Jodhpur: ইতিহাস, ঐতিহ্য আর উজ্জ্বল দীপ্ত আজও বজায় রেখে চলেছে এই নীলের শহর
এক সময় বর্ণ ভেদ প্রথার কারণে নীল রঙ করা হয়েছিল বাড়িগুলোয়। আর আজ নীলের শহর নামে পরিচিত যোধপুর। প্রাচীন মারওয়াড় রাজ্যের রাজধানী ছিল এই যোধপুর।
এক সময় বর্ণ ভেদ প্রথার কারণে নীল রঙ করা হয়েছিল বাড়িগুলোয়। আর আজ নীলের শহর (Blue City) নামে পরিচিত যোধপুর (Jodhpur)। প্রাচীন মারওয়াড় রাজ্যের রাজধানী ছিল এই যোধপুর। অন্যদিকে রাজস্থান (Rajasthan) রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর যোধপুর। আর এই শহরের নজর কাড়া বৈশিষ্ট্য হল নীল রঙ। অন্যদিকে, মরুর দেশের প্রবেশদ্বার এই শহর।
রাজধানী জয়পুর থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই জাদুর শহর। জয়পুরের মতই এই শহরও এক বিশেষ ব্যক্তির প্রতিষ্ঠা করা। রাঠোর বংশের রাজপুত প্রধান রাও যোধা ১৪৫৯ সালে যোধপুর শহর প্রতিষ্ঠা করেন। যোধপুর থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত মান্ডোরের বাসিন্দা ছিলেন এই রাও যোধা। সেই সময় মান্ডোর ছিল রাজধানী, তারপর সেটি উন্নীত হয় যোধপুরে। আর এখন দেশের অন্যতম রঙিন শহর হিসাবে বিবেচিত হয় যোধপুর।
যোধপুরের নীল রঙ ছাড়াও এখানের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হল মেহরানগড় দূর্গ। যোধপুরের ঠিক মাঝখানে অবস্থিত, এই প্রাচীন দূর্গটি রাঠোর রাজপুত রাজা রাও যোধার আমলে নির্মিত হয়েছিল। যোধপুরকে তার নতুন রাজধানী করার পর তিনি ১৪৫৯ সালে নির্মাণ কাজ শুরু করেন। দেশের অন্যতম বৃহত্তম দুর্গ এটি। একটি উঁচু পাহাড়ের উপরে নির্মিত, মেহরানগড় নির্মাণের একটি বিস্ময়কর কৃতিত্ব। জানা যায়, নীল শহরের মানুষদের রক্ষা করার জন্য এই দূর্গ নির্মাণ করা হয়েছিল।
যদি যোধপুরের পর্যটন কেন্দ্রের খোঁজে থাকেন, তাহলে এই মেহরানগড়ের দুর্গই একটি বড়-সড় পর্যটন স্থান। দুর্গের প্রবেশদ্বারে সাতটি দরজা আছে। এগুলোকে বলা হয় বিজয় গেট, ফতেহ গেট, গোপাল গেট, ভৈরব গেট, দেধ কামরা গেট, মার্টি গেট এবং সবশেষে লোহা গেট। এছাড়াও রয়েছে উজ্জ্বল প্রাসাদ যেমন শিশ মহল এবং ফুল মহল আছে। এমনকি এই দুর্গের মধ্যে রয়েছে একটি জাদুঘর আর সেখানে ছয়টি ভিন্ন গ্যালারি রয়েছে- হাতির হাদাহ, পালানকুইন, দৌলত খানা, অস্ত্রাগার, পেইন্টিং এবং পাগড়ি গ্যালারি।
যোধপুরের আরও একটি আকর্ষণ হল উমেদভবন প্যালেস। শহরের শেষ প্রান্তে অবস্থিত চাত্তার হিলে ইতালীয় শৈলীতে তৈরি গোলাপী মর্মরের উমেদভবন প্যালেস। ১৯২৯ সালে মহারাজ উমেইদ সিং খরাগ্রস্ত প্রজাদের রোজগারের সুবিধার্থে এই প্যালেস নির্মাণ করেন। সেই সময় প্রায় ৩ হাজার প্রজা ১৩ বছর ধরে মেহনত করে গড়ে তুলেছিল এই প্যালেস। ৬৮০ ফুট লম্বা ও ৩৪০ ফুট চওড়া এই উমেদভবন এখন পরিণত হয়েছে বিলাসবহুল হোটেলে। এখানে রয়েছে ৩৪৭টি ঘর। আর এর আরেকটি অংশে রয়েছে জাদুঘর। সেখানে অনায়াসে যেতে পারবেন।
নীলের শহরে রয়েছে আরও একটি ঐতিহাসিক জায়গা তথা জাদুঘর যশোবন্ত ঠাডা। ১৮৯৯ সালে মহারাজা সর্দার সিং তাঁর পিতা মহারাজা যশোবন্ত সিংয়ের স্মরণে তৈরি করেন এই শ্বেতপাথরের স্মারকসৌধটি। ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সমৃদ্ধে ভরপুর এই নীলের শহর।
আরও পড়ুন: যুগ যুগ ধরে নিজস্ব ঐতিহ্য বহন করে চলেছে এই গোলাপি শহর!