মধ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকার সরকার মিলিতভাবে মহাসাগরের মধ্যে একটি হাইওয়ে নির্মাণ করতে চাইছে। এই হাইওয়ে যোগসাধন ঘটাবে গালাপাগোস এবং কোস্টা রিকার মধ্যে। তবে এই হাইওয়ে তৈরি হবে না ভূমির ওপর। ব্রান্ড নিউ হাইওয়ে তৈরি হবে মহাসাগরের গভীরে। এখানেই শেষ নয়। হাইওয়ে কিন্তু মানুষের জন্য তৈরি হচ্ছে না মোটেই। বরং সেখানে বিচরণ করবে সামুদ্রিক প্রাণী আর রংবেরঙের মাছের দল।
নতুন এই গালাপাগোস সামুদ্রিক জীব সংরক্ষণাগার তৈরির উদ্দেশ্যে ইকুয়েডরের প্রধানমন্ত্রী গুইলেরমো ল্যাসো একটি আদেশনামায় সই করেছেন। সূত্রের খবর অনুসারে, দ্বীপপুঞ্জে সামুদ্রিক জীব সংরক্ষণাগারটির এলাকা প্রায় ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে সংরক্ষণাগারটির আয়তন ৫১ হাজার ৩৫১ বর্গমাইল থেকে বৃদ্ধি হয়ে হবে ৭৪,৫১৭ বর্গমাইল। ইকুয়েডরের প্রধানমন্ত্রী গুইলেরমো ল্যাসো জানিয়েছেন, ‘মানব ইতিহাসে এমন অনেক জায়গা রয়েছে যেখানে মানবজাতি তার মনুষ্যত্বের চিহ্ন রেখে গিয়েছে। আজ, আমরাও তেমনই একটি গৌরবময় কাজ করার সুযোগ পেয়েছি যা ইতিহাসের পাতায় আমাদের সম্মানজনক জায়গা তৈরি করবে। এই দ্বীপপুঞ্জ মানবজাতি সম্পর্কে অনেককিছু জানতে সাহায্য করেছে। সুতরাং এই বিস্তীর্ণ স্থলভূমি এবং জলভূমির একচ্ছত্র প্রভু হওয়ার পরিবর্তে আমরা কি তাদের রক্ষক হওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারি না?’
ইউনেস্কো ঘোষিত দু’টি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান (ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট)-এর মধ্যে যোগসাধন ঘটাবে মহাসাগরের হাইওয়ে। এমনকী বহু বিলুপ্তপ্রায় এবং বিরল প্রজাতির সামুদ্রিক জীবের অস্তিত্ব রক্ষা করতেও সাহায্য করবে এই হাইওয়ে। উদাহরণ হিসেবে হাতুড়িমাথা হাঙর এবং হোয়েল শার্ক-এর কথা বলা যায়। এখন প্রধান লক্ষ্য হল, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ইকুয়েডর, কলম্বিয়া, পানামা এবং কোস্টা রিকাকে এই হাইওয়ের আওতায় আনা।
প্রতিটি দেশের সরকারই সামুদ্রিক জীবের সংরক্ষণের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছেন। খুশির খবর হল, নতুন এই সামুদ্রিক মণ্ডলে পর্যটকরাও বিচরণ করতে পারবেন। সাগরের বৈচিত্র্যময় রাজকীয়তা পরিদর্শনের সুযোগ পাবেন ভ্রমণপিপাসুরা। তাছাড়া গালাপাগোস সহ আশপাশের সমুদ্র বিভিন্ন ধরনের অ্যাডভেঞ্চারের জন্য আদর্শ। পর্যটকরা সেখানে স্কুবা ডাইভিং-এর মজা নেওয়ার সঙ্গে অদ্ভুত ধরনের সামুদ্রিক প্রাণী পর্যবেক্ষণের অভিজ্ঞতাও অর্জন করবেন। ঐতিহাসিক এই সিদ্ধান্তে সাক্ষর প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলম্বিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইভান ডুকে, কোস্টারিকা এবং পানামার দুই বিদেশ মন্ত্রী, আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন।
আরও পড়ুন: Srinagar: পর্যটকদের জন্য দারুণ খবর! উপত্যকাকে গভীরভাবে জানতে এবার বাস পরিষেবা চালু ভূস্বর্গে