Monsoon Destination: ঝরনা-জঙ্গল-পাহাড়-নদীতে ঘেরা ওড়িশার ‘কাশ্মীর’, বর্ষায় বেছে নিন এই অফবিট
Odisha Travel: ওড়িশার এই শৈলশহর আপনি কম দিনের মধ্যে এবং অল্প খরচে ঘুরে নিতে পারবেন। এখানে চারদিকে শুধু সবুজ। সকালে ঘুম ভাঙবে পাখির ডাকে। পাহাড়ের গায়ে কান পাতলে শুনতে পাবেন চার্চের ঘণ্টার ধ্বনি। আর রয়েছে পাইন ও কফি গাছের সমাহার। আসল সৌন্দর্য লুকিয়ে নদী ও জলপ্রপাতে।
উত্তর ভারতে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। একই অবস্থা পশ্চিমঘাট পর্বতমালাতেও। যদিও উত্তর ভারতের পাহাড়ে বর্ষায় বেড়াতে না গেলেও, পশ্চিমঘাট যাওয়াই যায়। কিন্তু আপনার যদি বর্ষায় কাশ্মীর দেখার ইচ্ছা থাকে, তাহলে যেতে পারেন ওড়িশায়। তাও এক রাতের মধ্যে এবং কম খরচে। কথা হচ্ছে, ওড়িশার কাশ্মীর দারিংবাড়ি নিয়ে। আপনি যদি বর্ষায় দার্জিলিং, কালিম্পং বা সিকিম যেতে না চান এবং উত্তরাখণ্ড, হিমাচল আপনার বাজেটের বাইরে হলে, বেছে নিতে পারেন ওড়িশার দারিংবাড়িকে।
দারিংবাড়িয় বেড়াতে যাওয়ার সেরা সময় বর্ষাকাল। প্রতিবেশী রাজ্যে অবস্থিত হওয়ায় যেতেও কম লাগে। পাশাপাশি খরচও নামমাত্র। ওড়িশার শৈলশহর দারিংবাড়ি। ওড়িশার কন্ধমল জেলায় রয়েছে এই হিল স্টেশন। বেশিরভাগ পর্যটকদের কাছে এটি ‘ওড়িশার কাশ্মীর’ নামেই পরিচিত। শোনা যায়, এককালে এখানে বরফ পড়ত। এখন না তুষারপাত না হলেও জায়গার নাম ‘কাশ্মীর’ হয়েই রয়ে গিয়েছে। তবে, সারাবছরই এখানে আবহাওয়া মনোরম থাকে। বৃষ্টির দিনেও আপনাকে এখানে পাতলা চাদর চাপাতে হতে পারে।
দারিংবাড়ি পূর্বঘাট পর্বতমালার কোলে অবস্থিত। চারদিকে শুধু সবুজ। সকালে ঘুম ভাঙবে পাখির ডাকে। এখানকার বেশিরভাগ আদিবাসী খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষিত। শৈলশহরে রয়েছে গির্জাও। পাহাড়ের গায়ে কান পাতলে শুনতে পাবেন চার্চের ঘণ্টার ধ্বনি। তবে, দারিংবাড়ির আদিম জনজাতি হল কন্ধ। যদিও তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় তিন হাজার ফুট উচ্চতায় দারিংবাড়ি ঘেরা পাইন ও কফি গাছে। পূর্বঘাটে অবস্থিত হওয়ায় দারিংবাড়িতে রয়েছে মশলার বাগান। ঘুরে দেখতে পারেন কফি ও গোলমরিচের প্লানটেশন। পাহাড়ে ঘেরা এই ছোট্ট জনপদের সৌন্দর্য লুকিয়ে রয়েছে এখানকার জলপ্রপাতে। দারিংবাড়ি গেলে লুদু জলপ্রপাত, দারিংবাড়ি জলপ্রপাত, মড়ুবান্দা জলপ্রপাত, এবং পুটুদি জলপ্রপাত ঘুরে দেখতে ভুলবেন না। দারিংবাড়ির জঙ্গলের পথ ধরে পৌঁছাতে হবে এসব জলপ্রপাতে। এছাড়া হাঁটতে হাঁটতে যেতে পারেন ডোলুরি নদীর ধারে। পাইন বনের মধ্য দিয়ে সশব্দে বয়ে চলেছে সে। দারিংবাড়ি থেকে ঘুরতে যেতে পারেন লাভার্স পয়েন্ট, সাইলেন্ট ভ্যালি, হিল ভিউ পার্কে। দারিংবাড়ি থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে বেলঘর স্যাংচুয়ারি।
কীভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন-
কলকাতা থেকে সড়কপথে দারিংবাড়ির দূরত্ব প্রায় ৬৯০ কিলোমিটার। জাতীয় সড়ক ১৬ ধরে যেতে হবে। লং ড্রাইভের ইচ্ছা থাকলে যেতে পারেন কলকাতা থেকে সড়কপথে দারিংবাড়ি। এছাড়া হাওড়া থেকে ওড়িশাগামী যেকোনও ট্রেনে চেপে আপনাকে নামতে হবে বেরহামপুর। বেরহামপুর থেকে সড়কপথে দারিংবাড়ি ১২৫ কিলোমিটারের পথ। যদি গোপালপুর ঘুরে দারিংবাড়ি যেতে চান, সেক্ষেত্রে দূরত্ব ১৪০ কিলোমিটার। এখানে থাকার জন্য একাধিক হোটেল, বাংলো ও রিসোর্ট পেয়ে যাবেন। সেখানে থাকা-খাওয়া নিয়ে খরচ পড়তে পারে ১,৫০০ টাকা।