করোনার জেরে দীর্ঘদিন ধরেই মানুষ বদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে চেয়েছে। সংক্রমণ নিম্নমুখী হতে মানুষ শান্তির খোঁজে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়েছেন। তবে ভারতের পর্যটনের সঠিক মরসুম শুরু হয় সেপ্টেম্বর- অক্টোবর থেকে। কারণ এই মরসুমে দেশের আবহাওয়া অত্যন্ত মনোরম ও ঠান্ডার আমেজ থাকে। এই আবহাওয়া প্রায় এপ্রিল পর্যন্ত স্থায়ী থাকে। অক্টোবরে ভ্রমণকারীরা ভারতে প্রিয় পর্যটন কেন্দ্রগুলি পরিদর্শন শুরু করে। তাই এই ভরা মরসুমে দেশের কোন কোন জায়গায় ঘুরতে গেলে আপনি লাভবান হবেন, তার সন্ধান দেওয়া রইল এখানে…
কলকাতা
অক্টোবর মাস থেকে তিলোত্তমা শহর একেবারে অন্যরকমভাবে সেজে ওঠে। দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে অক্টোবর মাসটি কলকাতার মানুষজনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন। দেবী দূর্গাকে স্বাগত জানিয়ে গোটা শহর আলোয় সেজে ওঠে। ৪দিন ধরে পুজো চললেও একসপ্তাহের বেশি সময় ধরে বাঙালির প্রাণের এই উত্সব চলে। প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে টাকুর দেখা, ভরপুর পেটপুজো চলে দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে। অক্টোবরে কলকাতায় গেলে আপনি বার বার এই শহরের প্রেমে পড়বেন।
হাম্পি
কর্ণাটকের হাম্পি একটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তালিকাভুক্ত শহর। যেখানে বিজয়নগর রাজ্যের বাড়ি, মন্দির. স্মৃতিস্তম্ভ ও প্রাচীন ভারতীয় স্থাপত্যের ধ্বংসাবশেষের জন্য জনপ্রিয়। হিন্দু স্থাপত্যশৈলী দিয়ে তৈরি এই ঐতিহাসিক ভবনগুলো একটি আকর্ষণীয় নিদর্শন। হাম্পির অন্যতম জনপ্রিয় মন্দির হব বিরুপাক্ষ মন্দির। এই মন্দিরটি রাজ্যের পৃষ্ঠপোষক দেবতার উদ্দেশ্যে নিবেদিত।
আগ্রা
পৃথিবীর সাত বিস্ময়ের মধ্যে একটি হল তাজমহল। আগ্রায় যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত, যা বিশ্বের প্রতিটি ভ্রমণকারীর কাছেই আকর্ষণীয়। মোঘল সাম্রাজ্যের এক অপরূপ সৌন্দর্যের প্রতীক ও প্রেমের প্রতীকের সাক্ষী থাকার অভিজ্ঞতা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। বিস্ময়কর কারুকার্য. কাঠামো প্রত্যেক পর্যটককে মুগ্ধ করে। এছাড়া শহরের আশেপাশে মুঘল স্থাপত্যের নিদর্শন দেখতে পাবেন। আর এই বিস্ময়কর ও আকর্ষনীয় নিদর্শন দেখার সেরা সময় হল অক্টোবর।
ঋষিকেশ
ভারতের অন্যতম নৈসর্গিক পার্বত্য পর্যটন কেন্দ্র হল ঋষিকেশ। দর্শনীয় ও রোমাঞ্চকর-উভয়ের জন্যই অক্টোবর হল ঋষিকেশের অন্যতম আকর্ষণ। গঙ্গার দুইধারে সুন্দর ঘাট, মন্দির ও জনপ্রিয় রামঝুলা ও লক্ষ্মণ ঝুলা বাড়ি দেখার জন্য প্রতিবছর এই সময় পর্যটকের ভিড় হয়। ভারতের এই পবিত্র শহরকে বিশ্বের যোগব্যায়ামের রাজধানী বলা হয়। এখানে হোয়াইট লিভার রাফটিং, ক্যাম্পিং, ব্যাঙ্গি জাম্পিং ও গঙ্গা নদীর তীরে জিপ লাইনিংয়ের মতো অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের জন্য আদর্শ জায়গা।
পাঁচমারী
ভারতের অন্যতম আকর্ষমীয় একটি ডেস্টিনেশন। মধ্যপ্রদেশের পাঁচমারীকে আদর করে সাতপুরা কি রাণী বলা হয়। হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, নির্বাসনের পর পাণ্ডবরা পাঁচমারীর পাহাড়ে বসবাস শুরু করেন। ব্রিটিশ অফিসার ক্যাপ্টেন জেমস ফরিস্ত ১৮৫৫ সালে এই নৈসর্গিক এলাকা আবিষ্কাপ করে ও তারপর থেকে এই জায়াগার পাহাড়ি সৌন্দর্য দেখার জন্য ভিড় করেন পর্যটকরা।
দার্জিলিং
সারা বছর ধরেই দুর-দূরান্ত থেকে পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু এই দার্জিলিং। পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং ভারতের পার্বত্য পর্যটন কেন্দ্রগুলির মধ্যে বিবেচিত। অক্টোবরে এই ছোট্ট পার্বত্য শহরে মনোরম আবহাওয়া বিরাজ করে। রোডোডেনড্রন, অর্কিড, পাইন ও চা বাগান এবং কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতের সৌন্দর্য প্রত্যেক পর্যটকের হৃদয় জিতে নেয়।
আরও পড়ুন: Zanskar Festival: পর্যটন শিল্পে আশা দেখছে লাদাখ! পালিত হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী জাঁস্কর উত্সব