মিনিট খানেকের ঝড় ‘গিলে’ খায় সব কিছু, কেন হয় এমন টর্নেডো?

সাধারণত বলে-কয়ে আসে না সেই টর্নেডো (Tornado)। অথচ ১-২ মিনিটের মধ্যে তছনছ করে দিতে পারে অনেক কিছু। মঙ্গলবারই সেই ছবি দেখা গিয়েছে হুগলিতে।

মিনিট খানেকের ঝড় 'গিলে' খায় সব কিছু, কেন হয় এমন টর্নেডো?
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Updated on: May 26, 2021 | 3:33 PM

কলকাতা: আচমকা একটা বিকট শব্দ। বাড়ি থেকে ছুটে বেরিয়ে এসেই বাসিন্দারা দেখেন আকাশ থেকে প্রবল বেগে ঘুরতে ঘুরতে নেমে আসছে একরাশ কালো মেঘ। তারপর ১-২ মিনিটেই তছনছ করে দেয় সব কিছু। চোখের নিমেষে বিপর্যস্ত হয় একের পর এক বাড়ি। সাইক্লোন ইয়াস (Cyclone Yaas) আছড়ে পড়ার আগেই এমনই ঘটনা ঘটে যায় কলকাতার উপকন্ঠে। আচমকা আছড়ে পড়া সেই ঝড়ের নাম ‘টর্নেডো’। মঙ্গলবার দুপুরে  ব্যান্ডেল, হালিশহর-সহ হুগলির একাধিক জায়গায় সেই দৃশ্যের সাক্ষী হন সাধারণ মানুষ। আজ, বুধবার কলকাতায় সেই টর্নেডো হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সাইক্লোনের আতঙ্কের মাঝেই কেন এমন টর্নেডো?

আসলে, সাইক্লোনের আগে কিংবা পরে এই ধরনের ঝড় হতে পারে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, সাইক্লোন যখন তৈরি হয় তখন অনেক সময় ওপরের বায়ুস্তরে হাওয়ার বেগ বৃদ্ধি পায়, অথচ নীচের দিকে তখনও হাওয়ার বেগ কম থাকে। দুই বায়ুস্তরের মধ্যে এই ফারাক তৈরি হলেই ঘূর্ণির আকার ধারণ করে তৈরি হয় টর্নেডো। তখন নীচের দিক থেকে ওপরের দিক উঠতে থাকে ঘূর্ণি। বিশেষত জলা জায়গা থেকে আর্দ্রতা গ্রহণ করে এই টর্নেডো শক্তিশালী হয়। বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে ‘মেসো সাইক্লোন।’

আরও পড়ুন: ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত ১ কোটি মানুষ, শুক্রবারই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী

আবহবিদরা জানাচ্ছেন, খুব দ্রুত এই টর্নেডো তৈরি হয়। ফলে, আগে থেকে পূর্বাভাস দেওয়া অনেক সময় সম্ভব হয় না। কালবৈশাখীও অন্তত ২-৩ ঘণ্টা ধরে ঝড়ের আকার নেয়। কিন্তু টর্নেডো কয়েক মিনিটের মধ্যেই তৈরি হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে থাকে এক বিশেষ সাকিং মেকানিজম। সেটার কারণেই টর্নেডো সামনে যা পায় সেটাই উড়িয়ে নিয়ে যায়। এলাকায় আর্দ্রতা যত বেশি থাকে, ততই শক্তিশালী হয় এই ঝড়। গত কাল, সেই ছবিই দেখা গিয়েছে। এত খুব কম সময়ে অনেক বেশি ক্ষতি হতে পারে। এর স্থায়ীত্বও খুব বেশি হয় না। আবহাওয়া দফতর আনুষ্ঠানিকভাবে অনেক ক্ষেত্রে এই বিষয়ে কোনও সতর্ক বার্তা দিতে পারে না। তবে সাইক্লোনের আগে বা পরে এই ধরনের টর্নেডো আছড়ে পড়তে পারে বলেই আশঙ্কা থাকে।

মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ হালিশহরের প্রসাদ নগর ও বীজপুর থানার বালিভাড়া ইটখোলা এলাকায় আচমকাই ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় এলাকা। উড়ে যায় ২০০ টি বাড়ির টিনের চাল। ভেঙে যায় দরজার জানলার কাচও। আহত হন কমপক্ষে ২৫ জন। কারো মাথায় টিন পড়ে, কেউ বা রাস্তায় পড়ে গিয়ে, কারোর মাথায় টালি পড়ে মাথা ফাটে।কয়েক মিনিটেই তছনছ হয়ে যায় সব কিছু।