চুল পাতলা ( Hair Thinning) হয়ে যাওয়া, চুল ঝরে পড়া (Hairfall Problems) এগুলি সবই একটি সাধারণ সমস্যা। তবে মন ও শরীরের ভারসাম্যের ভারসাম্য়হীনতার কারণে এই সমস্যাগুলি আরও বৃদ্ধি পায়। আমেরিকান একাদেমি অফ ডার্মাটোলজি অনুসারে প্রতিদিন ৫০ থেকে ১০০ চুল স্বাভাবিকভাবেই ঝরে পড়ে (Hair Care Routine)। এর থেকে বেশি ঝরে পড়লে বুঝতে হবে শরীরের কোথাও সমস্যা তৈরি হয়েছে। এমনকি চুল ঝরতে ঝরতে এমন সমস্যা হবে, তাতে চুল পাতলা হয়ে মাথায় টাক পর্যন্ত হতে পারে। জেনেটিক্স, লাইফস্টাইল এই দুটির সংমিশ্রণে চুল পাতলা হওয়ার কারণ রয়েছে। আবার কোনও অসুখের কারণে বা বেশি ডোজের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় চুল ঝরে পাতলা হওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আয়ুর্বেদ অনুসারে, নিজের দোষে, ভারসাম্যহীনতাতেই পুরুষ ও নারী, উভয়েরই চুলের ক্ষতি ও চুলে পাতলা হওয়ার সমস্যা দেখা যায়। যাদের পিত্ত বা হজমের সমস্যা রয়েছে তাদেরই বিশেষ করে অকালে চুল পেকে যাওয়া, চুল ঝরে যাওয়া, চুল পড়া, চুল পাতলা হয়ে যাওয়ার প্রবণতা বেশি। যাদের এই সমস্যা রয়েছে, তারা ভেষজ বা আয়ুর্বেদ কোনও থেরাপি করতে পারেন। বর্তমানে সুস্থ থাকতে সুষম খাদ্য, জীবনধারা ও হার্বাল থেরাপির উপর বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বাস্থ্যকর ও সুষম খাদ্য, ঔষধি ভেষজ ব্যবহার, যোগা ও ধ্যান করা, অ্যারোমাথেরাপি, ভেষজ তেল ম্যাসাজ, প্রাণায়াম ও যোগব্য়ায়ামের উপরই নির্ভর করছে সুস্থ থাকার মূলমন্ত্র। পুরুষ ও মহিলা, উভয়েরই চুল পড়ার চিকিত্সায় বেশি কার্যকরী। চুল পাতলা হয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দিলে ঘরেই কী কী ভেষজ উপায়ে সমস্যার সমাধান করবেন, তা জেনে নিন এখানে…
মধু
মধু হল একটি প্রাকৃতিক হিউমেক্ট্যান্ট, যা মাথার ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল শোষণ করতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য,যার ফলে মাথার ত্বকে ও মুখের ত্বকে ব্রণ, ফুসকুড়ি, চুলকানির মত সমস্যাকে উপশম করতে সাহায্য করে।
আমলা তেল
এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। আমলা সরাসরি খাওয়া বেশ ভাল। যদি তা খেতে না পারেন, তাহলে রস করেও খেতে পারেন। এছাড়া চুলের গোড়ায় আমলার তেল ব্যবহার করলে তা অনেক বেশি ফল পাওয়া যায়। চুল পাতলা হওয়া, অকালে পেকে যাওয়া, চুল পড়ার মত সমস্যাগুলি খুব সহজেই রোধ করা সম্ভব। এটি চুলের গভীরে গিয়ে চুলকে আরও স্বাস্থ্যকর ও মজবুত করে তোলে।
ব্রাহ্মী তেল
ব্রাহ্মী শাক শুধু স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতেই সাহায্য করে তাই নয়, ব্রাহ্মী শাকের তেল চুল পাতলা হয়ে যাওয়াও রোধ করে। তুলের ফলিকলগুলিকে উদ্দীপিত করতে ও মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে সাহায্য করে। ব্রাহ্মী তেল নিয়ে কয়েক মিনিট মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করুন। তারপর সারারাত রেখে দিন। সকালে উঠে শ্যাম্পু দিয়ে চুল পরিষ্কার করে নিন।
কারি পাতার তেল
এটিও একটি বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ ও চুলের গ্রোথকে উন্নত করতে সাহায্য করে। নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল অল্প গরম করে তাতে কারি পাতা দিন। তেল ঠান্ডা হলে পাতা ছেঁকে নিন। এরপর এই তেল চুল ধোওয়ার আগে সরাসরি প্রয়োগ করতে পারেন।
কিছু জিনিস আছে, সেগুলি এড়িয়ে চলুন
ক্যাফেইন জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে কফি পান করা এড়িয়ে চলুন। সময়ের মধ্যে বন্ধ করতে না পারলে চুল ঝরে পাতলা হয়ে যেতে পারে। মশালাদার, ভাজাভুজি, তৈলাক্ত ও জাঙ্ক ফুড খাওয়া যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। এর জেরে পিত্তদোষে ভারসাম্যহীনতা তৈরি করতে পারে। তাতে চুল ঝরে পাতলা হয়ে যায় অনেক বেশি।