সকাল হলেই বাড়িতে পৌঁছে যাবে টাটকা গোরুর দুধ… এমন দিন এখন প্রায় অতীত হতে বসেছে। শহরতলিতে এখনও কোথাও কোথাও গোয়ালঘর, গোয়ালা, টাটকা দুধের চল থাকলেও শহরে সে সব এখন গল্প। সব বাড়িতেই ভরসা এখন প্যাকেট দুধ। আর সেই দুধও যে প্রতিদিন সকালে গিয়ে নিয়ে আসার মত সময় থাকে এমনটা নয়। বেশিরভাগ মানুষই দু-তিনদিনের দুধ একসঙ্গে কিনে রাখেন। ব্রেকফাস্ট থেকে ডিনার প্রতিদিন নানা ভাবে দুধ ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও অধিকাংশ মিষ্টি খাবারের প্রধান উপকরণ হল দুধ।
শীতে পায়েস, পিঠে, মিষ্টি, কেক- সব বাড়িতে একটু বেশিই বানানো হয়। এছাড়াও আদা দিয়ে দুধ চা কিংবা কফি এসব তো রয়েইছে। আর তাই দুদিন আগে আনা দুধ হঠাৎ যদি ফ্রিজ থেকে বের করতে গিয়ে দেখেন নষ্ট হয়ে গিয়েছে তখন কারই বা আর ভাল লাগে। শুধু তাই নয়, দুধ এমন একটা খাবার যা চাইলেন সঙ্গে সঙ্গে পাওয়া যায় না। সব খাবার যে গুঁড়ো দুধ দিয়ে বানানো যায় এমনও নয়। এটাও ঠিক দুধ যেমন তাড়াতাড়ি খারাপ হয়ে যায় তেমনই কিন্তু দুধের তৈরি কোনও খাবারও ফ্রিজে দিন তিনেকের বেশি ভাল থাকে না।
তবে কিছু দুধ থাকে যা অনেকদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করে রাখা যায়। সেক্ষেত্রে সেই দুধ হতে হবে সম্পূর্ণ ফ্যাট ফ্রি। আর এই দুধ ৩ মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করে রাখা যায়। তবে দুধের প্যাকেট একবার খুলে ফেললে সেটা অবশ্যই ফ্রিজে রাখবেন এবং ২ দিনের মধ্যেই ব্যবহার করে ফেলবেন।
যে ভাবে দুধ সংরক্ষণ করে রাখবেন
*সময়ে ব্যবহার করা হয় না বলে অনেক সময়ই দুধ নষ্ট হয়ে যায়। আর তাই প্রথমেই দুধ ফ্রিজে রাখার ব্যবস্থা করুন। তবে দুধ কেনার আগে দেখে নেবেন এক্সপায়ারি ডেট। সেই সময়সীমার মধ্যেই অবশ্যই ব্যবহার করুন। এয়ার টাইট কন্টেনারে দুধ ঢেলে ওর মধ্যে কিছু আইস কিউব ফেলে দিন। এবার ডিপ ফ্রিজে রাখুন। এতে দুধ বেশ অনেকদিন ভাল থাকে।
*ফ্রিজের তাপমাত্রা এক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ৩২ থেকে ৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের মধ্যে যাতে তাপমাত্রা থাকে সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখুন। সেই সঙ্গে কখনই ফ্রিজেরপ দরজায় দুধের প্যারকেট রাখবেন না। কারণ ওখানে তাপমাত্রা কম থাকে।
*দুধের মধ্যে কয়েক চিমটি নুন ফেলে ফ্রিজে রাখুন। এতে দুধ অনেকদিন ভাল থাকে। দুধ ফোটানোর পরও মিশিয়ে দিতে পারেন। কিংবা কাঁচা দুধেও ফেলে দিতে পারেন এক চিমটি নুন।
*দুধ কেনার ৭ দিনের মধ্যে অবশ্যই তা ব্যবহার করুন। তার বেশি কিন্তু ফেলে রাখবেন না। এতে দুধ খারাপ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেই সঙ্গে তৈরি হয় ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াও। তাও দিন দিন পেরিয়ে গেলে আগে দুধের গন্ধ শুঁকে নিন। তারপর খান।
*যদি দেখেন যে দুধ কেটে যাচ্ছে তাহলে সেই দুধ ফেলে না দিয়ে তাকে নানা ভাবে কাজে লাগান। ছানা কাটিয়ে যেমন মিষ্টি বানিয়ে নিতে পারেন তেমনই কিন্তু দুধ দিয়ে মেয়োনিজ চিংবা চিজ বানাতে পারেন। তৈরি করে নিতে পারেন ঘিও।
*পাস্তুরাইজড দুধ কেনার চেষ্টা করুন। এই দুধ সহজে নষ্ট হয়ে যায় না। অনেকদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করে রাখা যায়। কিছু দুধ আছে য়া এক মাস পর্যন্ত ভাল থাকে। কিন্তু ফুল ফ্যাট মিল্ক মোটেও বেশিদিন পর্যন্ত ভাল থাকে না।
আরও পড়ুন: Kitchen hack: ছুরি দিয়ে নয়, আদা ছাড়ান এই অভিনব কায়দায়! উপকার অনেক…