আপনি যদি ভারতীয় হন তাহলে অবশ্যই রান্নাঘরে দইয়ের ভূমিকা সম্পর্কে অবগত হবেন। দইয়ের যে একাধিক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে তা বলা বাহুল্য। কিন্তু ভারতীয় রান্নাঘরে মশলাদার চিকেন হোক বা কোন মিষ্টান্ন বেশিরভাগ পদেই ব্যবহার করা হয় দই। পূর্বের রাজ্য গুলিতে যেমন মিষ্টি দই জনপ্রিয়, তেমনি আরেকটি মিষ্টান্ন হল শ্রীখণ্ড।
মহারাষ্ট্র এবং গুজরাটের প্রায় প্রতিটি ঘরে তৈরি করা হয় এই শ্রীখণ্ড। কিন্তু এই মিষ্টান্নের জন্ম কবে আর কীভাবেই বা পরিচিত পেল এই শ্রীখণ্ড তা পুরোপুরি জানা যায়নি। ‘দ্য হিস্টোরিক্যাল ডিকশেনারি অফ ইন্ডিয়ান ফুড’ নামক বইয়ে উল্লেখ আছে যে এই শ্রীখণ্ড গুজরাটি খাবারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আছে প্রায় ৫০০ খ্রিষ্টপূর্ব থেকে।
অন্যদিকে, ‘ইন্ডিয়ান ফুড: অ্যা হিস্টোরিক্যাল কম্প্যানিয়ন’ নামক বই থেকে জানা গিয়েছে যে, ১০২৫ খ্রিষ্টপূর্ব পর্যন্ত কন্নড় খাদ্যে শ্রীখণ্ডের উল্লেখ করা হয়েছিল। সেখানে আরও উল্লেখ রয়েছে যে, পারস্যের থেকে নাকি এই খাবার ভারতে এসেছিল। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে যে, এই মিষ্টির ইতিহাস নিয়ে বেশ দ্বন্ধ রয়েছে। তবে এটাও বোঝা যাচ্ছে যে, এই খাবার আজকের তৈরি নয়।
এই শ্রীখণ্ড হল প্রাচীনকালের শিখরিনী বা শিখরিনির আধুনিক সংস্করণ, যা সেই সময় থেকেই সমগ্র গুজরাট এবং মহারাষ্ট্রের খাদ্যতালিকায় রয়েছে। তবে শ্রীখণ্ড এবং শিখরিনীর রেসিপি মোটামুটি ভাবে একই। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক, বাড়িতে কীভাবে তৈরি করবেন এই শ্রীখণ্ড।
শ্রীখণ্ড বানানোর জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণগুলি হল-
১ কেজি টক দই (প্রয়োজনে আপনি বাড়িতেও পেতে নিতে পারেন এই দই)
৪ থেকে ৫ চামচ গুঁড়ো করা চিনি
১ ছোট চামচ জাফরান, আগে দুধে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখবেন এই জাফরান
২ চামচ এলাচ গুঁড়ো
অল্প পরিমাণ ফায়ফল গুঁড়ো
গার্নিশের জন্য প্রয়োজন কাজু, আমন্ড ও পেস্তা
রন্ধনপ্রণালী
দইটিকে ভাল করে ফেটিয়ে পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টার জন্য ফ্রিজে রেখে দিন। এটি যথেষ্ট ঘন হবে। এরপর একটি মসলিন কাপড়ের ওপর দইটিকে রাখুন। তারপর সেটিকে কোথাও ঝুলিয়ে দিন। দইয়ের জল সংগ্রহ করার জন্য নিচে একটি বাটি রাখুন। এরপর আবার ওই কাপড়ের ওপর একটি ভারী জাতীয় কিছু বা নোড়া রেখে দিন, যাতে দই থেকে সমস্ত জল বেড়িয়ে যায়।
ঘন পনিরের মত দই পাওয়া জন্য ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা দইটিকে ফ্রিজে রাখুন। এরপর ওই দইয়ের সঙ্গে জাফরান ভেজানো দুধ, এলাচ গুঁড়ো, চিনি এবং জায়ফল পাউডার যোগ করে ভাল করে মিশিয়ে নিন। এরপর একটি পাত্রে এই শ্রীখণ্ডকে কাজু, আমন্ড ও পেস্তার সংমিশ্রণ দিয়ে পরিবেশন করুন।
আরও পড়ুন: রান্না পুজোয় খেসারির ডাল-কচু-নারকেল ভাজার সঙ্গে ইলিশ মাস্ট! রইল স্পেশাল একটি রেসিপি