
কলকাতা: কেন ধর্মতলাতেই শহিদ দিবসের সমাবেশ করে তৃণমূল কংগ্রেস? এবার শহিদ দিবসের সমাবেশের জন্য হাইকোর্ট একাধিক শর্ত বেঁধে দেওয়ার পর মুখ খুললেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দল কেন ধর্মতলাতেই শহিদ দিবসের সমাবেশ করে, তার কারণ জানালেন। রবিবার শহিদ দিবসের মঞ্চ পরিদর্শনে এসে মমতা বললেন, এখানেই বহু কর্মী লুটিয়ে পড়েছিলেন। রক্তাক্ত হয়েছিল এই এলাকায়। সেইজন্য এখানে শহিদ দিবসের সমাবেশ করা হয়।
রাত পোহালেই শহিদ দিবসের সমাবেশ। তার আগে এদিন ধর্মতলায় সভাস্থল পরিদর্শনে আসেন মমতা। তাঁর সঙ্গে সুব্রত বক্সী, ফিরহাদ হাকিম, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যরা ছিলেন। সভাস্থল পরিদর্শনে এসে মমতা বলেন, “বাংলায় আগে মানুষ ভোট দিতে পারতেন না। কলকাতা, গ্রাম সব জায়গায় মানুষকে তালা দিয়ে রাখা হত। আমাদের আন্দোলন শুরু হয়েছিল। ওরা গুলি চালালে ১৩ জন মারা যান। ১৫০ আহত হয়েছিলেন।” এরপরই ধর্মতলায় শহিদ দিবস পালনের কারণ জানিয়ে তিনি বলেন, “এখানে অনেক কর্মী লুটিয়ে পড়েছিলেন। রক্তাক্ত হয়ে গিয়েছিল এই এলাকা। তাই বছরে একটাই প্রোগ্রাম শহিদ স্মরণে আমরা এখানেই করি।” বিরোধীদের তোপ দেগে তিনি বলেন, “এই নিয়েও অনেক আপত্তি আছে। তাঁরা যখন পুলিশের অনুমতি ছাড়া নবান্ন অভিযান করেন, তখন কোথায় থাকে আপত্তি?”
এদিন ধর্মতলায় মঞ্চ পরিদর্শনের পর বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূল সমর্থকদের উদ্দেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ঝড়-জল হলেও আসবেন। শান্তিপূর্ণভাবে আসুন। ইতিমধ্যে লক্ষাধিক মানুষ চলে এসেছেন। আগামিকালও জেলাগুলি থেকে মানুষ আসবেন।” এরপরই তিনি বলেন, “একুশে জুলাইয়ের অনুষ্ঠান চিরকাল চলবে। সাধারণ মানুষের হয়তো একটু অসুবিধা হবে কালকে।”
ধর্মতলায় তৃণমূলের শহিদ দিবসের সমাবেশের জন্য সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়েন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা হয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ কলকাতা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন, সাধারণ মানুষ যাতে কোনও সমস্যায় না পড়েন, তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে। একইসঙ্গে তৃণমূলের আইনজীবীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পরের বছর থেকে শহিদ মিনার, ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড বা অন্য কোথাও সভা করা যায় কি না, সেটা আপনাদের ভাবতে হবে।” যদি তা আদালতের পর্যবেক্ষণ। নির্দেশনামায় এই নিয়ে কোনও উল্লেখ নেই। তবে এদিন তৃণমূল সুপ্রিমো স্পষ্ট করে দিলেন, শহিদ দিবসের সমাবেশ ধর্মতলাতেই হবে।