সঙ্গীতের জগতে ফের নক্ষত্র পতন। প্রয়াত সুরকার এবং গায়ক (Music Composer and Singer) বাপ্পি লাহিড়ি (Bappi Lahiri)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। পিটিআই সূত্রে খবর, বুধবার মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। প্রায় পাঁচ দশক ধরে নিজের গানে নাচিয়ে গেছেন তিনি। বলিউডের ‘ডিস্কো বয়’ নামেই পরিচিত বাপ্পি লাহিড়ি তাঁর হাসিমুখ, সকলের সঙ্গে মিলেমিশে থাকার স্বভাবই সঙ্গীত জগৎ থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে তিনি জয়প্রিয় ছিলেন। আর মনে প্রাণে ছিলেন বাঙালি (Bengali)।
বাংলা গানের পাশাপাশি বাংলার খাওয়া-দাওয়া পছন্দ করতেন ‘ডিস্কো কিং’। বাপ্পি লাহিড়ীর স্মৃতিচারণায় জিৎ গঙ্গোপাধ্যায় TV9 বাংলাকে জানিয়েছেন, “যাঁরাই বাংলা থেকে মুম্বইয়ে গিয়েছেন, তাঁদের সকলকেই বাপ্পিদা বলতেন মনটা যেন বাংলাতেই আমাদের পড়ে থাকে। বাপ্পিদার প্রিয় খাবার ছিল মাছ।”
সপ্তাহে একদিন নিরামিষ খাবার খেতে ‘ডিস্কো কিং’। আমিষ খাবারের মধ্যে তাঁর সবচেয়ে প্রিয় মাছ। আগে রেড মিট খেতে ভালবাসেন তিনি। তারপর শারীরিক অসুস্থতার জন্য খাওয়া ছেড়ে দেন। তবে চিকেন স্যান্ডউইচ ছিল তাঁর প্রিয় সন্ধ্যের জলখাবার। সারাদিন যেমনই খাবার খান না কেন, রাতে বাঙালি খাবার তাঁর চাই।
দিনে একবার হলেও ভাত খেতেন তিনি। এমনকি রুটি থাকলেও মাছ ভাত খেতেই পছন্দ করতেন বাপ্পিদা। আর যেদিন নিরামিষ খেতেন, সেদিন পাতে থাকত আলু পোস্ত। এর পাশপাশি পটল ভাজা, বেগুন ভাজা খেতে ভালবাসতেন তিনি। আলুর দম এবং পাপড়ের তরকারি ছিল তাঁর অন্যতম প্রিয় খাবার। নিরামিষ খাবার হলেই এই খাবারের তালিকা ছিল তাঁর বাঁধাধরা।
মাছ ভালবাসলেও সামুদ্রিক মাছ খাওয়া পছন্দ করতেন না তিনি। নদীর মাছই বেশি খেতেন বাপ্পি লাহিড়ি। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, যখন তিনি কলকাতায় আসতেন অনুষ্ঠান করতে তাঁর প্লেট ভরা থাকে শুধুই মাছে। ইলিশ, রুই এবং ভেটকি খেতে ভালবাসতেন তিনি। কলকাতায় এলেই মাছ বেঁধে নিয়ে যেতেন মুম্বাইতে।
মুম্বাইতে বেশির ভাগ সামুদ্রিক মাছ পাওয়া যায়। তাই মুম্বাইতে তিনি চিতল মাছ খেতেন। চিতল মাছ নাকি সহজেই মুম্বাইতে পাওয়া যায়। তাঁর জন্য মশলা দিয়ে ভাল করে কষে রান্না করা হত চিতল মাছ। সর্ষের তেলে মাছ রান্না না হলে খেতেন না তিনি। তাই যে মাছই হোক তাঁর জন্য সর্ষে তেল দিয়ে রান্না করা হত।
বেগুন ভাজা আর লুচি ছিল তাঁর অন্যতম প্রিয় খাবার। এর সঙ্গে পাতে থাকত টমেটোর চাটনি। আলু, পটল ও লাউয়ের তরকারি বেশ পছন্দ করতেন তিনি। কিন্তু পনির খেতে ভালবাসতেন না বাপ্পি লাহিড়ি। এর বদলে ব্রেকফাস্টে খেতেন ছানা। আর মিষ্টির প্রতি তাঁর বিশেষ ভালবাসা ছিল। মিষ্টি দই, রাবড়ি এবং সন্দেশ খেতে বড়ই ভালবাসতেন তিনি। কিন্তু বয়সের কারণে এবং শারীরিক অসুস্থতা জনিত কারণে মিষ্টি খাওয়া ত্যাগ করতে হয় তাঁকে।
ভিক্টোরিয়ার সামনের ফুচকা খেতে ভালবাসতেন তিনি। দাঁড়িয়ে খাওয়ার সুযোগ তো ছিল না ‘ডিস্কো কিং’-এর, তাই বাড়িতেই আয়োজন করা হত সেই ফুচকার। এর পাশাপাশি ঝাল মুড়ি আর তেল ভাজা খেতে ভালবাসতেন বাপ্পি লাহিড়ি। আর আজ সেই জনপ্রিয় সুরকার এবং গায়কের এ হেন আকস্মিক মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বাংলা তথা গোটা দেশ।
আরও পড়ুন: লতাজির প্রিয় ছিল ধনে মটন কারি! স্পেশাল দিনে বাড়িতে বানান এই স্পেশাল ডিশ, রইল রেসিপি