ঘরের দরজা-জানলা বন্ধ করে খুব গোপনে সরভাজা তৈরির পাক তৈরি হত। এটাই রীতি। কারণ, মিষ্টি তৈরির এই গোপন পদ্ধতি যেন ফাঁস না হয়ে যায়। কথিত রয়েছে, মাছির ঝাঁক তখন ঘিরে ধরত অধরচন্দ্র দাসের বাড়ি। কৃষ্ণনগরের বিখ্যাত সরপুরিয়া ও সরভাজা তখন তৈরি হচ্ছিল তার সেই ঘরে। সরভাজা হল কৃষ্ণনগরের একটি বিখ্যাত মিষ্টি। দুধের সর ও ঘি দিয়ে তৈরি এই মিষ্টির সুনাম বাংলা তথা ভারতীয় উপমহাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। দুর্গাপুজো, কালীপুজোয় যেমন ভোগ, আমিষ খাওয়া রেওয়াজ, তেমনই জগদ্ধাত্রী পুজো মানেই হরেক রকম মিষ্টি আর কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোতে সরভাজা চাহিদা অন্য সময়ের থেকে বেশি থাকে।
এই মিষ্টি কিন্তু খুব বেশি প্রাচীন নয়। মাত্র একশো বছর আগের কথা। তখনই এই মিষ্টিকে ঘিরে কৃষ্ণনগরের আরও একটি পরিচয় তৈরি হচ্ছিল আস্তে আস্তে। তারপরে সেই মিষ্টি সত্যিই কৃষ্ণনগরের বৈশিষ্ট্য হয়ে ওঠে। মাটির পুতুল, জগদ্ধাত্রী পুজো, মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের পরিবারের কথার সঙ্গে সঙ্গে সরপুরিয়া, সরভাজার কথাও ছড়িয়ে পড়ছিল।
কী কী লাগবে
রভাজা তৈরি করতে প্রয়োজন হয় ময়দা, দুধের সর, চিনি (গুঁড়ো করা), দুধ, বেকিং পাউডার, ঘি এবং মেওয়া।
সরভাজার রস তৈরিতে ব্যবহার করা হয় চিনি, জল, দারচিনি, এলাচ।
কীভাবে করবেন-
প্রথমে জলের মধ্যে চিনি, দারচিনি ও এলাচ দিয়ে ফুটিয়ে ঘন রস তৈরি করা হয়। ময়দা, বেকিং পাউডার, গুঁড়ো চিনি, সামান্য নুন, দুধের সর, ঘি ও মেওয়া একসঙ্গে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ প্রস্তুত করতে হয়। এর পর অল্প অল্প করে দুধ দিয়ে এই মিশ্রণ ভাল করে মেখে চাপা দিয়ে ১ ঘণ্টা রেখে দিতে হয়। মাখা থেকে ১/২ ইঞ্চি পুরু করে রুটি তৈরি করতে হয়। এবারে চৌকো চৌকো করে কেটে নিয়ে ডুবোতেলে বাদামি করে ভেজে নিয়ে গরম রসে ডুবান হয়। অন্তত ২-৩ ঘণ্টা রসে ফেলে রাখা হয়।
তথ্য সৌজন্যে- উইকিপিডিয়া