Ziro Valley: দার্জিলিং-সিকিম ছেড়ে পাড়ি দিন জিরো ভ্যালিতে, সবুজে মোড়া গোটা উপত্যকা
Arunachal Pradesh: দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে এই অঞ্চলটি জনপ্রিয় 'জিরো মিউজিক ফেস্টিভ্যাল'-এর জন্য। পাহাড়ের উপর সবুজের মাঝে আয়োজিত হয় এই সঙ্গীতের অনুষ্ঠান। জিরো মিউজিক ফেস্টিভ্যাল ছাড়া আপনি যদি শুধু জিরো ভ্যালি ঘুরতে যান, তাহলেও নিরাশ হবেন না।
পাহাড় ভ্রমণের প্রসঙ্গ এলেই বাঙালি বেছে নেয় দার্জিলিং-সিকিমকে। বাজেট বেশি থাকলে হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড কিংবা কাশ্মীরও থাকে লিস্টে। আবার হাওয়া-বদল করতে অনেকেই পাড়ি দেন মেঘালয় কিংবা কেরল। ট্যুরিজমের দিক দিয়ে অনেকটা পিছিয়ে অরুণাচল প্রদেশ। কিন্তু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক থেকে একটুও পিছিয়ে নেই উত্তর-পূর্ব ভারতের এই রাজ্য। তাওয়াং, দিরাং, সেলা পাস, তেজুর মতো বিভিন্ন পাহাড়ি শহর ঘুরতে দেখতে পারেন এই রাজ্যে। তবে, আসল সৌন্দর্য লুকিয়ে রয়েছে জিরো ভ্যালিতে। ঘন পাইনের জঙ্গল, বাঁশ বাগানের ঘেরা পাহাড়ি রাস্তা, ধাপে ধাপে ধানের খেত আর আদিবাসীদের জনজীবন নিয়ে জিরো ভ্যালি।
বাজেট কম এবং হাতে ছুটিও বেশিদিনের না থাকলে ঘুরে দেখতে পারেন অরুণাচল প্রদেশের জিরো উপত্যকা। ইটানগর শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জিরো ভ্যালি। দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে এই অঞ্চলটি জনপ্রিয় ‘জিরো মিউজিক ফেস্টিভ্যাল’-এর জন্য। পাহাড়ের উপর সবুজের মাঝে আয়োজিত হয় এই সঙ্গীতের অনুষ্ঠান। স্থানীয় ব্যান্ডই বেশি অংশগ্রহণ করে এই অনুষ্ঠানে। থাকেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গীতশিল্পীরাও। টানা ৪ দিন ধরে চলে গান, হইহুলোড়। প্রতি বছর সেপ্টেম্বরের শেষে এই জিরো মিউজিক ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত হয়।
জিরো মিউজিক ফেস্টিভ্যালকে কেন্দ্র করেই অনেকেই ঘুরতে আসেন এখানে। তবে, আপনি যদি শুধু জিরো ভ্যালি ঘুরতে যান, তাহলেও নিরাশ হবেন না। পুরো উপত্যকা জুড়ে রয়েছে অজস্র ছোট বড় পাহাড়। সবুজ গালিচার মতো সাজানো গোটা উপত্যকা। রয়েছে পাইনের জঙ্গলও। রডোডেনড্রন, পাইন, বাঁশ, ফার্ন, ফারের সমাহার। এই উপত্যকায় রয়েছে ট্যালি ভ্যালি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। প্রায় ৩৩৭ স্কোয়ার কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। এখানের জীববৈচিত্র্যও আকর্ষণীয়। এখানে ৩০০টি প্রজাতির পাখি এবং ১৭০ প্রজাতির প্রজাপতির বাস।
এই উপত্যকার বাসিন্দারা হলেন আদিবাসী আপাতানি সম্প্রদায়ের মানুষ। এঁরা আজও ঐতিহ্য মেনে মুখে উল্কি আঁকেন। মূল জীবিকা চাষবাস। তাই এখানে গ্রামের পর গ্রাম দেখতে পাবেন পাহাড়ের ধাপে-ধাপে চাষজমি। এছাড়াও এখানে মাছ চাষও করা হয়। জিরো উপত্যকার গ্রামগুলো ঘুরে দেখার পাশাপাশি যেতে পারেন মেঘনা কেভ মন্দির, কিলে পাখো, জিরো পুতো ইত্যাদি জায়গায়।
জিরো মিউজিক ফেস্টিভ্যাল উপলক্ষে বেশিরভাগ মানুষ সেপ্টেম্বরেই ভিড় করেন এই উপত্যকায়। তবে, এপ্রিল থেকে জুন মাস হল জিরো ঘুরে দেখার সেরা সময়। বিমানপথে জিরো ভ্যালি পৌঁছাতে গেলে আপনাকে নামতে হবে তেজপুর বিমানবন্দরে। তেজপুর থেকে জিরো প্রায় ২৬৬ কিলোমিটারের রাস্তা। আর জিরোর সবচেয়ে কাছের রেলস্টেশন হল নাহারালাগুন। আবার সড়কপথে গুয়াহাটি থেকেও জিরো পৌঁছাতে পারেন। প্রায় ৪৭০ কিলোমিটারের পথ। জাতীয় সড়ক পথ ২৭ এবং ১৫ ধরে গেলে সময় লাগবে প্রায় ৭ ঘণ্টা।