Relationship: কোন ডেট নিছক টাইম-পাস, কোনটাই বা সিরিয়াস? জেনে নিন হুক-আপের কী, কেন
Hook-up: কেউ সম্পর্কের দায়বদ্ধতাহীন যৌন আনন্দ উপভোগ করতে চান। সে দিক থেকে তাঁর পক্ষে কারও সঙ্গে এক বা একাধিকবার শুধুই যৌনতায় লিপ্ত হওয়া অস্বাভাবিক নয়

দিয়া-অর্ণবের প্রেম বছর পাঁচেকের। কলেজ থেকেই আলাপ। পরবর্তীতে কর্মসূত্রে দু’জন আলাদা শহরের বাসিন্দা হলেও প্রেম ছিল অটুট। কোথাও কোনও সমস্যা ছিল না। কাজের প্রয়োজনে বছর দুয়েক পর দেশছাড়া হয় অর্ণব। তার কিছুদিন পর দিয়াও পাড়ি জমায় অন্য দেশে। মাঝে বেশ কয়েকমাস লকডাউনের কারণে তাদের দেখা সাক্ষাৎও হয়নি। ভরসা ছিল ভিডিয়ো কল, স্কাইপ, চ্যাট। সমস্যার সূত্রপাত এখান থেকেই। খুব ছোটখাটো বিষয় নিয়েও ঝামেলা শুরু হল ওদের মধ্যে। যা আগে প্রায় ছিল না বললেই চলে। তবে ঝামেলা যে টানা চলত তা নয়, কিছুদিন পর তা মিটেও যেত।
যে কোনও সম্পর্কেই ঝামেলা-ঝগড়া-টানাপোড়েন চলতে থাকে। ওদেরও ঠিক তাই। তবে ঝামেলা থেকে দূরে থাকতে দিয়া ওর নিজের মতো চলত। কখনও যেত ট্রেকিংয়ে, আবার কখনও একাই চলে যেত উইকেন্ড পার্টিতে। দিয়ার নতুন কিছু বন্ধু হল। সেই সঙ্গে ওর নিজের দৃষ্টিভঙ্গিতেও বেশ কিছু পরিবর্তন আসে। নিজের কেরিয়ার, নিজের জীবন নিয়ে অন্যরকম ভাবনা শুরু করে সে। শুরু করে ক্যাজুয়াল ডেটিংও। এক কথায় হুক-আপ অর্থাৎ ক্ষণিকের প্রেমে কাছে আসা। কিছুটা সময় একসঙ্গে কাটানো, একসঙ্গে সেক্স উপভোগ করা। ব্যাপারটা এই পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকে। নতুন বন্ধুর সঙ্গে হুক আপ কখন যে সিরিয়াস রিলেশনশিপ হয়ে গেল তা নিজেও বুঝতে পারল না দিয়া।
হতেই পারে, কেউ সম্পর্কের দায়বদ্ধতাহীন যৌন আনন্দ উপভোগ করতে চান। সে দিক থেকে তাঁর পক্ষে কারও সঙ্গে এক বা একাধিকবার শুধুই যৌনতায় লিপ্ত হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এ ক্ষেত্রে সেই ব্যক্তির কাছে ভালবাসা প্রত্যাশা করা অর্থহীন! কিন্তু সেই ভালবাসা যখন সম্পর্কের রূপ নেয়, তখন তার আগে বেশ কিছু ঘটনা পিছু পিছু চলতে থাকে।
মানুষের মন বড়ই জটিল। কিছুতেই তা পড়া যায় না। সময় এবং পরিস্থিতি ভেদে মনে একাধিক পরিবর্তন আসে। কিছু ক্ষেত্রে সেই পরিবর্তন মন থেকে চাইলেও তা খুলে বলা যায় না। সেক্ষেত্রে জীবন কিছু ইঙ্গিত দেয়। ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টরা বলেন, এরকম সমস্যা নিয়ে অনেকেই আসেন। তাঁরা মনে করেন অন্যদিকে যিনি আছেন ( নারী/পুরুষ) তাঁকে মন থেকে চাইছেন, কিন্তু বলতে পারছেননা। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কাউকে দেখানোর জন্য নয় কিংবা প্রতিযোগিতা থেকেও নয়। মন খুলেই মিশতে পারেন। চাহিদার কথাও সরাসরি বলুন।

সাধারণ টেক্সট যখন যৌনতারই ইঙ্গিত দেয়, তখন বুঝতে হবে বিষয়টি অন্য দিকে যাচ্ছে। আর এই ধরনের দু’টি টেক্সটের ব্যবধান যদি কমে যায়, তখন ধরে নিতে হবে, বিষয়টি আর শুধুমাত্র আর হুক-আপ নয়, গভীর। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, এক্ষেত্রে প্রথম থেকেই খোলামেলা হওয়া ভাল। লেনদেন যখন শুধুমাত্র সেক্সের, তখন তার মধ্যে বেশি মারপ্যাঁচ খোঁজার দরকার নেই। বরং যৌন-চাহিদার মধ্যে যাতে সামঞ্জস্য থাকে, সেদিকে নজর রাখুন। তবে যৌনতার পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়ও বিবেচনা করুন। নইলে অশান্তি হতে বাধ্য।
যে কোনও মিট-আপ মানেই কিন্তু হুক-আপ নয়। একবার হুক-আপের পর তাঁর সঙ্গে আপনার বন্ধুত্ব ভাল হতেই পারে। একসঙ্গে সিনেমা দেখতে যেতে পারেন, যেতে পারেন কফি-ডেটেও। একবার কফি ডেটে যাওয়া মানেই যে তিনি আপনার সঙ্গে সম্পর্কে লিপ্ত হতে চাইছেন, এমনটা নয়। শরীরের চাহিদা মেটাতে একাধিকবার সেক্সও করতে পারেন। কিন্তু ব্যাপারটা যদি অন্যদিকে যায় অর্থাৎ একে অন্যকে সময় দিচ্ছেন, দু’জন-দু’জনের কথা শুনছেন, একে-অপরকে বুঝছেন, তাহলে হুক-আপ এবার স্থায়ী সম্পর্কের দিকেই গড়াচ্ছে।

মনের মিল থাকলে তবেই সেক্স উপভোগ্য হয়। মানসিক স্বাচ্ছন্দ্য ছাড়া যৌনতা কোনও সুস্থ ভাবনা নয়। সম্পর্কের একঘেয়েমি থেকে মুক্তি পেতে অনেকে হুক-আপ করেন। আবার এমনও কিছু মানুষ আছেন যাঁদের কাছে হুক-আপ সেক্সও একঘেয়ে হয়ে যায়। হুক-আপে অভ্যস্ত মেয়েরা যেমন বলছেন, যখন ছেলেরা সেক্সের সময় তাঁদের দুর্বল দিকটি প্রকাশ করে ফেলেন তখন তার অর্থ এই রকম দাঁড়ায় যে তাঁরা এবার স্থায়ী-সম্পর্কে যেতে চাইছেন। তা-ই বিশ্বাস এবং স্বচ্ছতা থাকলে তবেই সম্পর্কের দিকে পা বাড়ান।
