AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Motorcycle Ride: মোটরসাইকেল ডায়েরিজ়: পঞ্চম পর্ব, কলকাতা থেকে মাত্র ৬০ কিলোমিটার দূরে রূপনারায়ণের তীরে বেনাপুর নদের ধারের সবুজ

Weekend Trip: এখানে রয়েছে পেঁজা তুলোর মতো মেঘের আনাগোনা, সারি দিয়ে নৌকা, ছোট-ছোট নৌকায় চড়ে আঞ্চলিক মানুষের মাছধরা, বিস্তীর্ণ সবুজ ঘাসের মাঝে-মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা বড়-বড় গাছের সমাহার, জোয়ারের সময় দেখা যায় এই নদের যৌবনের খেলা, আর এই দেউলটিতেই কথা-সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি থাকায় তার লেখার মধ্যে ছড়িয়ে রয়েছে এই জায়গার বর্ণনা।

Motorcycle Ride: মোটরসাইকেল ডায়েরিজ়: পঞ্চম পর্ব, কলকাতা থেকে মাত্র ৬০ কিলোমিটার দূরে রূপনারায়ণের তীরে বেনাপুর নদের ধারের সবুজ
| Edited By: | Updated on: Jun 04, 2023 | 9:59 AM
Share

মানব সভ্যতা হল নদীকেন্দ্রিক। প্রধানত নদীকে কেন্দ্র করেই আদিম যুগ থেকে মানুষ বসতি স্থাপন করে চলেছে। কোনও কিছু নির্মাণ, চাষাবাদ, জীবিকা, কলকারখানা, মানে এক কথায় সমস্ত জীব জগতের বেঁচে থাকার প্রধান উপাদান হল নদীর জল। তাই এই নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে একাধিক গ্রাম, শহর, বন্দর। আর প্রকৃতির এই অপরূপ সৌন্দর্য খুঁজে পাওয়া যায় এই নদীর তীরেই। তাই আমি মনে করি কোনও ভ্রমণপিপাসু মানুষ যদি বরফ গলা জলে পুষ্ট নদীর উৎস থেকে মোহনা পর্যন্ত ভাল করে ভ্রমণ করতে পারেন, তবে তাঁর অভিজ্ঞতা আর পাঁচটা মানুষের সম্পূর্ণ জীবদ্দশায় অর্জন করা ভ্রমণের অভিজ্ঞতার সমান। কারণ এই প্রধান নদীগুলো কখনও একাধিক হিমবাহ থেকে নির্গত হয়ে পাহাড় পেরিয়ে মালভূমি হয়ে সমভূমির গা বেয়ে সাগরে মিশেছে ফলে সে তৈরি করেছে একাধিক রূপ এবং বহন করে নিয়ে চলেছে নানা অভিজ্ঞতা।

তাই আজ চলুন কিছুটা সময় বের করে, সারা সপ্তাহের কর্ম-ক্লান্তি দূর করতে বেরিয়ে পড়ি এমন একটি নদের ধারে, যার রূপ দেখে সমস্ত সপ্তাহের ক্লেদ দূর হয়ে যাবে। চলুন আজ বেরিয়ে পড়ি বাইক নিয়ে কলকাতা থেকে মাত্র ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রূপনারায়ণের তীরে বেনাপুর নদের ধার নামে এক জায়গার উদ্দেশ্যে। এই জায়গাটি পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলার বাগনান ২ ব্লকের একটি গ্রাম। এই নদের ধারটি বিখ্যাত তার ভৌগোলিক অবস্থান এবং চমৎকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য। এই অঞ্চলটিতে রয়েছে রূপনারায়ণ নদের সব থেকে বড় সবুজে মোড়া পাড়। তার সঙ্গে এখানে রয়েছে বিস্তীর্ণ অকৃত্রিম সবুজে মোড়া গালিচা, যা দেখে সবুজ রঙের মরুভূমি বলে মনে হবে। আর এখানে রয়েছে পেঁজা তুলোর মতো মেঘের আনাগোনা, সারি দিয়ে নৌকা, ছোট-ছোট নৌকায় চড়ে আঞ্চলিক মানুষের মাছধরা, বিস্তীর্ণ সবুজ ঘাসের মাঝে-মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা বড়-বড় গাছের সমাহার, জোয়ারের সময় দেখা যায় এই নদের যৌবনের খেলা, আর এই দেউলটিতেই কথা-সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি থাকায় তার লেখার মধ্যে ছড়িয়ে রয়েছে এই জায়গার বর্ণনা।

রবিবার সকাল-সকাল ব্রেকফাস্ট করে বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন দেউলটির উদ্দেশ্যে যেখানে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি। সঙ্গে এক পিঠ-ব্যাগে নিয়ে নিন দরকারি কিছু জিনিস, কিছু শুকনো খাবার আর জল। সাঁতরাগাছিকে পিছনে ফেলে রেখে কিছুটা আগে গিয়ে বাঁ দিক নিয়ে নিন যে রাস্তা মুম্বই-কলকাতা হাইওয়ে নামে পরিচিত। সেই রাস্তা ধরে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার দূরে দেউলটিতে পৌঁছে যান। দেউলটির ক্রসিং থেকে ডান দিক নিয়ে সোজা চলে আসুন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির মূল ফটকে। বাড়িটি মাটি, কাঠ-ইট-বালি দিয়ে তৈরি একটি দোতলা বাড়ি। বাড়িটির চারপাশ সুন্দর রক্ষণাবেক্ষণ করা এবং নানা ধরনের গাছ লাগানো সবুজ একটা অংশ। এখানে দুলালচন্দ্র মান্না এবং প্রীতম নামে দুই যুবক আপনার গাইড—ভাল করে ঘুরে দেখাবে আশপাশ। দেখতে পাবেন লেখকের থাকার জায়গা, বসার ঘর, রাতে শোবার ঘর এবং খোলা বারান্দা। আর দেখতে পাবেন বাড়ির এক পাশে পাঁচিলের মধ্যে লেখকের স্ত্রী মেজ ভাই এবং স্বয়ং লেখকের সমাধি।

এখানে বেশ কিছুটা সময় কাটিয়ে তারপর বাইক নিয়ে সোজা চলে আসুন বেনাপুর রূপনারায়ণ নদের ধারে, যার দূরত্ব প্রায় ১৩ কিলোমিটার। এখানে অসাধারণ সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ যেমন বেনাপুর পিকনিক স্পট, বেনাপুর বিচ, প্রাণবল্লভপুর বিচ—যা আপনাকে প্রাণমুগ্ধ করবে। অসাধারণ সুন্দর রূপনারায়ণ নদীর বাঁকে গড়ে ওঠা এসব জায়গা আপনাকে ভাবাবেই। মনে হবে এ এক অচেনা পৃথিবী, যেখানে আছে শুধু সবুজ, নীল আকাশের মাঝে সাদা মেঘ আর নদীপ্রবাহের খামখেয়ালিপনা। এখানে কিছুটা সময় কাটালে আপনি বুঝতে পারবেন জোয়ার-ভাঁটায় জল কমা-বাড়ার নিয়ত খেলা। আবার এই নদের তীরে আপনি চাইলে নৌকাও চড়তে পারেন। এই অঞ্চলের অপরূপ সৌন্দর্যে আপনি বারবার ছবি তুলতে একপ্রকার বাধ্য হবেন বলা যেতে পারে। সেই সঙ্গে বাধ্য হবেন রূপনারায়ণ নদের পাড় দিয়ে অনেকটা পথ বাইক চালাতে। প্রায় ১৫ কিলোমিটার বাইক চালিয়ে বেনাপুর নদীর ধার থেকে চলে আসুন আম্বেরিয়া-তমলুক ফেরিঘাটে। এই ১৫ কিলোমিটার রাস্তায় আপনি দেখতে পাবেন ছোট-ছোট পার্ক, খেলার মাঠ এবং নদীর চর, যা গাঢ় সবুজে ঢাকা।

এরপর আপনি আম্বেরিয়া ফেরিঘাট থেকে লঞ্চে বাইক নিয়ে চলে আসুন তমলুক ফেরিঘাটে। তমলুক ফেরিঘাট থেকে কিছুটা দূরে রাস্তার উপরে একটি বাড়ির দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত তমলুক মিউজিয়াম। তমলুক মিউজিয়ামে দেখতে পাবেন আগেকার দিনের মানুষের পোশাক-আশাক, জীবিকা নির্বাহের সরঞ্জাম, পাথরের উপরে নানা ধরনের কলা-কৌশল, এখানকার রাজাদের অস্ত্রশস্ত্র। আর দেখবেন এখানকার মানুষের শিকার করা পশুর দেহাবশেষ, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃক ব্যবহৃত তথাকথিত ভারতীয় মুদ্রা। মিউজিয়ামে সময় কাটিয়েই চলে যান কিছুটা দূরে—তৎকালীন রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষ দেখতে। এই রাজবাড়িটি প্রায় ৫০০০ বছরের ইতিহাস বহন করে এসেছে। এই তমলুক রাজবাড়ি সম্রাট অশোক থেকে শুরু করে বৃটিশ শাসনাধীন ভারতের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই রাজবাড়ির উল্লেখ মহাভারতেও পাওয়া যায়। শোনা যায় এই রাজবাড়িটি ময়ূর বংশের অধীনে ছিল। ইতিহাসের এক সূত্রের মতে, গ্রীস থেকে একজন কারিগরকে নিয়ে আসা হয়েছিল এই রাজবাড়ির নির্মাণে। ১৯৩০ সালে লবণ সত্যাগ্রহের সময় এই রাজবাড়ির ভূমিকা ছিল বিশেষ। ১৯৩৮ সালে ১১ এপ্রিল নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু তমলুকে আসেন, আর এইখানেই তিনি সভা করেন। রাজবাড়িতে কিছুটা সময় কাটিয়ে সন্ধ্যেবেলা তমলুক থেকে কোলাঘাট হয়ে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দিন, যার দূরত্ব আনুমানিক ৮০ কিলোমিটার।

বড়দিনের আগের রাতে গির্জায় প্রার্থনাসভায় যোগ দিলেন মমতা
বড়দিনের আগের রাতে গির্জায় প্রার্থনাসভায় যোগ দিলেন মমতা
এবার বাংলাদেশে তৈরি হবে বিপ্লবী সরকার? ঢাকায় গুঞ্জন
এবার বাংলাদেশে তৈরি হবে বিপ্লবী সরকার? ঢাকায় গুঞ্জন
'ব্রাহ্মণের মেয়েকে' সরিয়ে বালিগঞ্জে নতুন মুখ আনলেন হুমায়ুন
'ব্রাহ্মণের মেয়েকে' সরিয়ে বালিগঞ্জে নতুন মুখ আনলেন হুমায়ুন
শুনানিতে যেতে না পারলে কী হবে? অকূলপাথারে বর্ধমানের মুখোপাধ্যায় পরিবার
শুনানিতে যেতে না পারলে কী হবে? অকূলপাথারে বর্ধমানের মুখোপাধ্যায় পরিবার
'এরা বাংলাকে বাংলাদেশ তৈরি করতে চাইছে...', তৃণমূলকে তোপ মিঠুনের
'এরা বাংলাকে বাংলাদেশ তৈরি করতে চাইছে...', তৃণমূলকে তোপ মিঠুনের
তৃণমূলকে এনেছিলাম, এবার বিজেপিকে আনব: শুভেন্দু
তৃণমূলকে এনেছিলাম, এবার বিজেপিকে আনব: শুভেন্দু
'বাবরি পাহারা দিচ্ছে পুলিশ...', বাংলা নিয়ে তোপ BJP নেতার
'বাবরি পাহারা দিচ্ছে পুলিশ...', বাংলা নিয়ে তোপ BJP নেতার
কারা হচ্ছেন মাইক্রো অবজার্ভার, উদ্দেশ্য কী?
কারা হচ্ছেন মাইক্রো অবজার্ভার, উদ্দেশ্য কী?
মদ্যপান, ছোট পোশাকে নাচ নাকি ব্রাহ্মণের মেয়ে বলে বাদ পড়লেন নিশা?
মদ্যপান, ছোট পোশাকে নাচ নাকি ব্রাহ্মণের মেয়ে বলে বাদ পড়লেন নিশা?
মেয়ে হারিয়েছেন, হাঁসখালিকাণ্ডে সাজা শুনে কী বললেন নির্যাতিতার মা?
মেয়ে হারিয়েছেন, হাঁসখালিকাণ্ডে সাজা শুনে কী বললেন নির্যাতিতার মা?