Kalimpong: জীবনে স্ট্রেস বাড়ছে? দু’দিনের ছুটি নিয়ে মনসংয়ে রাত কাটিয়ে আসুন

Munsung: পাহাড়ি গ্রাম, কাঞ্চনজঙ্ঘা, তিস্তা, সিঙ্কোনা, ব্রিটিশ বাংলো আর নিস্তব্ধতা—সবকিছু একসঙ্গে পেতে গেলে একরাত আপনাকে মনসংয়ে কাটিয়ে যেতে হবে।

Kalimpong: জীবনে স্ট্রেস বাড়ছে? দু'দিনের ছুটি নিয়ে মনসংয়ে রাত কাটিয়ে আসুন
মনসং, কালিম্পং।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 22, 2023 | 11:51 AM

তিস্তার পাড়ে পাহাড়ি গ্রামে এখন সারাবছর পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। একটা লং উইকএন্ড পেলেই ব্যাগ গুছিয়ে বেড়িয়ে পড়ে বাঙালি। নিজের রাজ্যে এখন এত পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠেছে যে অন্য রাজ্যে পারি দেওয়ার কথা ভাবতে হয় না। এমনই একটি জায়গা হল মনসং। এই মনসং উত্তরবঙ্গেরই একটি পাহাড়ি গ্রাম। কিন্তু সেই অর্থে এখনও পর্যটনমহলে জনপ্রিয়তা পায়নি।

সেবক রোড ধরে এগিয়ে যান সিকিমের দিকে। তিস্তা রিভার রাফটিং পয়েন্ট ছাড়িয়ে কালিম্পংয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিন। কিন্তু যে রাস্তা কালিম্পং বাজারের দিকে উপরে উঠে যাচ্ছে, সেদিকে একদম যাবেন না। যেখান থেকে সিকিমের রংপো যাওয়ার রাস্তা চলে যাচ্ছে তার ঠিক আগেই আপনাকে থামতে হবে। এখান অবধি তিস্তা আপনার সঙ্গী হবে। এরপর ডান হাতের রাস্তা ধরে উপরে উঠতে হবে। ঘন সবুজ জঙ্গলের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। যত উপরে উঠবেন তিস্তার প্যানারমিক ভিউ দেখতে পাবেন। প্রায় ৪৫ মিনিট পর আসবে মনসং গ্রাম।

কালিম্পংয়ের ছোট্ট গ্রাম মনসং। ৫,০০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই গ্রামে বাড়ির সংখ্যা কিন্তু খুব কম। তবে, এই গ্রামের মানুষের আতিথেয়তা মনে রাখার মতো। আর গ্রামের সৌন্দর্যও নৈসর্গিক। চারিদিকে পাহাড় আর ঘন সবুজ জঙ্গল। মনসংয়ের একদিক থেকে স্পষ্ট দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা। শহুরে কোলাহল ছাড়িয়ে দু’দিনের জন্য বিশ্রাম নেওয়ার অনবদ্য ঠিকানা হতে পারে এই মনসং। এখানে ভোর হয় কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃশ্য আর হিমালয়ের পাখিদের কলরবে। একমাত্র আকাশ পরিষ্কার থাকলে তবেই কিন্তু কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা পাবেন। রাত হলেই এখানে শুধু ঝিঁ ঝিঁর ডাক। আর দূরে মিটমিট করে জ্বলতে থাকে পাহাড়ি গ্রামগুলো।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছাড়াও মনসং আর এক কারণে বেশ জনপ্রিয়। সিঙ্কোনা। যে গাছের ছাল থেকে ম্যালেরিয়ার ওষুধ কুইনাইন তৈরি করা হয়। উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে কুইনাইনের উৎস সিঙ্কোনা গাছের সম্ভার রয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে মনসংও। ১৯০১ সালে এখানে মনসং সিঙ্কোনা প্ল্যানটেশন স্থাপিত হয়। তখন এটি ছিল ব্রিটিশদের তত্ত্বাবোধনে। দেশ স্বাধীনের পর এর দখল নেয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার। একদিকে তিস্তা আর অন্যদিকে সিডারের জঙ্গল, মাঝে সিঙ্কোনা প্ল্যানটেশন। এই প্ল্যানটেশনের মধ্যে ব্রিটিশদের একটি বাংলো রয়েছে, যদিও সেটা তালাবন্ধ। এখন সেখানে খুব কম মানুষের আনাগোনা। রাত হলেই বন্যপ্রাণীর আস্তানা হয়ে যায়। তাছাড়া মনসংয়ে বিষাক্ত সাপ এবং জোঁকের ভয় সবচেয়ে বেশি।

নিরিবিলি পাহাড়ি গ্রাম, কাঞ্চনজঙ্ঘা, তিস্তা, সিঙ্কোনা, ব্রিটিশ বাংলো আর নিস্তব্ধতা—সবকিছু একসঙ্গে পেতে গেলে একরাত আপনাকে মনসংয়ে কাটিয়ে যেতে হবে। শীত কিংবা গ্রীষ্মের সময় আপনি মনসং আসতে পারেন। বর্ষার সময়টা এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে মাত্র ৯৫ কিলোমিটারের পথ মনসং। কালিম্পং ও ডেলো হয়েও আপনি আসতে পারেন। এখানে থাকার জন্য হাতেগোনা কয়েকটি হোমস্টে রয়েছে। থাকা-খাওয়া নিয়ে মাথাপিছু খরচ ১,৫০০ টাকা।