শীতকালে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় অন্যান্য সময়ের তুলনায়। শুধু তাই নয়, এই সময় নানা ভাইরাস ঘটিত রোগের প্রকোপও থাকে অনেকটাই বেশি। যে কারণে শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই সকলকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। বাচ্চা থেকে বুড়ো সকলেই কিন্তু কাহিল হয়ে পড়েন এই সময়ে। চটজলদি ঠান্ডা লেগে যায়।
শুধু তাই নয়, করোনা এখনও আমাদের দেশ থেকে বিদায় নেয়নি। ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে করোনা। সঙ্গে যোগ হয়েছে ওমিক্রনের প্রভাব। ওমিক্রনের হাত ধরেই ভারতে প্রবেশ করবে করোনার তৃতীয় ঢেউ এমনটাও জানাচ্ছেন অনেক চিকিৎসক। প্রতি বছরই শীতের সময় থেকে বাড়ছে করোনার প্রকোপ। পরিস্থিতি অন্য সময়ের তুলনায় এই সময় বেশি জটিল হয়ে ওঠে। এছাড়াও নানা সংক্রমণ, জ্বর-সর্দি থেকে হার্টের সমস্যা সবটাই বাড়ে কিন্তু এই সময়েই। এমন পরিস্থিতি এড়িয়ে চলতে নিজেকে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতেই হবে। সব সময় এমন নয় যে, সতর্কতা অবলম্বন করলেই আপনার যাবতীয় সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
প্রয়োজন না হলেও শীতে ইষদুষ্ণ গরম জলে স্নান করা অভ্যাস করুন। এছাড়াও যাতে শরীর গরম না হয়ে যায় সেই দিকেও অবশ্যই খেয়াল রাখুন। ঠান্ডা-কফ-কাশি থেকে দূরে থাকুন। সেই সঙ্গে অনেকটা সময় খালি পেটে থাকবেন না। বরং স্বাস্থ্যকর খাবার খান। শীতে ডায়েট কিন্তু খুবই জরুরি। এই সময় পাটালি, নতুন গুড়-সহ নানা রকম শাকসবজি পাওয়া যায় বাজারে। আর সেই সবই রাখুন খাদ্য তালিকায়। সকালে উঠে এক গ্লাস মেথি ভেজানো জল খান। তিল খান। কারণ তিলের প্রচুর উপকারিতা রয়েছে। ভাতের সঙ্গে তিল বেটে খেতে পারেন। এছাড়াও গুড় দিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন তিলের নাড়ু। তিলের নাড়ু লক্ষ্মী পুজোয় প্রসাদ হিসেবে দেওয়া হয়। আর তাই সকলে খেতেও ভালবাসেন এই নাড়ু। এই নাড়ু বানানোর সময় যদি শুকনো আদার পাউডার মেশাতে পারেন তাহলে আরও ভাল।
এই নাড়ুর উপকারিতার জন্যই বিখ্যাত পুষ্টিবিদ রুজুতা দিবাকর তিলের নাড়ুকে রাখতে বলছেন আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায়। মিষ্টি খেতে সকলেই পছন্দ করেন। কিন্তু যাঁরা স্বাস্থ্যসচেতন বা যাঁদের ডায়াবিটিস রয়েছে তাঁরা কিন্তু এড়িয়ে চলেন মিষ্টি। কিন্তু বাড়িতে বানানো এই গুড়-তিলের নাড়ু নির্ভয়ে খেতে পারেন তাঁরাও। মহারাষ্ট্রে সংক্রান্তির সময় বানানো হয় বিশেষ এই নাড়ু। এছাড়াও মকর সংক্রান্তিতে পশ্চিমবঙ্গেও বানানো হয় বিভিন্ন ধরনের নাড়ু। এই তিল আর গুড় দুটোই কিন্তু শীতের মরশুমে আমাদের শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।
কেন শীতে খাবেন এই নাড়ু
তিলের মধ্যে যে তেল থাকে তা আমাদের শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও তিলে উপস্থিত থাকে একরকম অসম্পৃক্ত ফ্যাট। যা আমাদের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও তিলের বীজে প্রোটিন, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম থাকে। যা হাড় মজবুত রাখে। সেই সঙ্গে শীতে চুল আর ত্বককেও ভাল রাখে। তিল আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ আয়রন সরবরাহ করে।
যে কারণে অ্যামিনিয়ার মত সমস্যা থেকেও রেহাই পাওয়া যায়। তবে গুড় কিন্তু অতিরিক্তও খাবেন না। এতে যেমন রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়বে তেমনই কোষ্ঠকাঠিন্যের সম্ভাবনাও বাড়বে। যা শীতে খুবই কষ্টদায়ক। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই গুড় খান।
আরও পড়ুন: Orange Ginger tea: শীতের বিকেলের চায়ে হোক একটু ইনফিউশন! বানিয়ে ফেলুন কমলালেবু-আদার চা, উপকারিতা অনেক