কলকাতা : প্রজাতন্ত্র দিবসে এ বছর জায়গা পাচ্ছে না বাংলার ট্যাবলো। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে সেই ট্যাবলো বাদ দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য সরকারকে জানানো হলেও, কী কারণে ট্যাবলো বাদ পড়ল, সে বিষয়ে কোনও সদুত্তর মেলেনি। এই ইস্যুতে সামনে আসতে শুরু করেছে কেন্দ্র- রাজ্য সংঘাত। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই মামলা গড়াল হাইকোর্টে। বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। আগামী সোমবার রয়েছে মামলার শুনানি।
নেতাজির ট্যাবলো বিতর্কের জেরে এ দিন জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে। মামলা দায়ের করেছেন আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার। কেন প্রজাতন্ত্র দিবসে বাদ পড়ল নেতাজির ট্যাবলো? রাজ্যের তৈরি ট্যাবলো কেন বাদ দেওয়া হল? সেই প্রশ্ন তুলেই দায়ের হয়েছে এই মামলা। মামলাকারীর দাবি, কেন বাদ দেওয়া হল, সে বিষয়ে কোনও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি কেন্দ্র। নেতাজির ট্যাবলো অবিলম্বে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানানো হয়েছে।
এক দিকে স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি ও আর এক দিকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মজয়ন্তী। তাই এবার নেতাজিকে সামনে রেখেই ট্যাবলো পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কিন্তু রাজ্যের প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়া হয়। এরপরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুধু মমতাই নয়, বাংলার ট্যাবলোকে অনুমোদন দেওয়ার আর্জি জানিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং-কে চিঠি দিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।
বিতর্ক চরমে ওঠার পর প্রশ্ন ওঠে, যে ট্যাবলো নেতাজিকে নিয়ে তৈরি, সেটি বাদ দেওয়ার অর্থ নেতাজিকে অসম্মান করা! এরপরই গত মঙ্গলবার রাজনাথ সিং এই বিষয়ে চিঠি দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাঁর চিঠিতে লেখেন, ‘নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে আমরা শ্রদ্ধা করি। সেই সম্মান স্মারক হিসাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২৩ জানুয়ারি পরাক্রম দিবস ঘোষণা করেছেন। এবার থেকে গণতন্ত্র দিবসের উদযাপনের শুরুই হবে ২৩ জানুয়ারি থেকে। চলবে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত। বর্তমান সরকার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ও পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যেক স্বাধীনতা সংগ্রামীর প্রতি কৃতজ্ঞ।’ ট্যাবলো বাদ দেওয়ার অর্থ যে নেতাজিকে অসম্মান নয়, সেই ব্যাখ্যাই দিয়েছেন তিনি।
এবারই প্রথম নয়, এর আগেও প্রজাতন্ত্র দিবসের ট্যাবলোর অন্তর্ভুক্তিকে কেন্দ্র করে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত তৈরি হয়েছিল। ২০২১ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসেও রাজ্য সরকার কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী, জল ধরো জল ভরো-র মতো বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক প্রকল্প নিয়ে ট্যাবলো পাঠানোর প্রস্তাব দেয়, সেবারও বাদ পড়ে বাংলার ট্যাবলো। সেই সময়েও বিজেপি-তৃণমূলের মধ্যে বাকযুদ্ধ চরমে ওঠে।