিন্তা করবে।”
সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী বলেন, “কার্যত যেটা হয়েছে নির্বাচন কমিশন, যারা নির্বাচন করাবে সেই কর্মী, পুলিশ, তৃণমূলের বাহিনী গুন্ডাদের যৌথ আক্রমণ মানুষের অধিকারের বিরুদ্ধে। একেবারে বর্গী হানার মতো। ১০০তে ১০০ চাই মুখ্যমন্ত্রীর। আমি মুখ্যমন্ত্রীকে বলব আপনি ১০০য় ১০০ পাবেন। তা নিয়ে খুশি থাকুন। কিন্তু জয় করেও আপনার ভয় যাবে না। যে বাহিনী নিয়ে এই কাজ করছেন, সেই বাহিনীর মধ্যে দখলদারির লড়াই চলবেই এবং চলছেই। এমন নির্লিপ্ত নিলর্জ্জ ছবি কখনও দেখা যায় না।”
যদিও তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “যারা আজকে বলছে এই হয়নি ওই হয়নি, আমি খুব নির্দিষ্টভাবে বলে দিই ২ হাজার ২৭৬টা ওয়ার্ডে ভোট হচ্ছে। মোট বুথ ১১ হাজার ২৮০টি। যে অভিযোগগুলি বা নাটকগুলি সামনে আসছে তার শতাংশ ১.২ শতাংশ। অর্থাৎ বিরোধীরা যদি কোনও অভিযোগ করেও থাকেন তা ১১ হাজারের বেশি বুথে ১.২ শতাংশ। তারপর সত্যি মিথ্যার কথা।”