মেঘা মণ্ডল
‘অফবিট ডেস্টিনেশন’—যেখানে পর্যটকের ভিড় নেই, রয়েছে প্রশান্তি। সিমেন্ট-নির্ভর শহুরে জীবন থেকে বেশ দূরে, কিন্তু বাজেটে একদম ফিট। চলতি বাংলায় যাকে বলে ‘খাপে খাপ’। বেড়াতে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাজেটের এই ‘প্যারামিটার’ সামনে এলেই কাছেপিঠের কালিম্পং, সিকিমই বেশি সার্চ করা হয় গুগলে। আমিও প্রতিদিন এই বিষয়গুলো সামনে রেখেই নতুন-নতুন ডেস্টিনেশনের খোঁজ নিয়ে আসার চেষ্টা করি আপনাদের জন্য। TV9 বাংলার ভ্রমণ সংক্রান্ত প্রতিবেদন লেখার সৌজন্যে মূর্তি থেকে কুপুপ… সব কিছু সম্পর্কেই জানার খোঁজ চলতে থাকে সবসময়। কিন্তু এবার নিজের বেড়াতে যাওয়ার পালা। আর আমারও বাজেট কম, কিন্তু চাই প্রকৃতির অনন্ত নির্জনতা। আপনাদের মতো আমারও ভরসা ছিল গুগল, ফেসবুকের ভ্রমণ গ্রুপ এবং কিছু ভ্রমণ সংক্রান্ত বই ও পত্রিকা। কিন্তু মনপসন্দ ডেস্টিনেশন পেলাম না কোথাও।
‘ডেস্টিনেশন খুঁজে নেব, আগে টিকিটটা কেটে নিই’—যেমন ভাবনা, তেমন কাজ। হাতে ৪ দিনের ছুটি। শুক্রবার রাতের দার্জিলিং মেল আর ফেরার জন্য মঙ্গলবার রাতের পদাতিক এক্সপ্রেস। এরপর ঠিক কী করব, কোথায় যাব, গাড়ি ঠিক হয়নি, বাজেটও জানা নেই… এরই মাঝে গুগল ম্যাপে মানেভঞ্জনের আশপাশের ডেস্টিনেশন খুঁজতে-খুঁজতে চোখে পড়ল কন্যম (Kanyam)। কিন্তু সে তো বিদেশ। যাওয়া যাবে?
নেপালের কন্যম। তথাকথিত ‘অফবিট’ সে নয়। কিন্তু ভারতীয় পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় খুব একটা থাকে না সে। ইউটিউব ঘেঁটে পাওয়া গেল কন্যমের বেশ কিছু ট্রাভেল ভ্লগ। ফেসবুকের উইকএন্ড গ্রুপে মিলল মাত্র একটা পোস্ট। আরও গুগল ঘাঁটলাম। ৪ বন্ধু মিলে ঠিক করে ফেললাম, জুলাইয়ে কন্যমই যাব। ট্রেনের টিকিট ছাড়া আর কিছুরই অগ্রিম বুক করা ছিল না আমাদের।
কর্মসূত্রে পরিচিত কিছু মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, ভারত-নেপাল সীমান্ত পানিট্যাঙ্কি দিয়ে যেতে হবে কন্যম। তাঁদের সাহায্য নিয়েই গাড়ি বুক করে ফেললাম এনজেপি (নিউ জলপাইগুড়ি) টু পানিট্যাঙ্কি। এরপর শুরু হল যাত্রা। ৭ জুলাই অফিস শেষ করে পৌঁছে গেলাম শিয়ালদহ। দার্জিলিং মেলে চেপে সোজা নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন। স্টেশনে আমাদের জন্য গাড়ি অপেক্ষা করছিল। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে পানিট্যাঙ্কির দূরত্ব প্রায় ৩৪ কিলোমিটার। গাড়িতে সময় লাগল প্রায় ১ ঘণ্টা। ৮ জুলাই পঞ্চায়েত ভোট থাকায় বাগডোগরার রাস্তায় সেরকম যানজট ছিল না। নকশালবাড়ি ছাড়িয়ে পৌঁছে গেলাম পানিট্যাঙ্কি।
নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে পানিট্যাঙ্কির গাড়িভাড়া পড়ল ১,৬০০ টাকা। পানিট্যাঙ্কিতে গাড়ি নামিয়ে দিয়ে চলে গেল। অথচ ঠিক সেই মুহূর্ত পর্যন্তও আমরা জানি না কীভাবে বর্ডার পার করব। সীমান্তে শনিবারের ব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো। একদিকে ফল-কাঁচা সবজির বাজার, জামা-কাপড়, জুতোর দোকান, আর অন্যদিকে মুদির দোকান। রাম পাম (এক ধরনের নুডলস) খেলাম ব্রেকফাস্টে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে বুঝলাম, এখান থেকে হেঁটে বা টোটো করে পার করতে হবে সীমান্ত। মাথাপিছু ১০টাকা করে দিয়ে উঠে পড়লাম টোটোয়। সীমান্তে দেখাতে হল আধার কার্ড, জানাতে হল কোথা থেকে আসছি। ব্যস, কাজ শেষ। মেচি নদীর সৌন্দর্য আর সীমান্তের ব্যস্ততা দেখতে-দেখতে পৌঁছে গেলাম ভারত থেকে নেপাল।
নেপাল পৌঁছে সর্বপ্রথম যে কাজটা সারতে হল, সেটা হল: মানি এক্সচেঞ্জ। ভারতীয় মুদ্রার ১০,০০০ টাকার পরিবর্তে পেয়ে গেলাম ১৫,০০০ নেপালি মুদ্রা। ধুলাবাড়ি থেকে আবার টোটোতে চাপলাম। মাথাপিছু ৫০ টাকা ভাড়া দিয়ে আমরা পৌঁছে গেলাম চারালি। এই চারালি থেকেই শেয়ার গাড়ি মিলবে কন্যম যাওয়ার জন্য। শেয়ার গাড়িতে মাথাপিছু ভাড়া নেপালি মুদ্রায় ৩০০ টাকা। প্রাইভেট গাড়িও বুক করা যায়, সেক্ষেত্রে ভাড়া পড়বে নেপালি মুদ্রায় ৩০০০-৪০০০ টাকা। চারালি থেকে কন্যমের দূরত্ব ৩৫ কিলোমিটার। সময় লাগল প্রায় দেড় ঘণ্টা।
সমভূমি ছাড়িয়ে পাহাড়ে ওঠার মজাটা টের পাওয়া যাচ্ছিল চারালি থেকে কন্যমের পথে। ভ্যাপসা গরম থেকে ঠান্ডা হাওয়া এসে লাগছিল মুখে-চোখে। আরেকটু উপরে উঠতেই দেখতে পেলাম নিচের বাগডোগরা শহর। মেঘ এসে ঢেকে দিচ্ছিল দৃশ্যপট। এটাই তো প্রশান্তি। এসব দেখতে দেখতেই চোখে পড়ল সবুজে মোড়া চা বাগান, আর পাইনের সারি। ড্রাইভার বলল, “কন্যম আ গায়া।”
কন্যম পৌঁছতে-পৌঁছতে বেলা ১২টা বেজে গেল। হোটেল বুকিং ছিল না আমাদের। কিন্তু গাড়ি থেকে নেমে থাকার বন্দোবস্ত করার আগেই কুয়াশায় মোড়া কন্যমকে ফ্রেমবন্দি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম দলের সক্কলে। যাই-ই হোক, বেশি খোঁজ করতে হয়নি। কন্যমের চা বাগানের মধ্যিখানেই হোটেল পাওয়া গেল। নাম—হোটেল হিল সাইট। যার বারান্দা ও জানলায় বসে আপনি চা বাগানের সবুজকে চোখ ভরে উপভোগ করতে পারবেন। ভারতীয় মুদ্রায় ১,০০০ টাকা করে ভাড়া রুমের। কন্যম পৌঁছে এক মিনিটও সময় নষ্ট করা মানে বোকামি। তাই চটপট রেডি হয়ে বেড়িয়ে পড়লাম ইলম জেলার এই ছোট্ট পর্যটন কেন্দ্রকে চিনে-জেনে নিতে।
কন্যমের কিছু বিশেষত্ব রয়েছে। এখানে নেপালের বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ আসেন উইকএন্ড কাটাতে। তাই ক্যাফের চল খুব বেশি। দেশের পূর্ব দিকে অবস্থিত হওয়ায় ঠান্ডা তুলনামূলক কম, সূর্যাস্তের সময় ৭টা। আর ঠিক সন্ধে ৭টার পর এখানকার রাস্তায় একটা প্রাণীও দেখা যায় না। সুতরাং, যে দিন কন্যম পৌঁছালাম, হাতে খুব কম সময় গ্রাম ঘুরে দেখার জন্য।
লাঞ্চের জন্য ঢুকলাম কুইরো ক্যাফেতে। ক্যাফের একদিকে চা বাগান, আর পিছন দিকে পাইনের জঙ্গল। নেপালি গান বাজচ্ছে। প্রতিটা টেবিলে বিয়ারের বোতল রাখা। শনিবারের দুপুর তারিয়ে-তারিয়ে উপভোগ করছে সকলে। আমরাও অর্ডার করে ফেললাম ক্রাফট বিয়ার, মোমো, চিকেন সিজ়লার, পর্ক চাউমিন আর মিক্সড ফ্রায়েড রাইস। মোমো, থুকপা, নুডলস থেকে চিকেন বারবিকিউ… সব কিছু পাওয়া যায়। কিন্তু থুকপা, নুডলস, রাইসে যে চিকেন বা পর্ক ব্যবহার করা হয়, তা হল ড্রাই মিট। অর্থাৎ, শুকনো মাংস, যার কোনও স্বাদ পাবেন না এবং ছিবড়ে হয়ে যাবে। তাই ক্যাফেতে খাবার অর্ডার করার সময় এ বিষয়ে সতর্ক থাকাই ভাল। যদিও যাঁরা খাবার সার্ভ করছেন, তাঁরাই আপনাকে জানিয়ে দেবেন যে, খাবারে ড্রাই মিট রয়েছে।
বাইরে এত বেশি কুয়াশা ছিল যে, ক্যাফেতে বসে কিচ্ছু চোখে পড়ছিল না। আর যেই-ই মেঘ সরে গেল, চোখের সামনে যে দৃশ্য ভেসে উঠল, তা হার মানাবে কোনও স্লো মোশন ইনস্টাগ্রাম রিল-কেও। সে কী অপার আরণ্যক সৌন্দর্য… ছুটে গেলাম চা বাগানের কোলে। যত দূর চোখ যায়, শুধু ঢেউ খেলানো সবুজ পাহাড় আর পাহাড়। শুধু মাঝেমধ্যে এক লাইনে দাঁড়িয়ে পাইন। এই চা বাগানের কোলে দাঁড়িয়ে কখন যে আপনার সময় কেটে যাবে, তা বুঝতেই পারবেন না। আমাদেরও তেমনই অবস্থা হয়েছিল। যদিও বর্ষাকাল হওয়ায়, মেঘ-কুয়াশার অবিরাম খেলাও টানা চলছিল।
ঘড়ির কাঁটায় তখন বিকেল ৫.৩০টা। ঝিরিঝিরি বৃষ্টি পড়ছে। পাইনের জঙ্গলে দাঁড়িয়ে রয়েছি আমরা। ঝিঁঝিঁর ডাক ধীরে-ধীরে তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে চরাচরে। তার সঙ্গে পাইনের পাতা থেকে টপটপ করে বৃষ্টির জল পড়ছে। এমন স্নিগ্ধতা কালিম্পং বা কার্শিয়াংয়ে উপভোগ করিনি, এমনকী সিকিমের প্রান্তেও নয়। এসব দেখতে-দেখতে বাঁ-হাতের ফিটবিটের স্মার্ট কাঁটা ছুঁয়ে ফেলল সন্ধে ৬.৩০টা। মেঘ সরছে, আলোর ছটা দেখা যাচ্ছে। সূর্য অস্ত যাচ্ছে। প্রায় ৩০ মিনিটের মধ্যে গোটা কন্যমে বৈদ্যুতিন আলো জ্বলে উঠল। সে এক বিস্ময়কর দৃশ্য… অভূতপূর্ব তো বটেই। ক্যামেরাবন্দি করাও যা প্রায় অসম্ভব।
আবারও গিয়ে উঠলাম অন্য এক ক্যাফেতে। ‘হুরহুরে ক্যাফে’। সেখানকার মেন্যুতে মিল্কশেকের উল্লেখ থাকলেও দুধের জিনিস পাওয়া যায় না। কন্যমে দুগ্ধজাত পণ্যের দাম বেশি এবং একমাত্র সে সব জায়গাতেই মেলে যাঁদের বাড়িতে গরু রয়েছে। তাই অর্ডার করতে হল লেমন টি। লেবু চায়ের এমন মিষ্টি স্বাদ কলকাতায় বসে পাওয়া সম্ভব নয়। আড্ডা-গানের মাঝে বেজে গেল ৭.৪৫। এবার হোটেলে ফেরার পালা। কন্যমের রাস্তায় একটা কুকুরও নেই সেই সময়। ঘুটঘুটে অন্ধকার। চা বাগানের পাহাড়ি পথ ধরে নামতে হবে। ফোনের ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালিয়ে, শক্ত করে একে-অপরের হাত ধরে, সাবধানে পা ফেলে পৌঁছলাম হোটেল হিল সাইট। হোটেল পৌঁছতেই মাত্র জানতে পারলাম, এখানে সন্ধে ৭টায় দোকানপাট সব বন্ধ হয়ে যায়। তাই ডিনার সারতে হলে এখনই জানাতে হবে, অন্যথায় রাতটা অভুক্ত হয়ে থাকতে হবে।
উত্তরবঙ্গ ও সিকিমের মতো হোম-স্টে সিস্টেম কন্যমে নেই। হোটেল থাকা-খাওয়ার খরচ আলাদা। আর মাত্র দু’রকম নেপালি থালি পাওয়া যায়, ভেজ আর নন-ভেজ। ভারতীয় মুদ্রায় ২৫০ টাকা করে দাম। সেখানে ভাত-ডাল-আলুভাজার পাশাপাশি শাকভাজা, আলুর তরকারি, ঝাল চাটনি আর পাঁপড় মিলবে। চিকেনও পাবেন। রাতে এই থালিই ছিল আমাদের ভরসা। এখানে ক্যাফেগুলোতেই ভাল খাবার পাওয়া যায়। এখানে যাঁরা চা বাগানের মাঝে হোটেলের মালিক, তাঁদেরই পাইন ফরেস্টের পাশে ক্যাফে রয়েছে। রাত ৯.৩০টায় খেতে বসলাম। ১০টার মধ্যে হোটেলের দরজাও বন্ধ। আর এভাবেই একটা দিন শেষ হল কন্যমে।
আগের দিন ৭টায় সূর্যাস্ত হয়েছে। ভাবলাম ভোর হয়তো দেরিতে হবে। তা-ও ৪.৩০টে উঠে পড়লাম সূর্যোদয় দেখার আশায়। ৯ জুলাই। কিন্তু সূর্যোদয় দেখা ভাগ্যে ছিল না। হোটেলের দরজা তখনও বন্ধ। এখানে মানুষের দিন শুরু হয় ভোর ৬টায়। তাই হাজার ডাকাডাকি করেও কোনও লাভ হল না। ঘরের জানালা খুলতেই রোদ এসে পড়ল। ভোর ৬.৩০টা। তখন হোটেলের লাগোয়া চা বাগানে দু’জন ভদ্রমহিলা গল্প করতে-করতে চা পাতা তুলছেন। এমন দৃশ্য ঘুমচোখে দেখা যায় বলে ভাবিনি কখনও। ৮টায় তৈরি হয়ে আবার নেমে পড়লাম কন্যম ঘুরতে।
কন্যমে রয়েছে একটা ভিউ পয়েন্ট আর স্কাই ওয়াক। এই দুই জায়গা থেকে আপনি চা বাগানের সৌন্দর্য দেখতে পাবেন। স্কাই ওয়াকে উঠতে গেলে ২০০ টাকা দিয়ে টিকিট কাটতে হবে। এছাড়া কন্যমের চা বাগানের কোলে রয়েছে প্যারাগ্লাইডিং করার সুযোগ। কিন্তু বর্ষার মরশুমে সেটা বন্ধ ছিল। চা বাগান আর পাইন ফরেস্ট নিয়ে কন্যম। গ্রাম একটু নিচের দিকে। পাহাড়ের উপর থেকে দেখা যায় গ্রামের স্কুলবাড়ি, টি ফ্যাক্টরি। এগুলো চা বাগানের কোলেই। আর বাগানের পথ ধরে পায়ে হেঁটেই ঘুরে নেওয়া যায় কন্যম। এখানে জোঁকের ভয় নেই। বরং শুঁয়োপোকা, মাকড়সা তুলনায় বেশি। পাহাড়ের কাঁচা মাটিতে হাঁটার অভিজ্ঞতা না থাকলে এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। তবে, চিন্তা নেই। হলুদ রঙের লেখা ‘KANYAM’ লোগোর সামনে দাঁড়িয়ে সবুজ গালিচা দেখতে-দেখতে কেটে যেতে পারে অনেকটা সময়। আমরা সেই দলেই নাম লিখিয়ে ছিলাম। আর এভাবেই ঘুরে নিলাম নেপালের কন্যম।
এক্ষেত্রে কিছু কথা বলে রাখা ভাল। নেপালি মুদ্রার মূল্য ভারতীয় মুদ্রার তুলনায় কম। তাই যেটা আপনার মনে হচ্ছে ৩০০ টাকা, সেখানে এরজন ভারতীয় হিসেবে আপনার খরচ হবে ১৮৭ টাকা। তাই বাজেটের দিকে একদম ফিট। আর যেটা সমস্যা, মোবাইল নেটওয়ার্ক। তবে কন্যমের প্রতিটা ক্যাফে, হোটেলে ফ্রি ওয়াই-ফাই রয়েছে। তাই কানেক্টিভিটি নিয়ে খুব একটা সমস্যা হয়নি।
পরবর্তী পর্ব: কন্যমের পর এবার ট্রি হাউসে ঘেরা শ্রী আন্তু, কেমন নেপালের এই ছোট্ট জনপদ?