PPP Model School: স্কুলেও এবার পিপিপি মডেল! ভোল বদল হবে কি শিক্ষা ব্যবস্থায়?
School Education Department: স্কুলগুলির যে পরিকাঠামোগত ক্ষেত্রগুলি রয়েছে, সেগুলিকে কোনও এক বেসরকারি লগ্নিকারীর হাতে তুলে দেওয়ার চিন্তা ভাবনা চলছে।
কলকাতা : রাজ্যে এবার পিপিপি মডেলে স্কুলের (PPP Model School) ভাবনা। স্কুল শিক্ষা দফতর থেকে ইতিমধ্যেই সেই খসড়া তৈরি করা হয়েছে। সেই খসড়া পাঠানো হবে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দফতরে। তারপরে তা চূড়ান্ত করে রাজ্য মন্ত্রিসভার কাছে পেশ করা হবে। ঠিক কীভাবে কাজ করবে এই মডেল? পিপিপি মডেলে স্কুলের বিষয়ে যে খসড়া নীতি তৈরি করেছে স্কুল শিক্ষা দফতর (School Education Department), তাতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিকের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন, বেসরকারি সংস্থাগুলিকে সরকারি জমি, বাড়ি, পরিকাঠামো ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে খসড়ায়। খসড়া অনুযায়ী, স্কুল ভবন এবং পরিকাঠামো তৈরির জন্য বেসরকারি সংস্থা লগ্নি করবে। অর্থাৎ, স্কুলগুলির যে পরিকাঠামোগত ক্ষেত্রগুলি রয়েছে, সেগুলিকে কোনও এক বেসরকারি লগ্নিকারীর হাতে তুলে দেওয়ার চিন্তা ভাবনা চলছে।
তাহলে কী পুরো শিক্ষা ব্যবস্থার বেসরকারিকরণ হয়ে যাচ্ছে? না, এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই বলেই মত শিক্ষাবিদদের একাংশের। কেবলমাত্র নির্দিষ্ট কয়েকটি জায়গাতেই বেসরকারি লগ্নির ব্যবস্থা থাকবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় বেসরকারি লগ্নিকারী সংস্থা স্কুলগুলিতে শিক্ষক-শিক্ষিকা, অশিক্ষক কর্মী নিয়োগ করতে পারবে। পড়াশোনার খরচ এবং অন্য়ান্য খরচ ধরে ঠিক হবে স্কুলের ফি। তবে গোটা বিষয়টি এখনও খসড়ার পর্যায়ে রয়েছে, চূড়ান্ত অনুমোদন এখনও কিছু হয়নি। জানা গিয়েছে, এক্ষেত্রে নিলামের মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থার ওই নির্দিষ্ট কিছু অংশ বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার চিন্তা ভাবনা চলছে। শিক্ষায় এই পিপিপি মডেল নিয়ে আসা হলে, শিক্ষা ব্যবস্থার হাল ফিরতে পারে বলেই মনে করছে রাজ্য সরকার। তবে এই খসড়াটি মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেলে, তবেই নিলাম এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলির কথা ভাবা হবে।
এই বিষয়ে প্রধান শিক্ষক সমিতির নেতা চন্দন মাইতি TV9 বাংলাকে জানিয়েছেন, “এক ধরনের বেসরকারিকরণের দিকে শিক্ষা ব্যবস্থাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এর তীব্র বিরোধিতা করছি। কারণ, সাধারণ মানুষ, গরিব মানুষ, প্রান্তিক শ্রেণির মানুষ – তাঁরা যে সাধারণের শিক্ষা ব্যবস্থার উপর এতদিন ধরে নির্ভরশীল ছিল, তার জায়গায় অর্থ দিয়ে যে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করার ভাবনা রাজ্য সরকার নিচ্ছে – তা এই রাজ্যের ক্ষেত্রে কখনোই ফলপ্রসু হবে না। কারণ আমাদের সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থার উপর বিশাল সংখ্যক মানুষ এতদিন ধরে নির্ভরশীল ছিল।”
এই বিষয়ে এআইডিএসও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদক মণিশঙ্কর পট্টনায়ক জানিয়েছেন, “রাজ্য সরকার একটি খসড়া প্রস্তাবও তৈরি করেছে এবং অতি দ্রুততার সঙ্গে শিক্ষা দপ্তরের বিভিন্ন প্রশাসনিক বিভাগের মতামত নিয়ে কর্পোরেট, শিল্পপতিদের সঙ্গে আলোচনাও সেরে ফেলেছে ৷ শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারি দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলে বেসরকারি মালিকদের হাতে স্কুল শিক্ষাকে তুলে দেওয়ার এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”