একদিনে দাঁড়িয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা। আর পাহাড়ের অন্য ঢাল বেয়ে নেমে গিয়েছে সবুজ চা বাগান। এর মাঝে মাঝে ঝাউনির কাজ করছে চেরি ব্লসম গাছ। এমন দৃশ্য না দেখলে সিকিম (Sikkim) ভ্রমণ কিছুটা হলেও অসম্পূর্ণ থেকে যায়। আর এই দৃশ্য সিকিমে শুধু দেখা যায় টেমি চা বাগানে। সিকিমের বসন্ত মানেই লাল টুকটুকে রডোড্রেনডন। কিন্তু টেমি চা বাগানের রহস্য লুকিয়ে রয়েছে চেরি ব্লসমে। টেমি হল সিকিমের একমাত্র চা বাগান (Tea Garden), যেটি নিজস্ব রূপে-গুণে-গন্ধে আপনাকে মুগ্ধ করবে।
সিকিমের জনপ্রিয় অফবিট ডেস্টিনেশন রাবাংলা থেকে মাত্র ১৮ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত টেমি চা বাগান। পাহাড়ি গ্রামের নৈসর্গিক দৃশ্য মন কেড়ে নেয়। সেখানে দৃশ্য আরও মনোরম হয় পাহাড়ি ফুলে। মূলত রডোড্রেনডনের জন্যই জনপ্রিয় সিকিমের বসন্ত। কিন্তু টেমি হল সিকিমের একমাত্র ডেস্টিনেশন যেখানে পর্যটকেরা ভিড় করে চেরি ব্লসমের খোঁজে। হয়তো জাপানের মত ‘সুন্দর’ নয়, কিন্তু হিমালয়ের কোলে চেরি ব্লসম তাও বাড়ির কাছে- এমন দৃশ্য মিস করতে চায় না কেউই।
প্রিয়জনের সঙ্গে প্রকৃতির কোলে কিছুটা সময় একান্তে কাটানোর জন্য সেরা ঠিকানা এই টেমি চা বাগান। পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নেমে গিয়েছে সবুজ চা বাগান। যতদূর চোখ যায়, শুধুই সবুজ। আর অন্যদিকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে তুষারবৃত কাঞ্চনজঙ্ঘা। তবে এই সবচেয়ে রোম্যান্টিক দৃশ্য হল টেমি চা বাগানের রিসর্টে বসে সূর্যোদয় দেখা।
এক চা নিয়ে হোমস্টের জানালায় বসে সূর্যোদয় দেখুন। তারপর ভোরবেলায় বেড়িয়ে পড়ুন চা বাগানের রাস্তা ধরে মর্নিং ওয়াকে। আপনার সঙ্গে পা মিলিয়ে চলবে এই পাহাড়ির সুগন্ধ। ভোরের স্নিগ্ধতায় ছুঁয়ে যাবে আপনার মন। ভোর থেকেই আপনার কানকে ব্যস্ত রাখবে পাখিদের কলরব। পক্ষীপ্রেমীদের জন্যও স্বর্গোদ্যান এই চা বাগান। বেলা বাড়লে বেড়িয়ে পড়তে পারেন রাবাংলা কিংবা নামচির উদ্দেশ্যে। সম্পদ্রুপ্সে মনাস্ট্রি, নামচি চারধাম, নামচি রোপওয়ে, রক গার্ডেন, রাভাংলা বুদ্ধ পার্কের মত জায়গাগুলি আপনি টেমি চা বাগান থেকে ঘুরে আসতে পারেন।
হাওড়া থেকে উত্তরবঙ্গের কোনও ট্রেনে চেপে চলে যান নিউ জলপাইগুড়ি। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ১১৯ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত টেমি। দক্ষিণ সিকিমের রাবাংলা থেকে মাত্র ১৮ কিলোমিটার দূরেই রয়েছে এই সবুজে মোড়া স্বর্গ। টেমি চা বাগানের মধ্যে এবং আশেপাশের জায়গায় থাকার জন্য বেশ কয়েকটি হোমস্টে, হোটেল রয়েছে। এখানে থাকা খাওয়া নিয়ে মাথাপিছু ১৫০০/- খরচ হবে। তাহলে গরমের ছুটি কাটাতে কবে যাচ্ছেন এখানে?
আরও পড়ুন: বৈশাখে বিয়ে? মধুচন্দ্রিমার ডেস্টিনেশন খুঁজে নিন ১০ হাজারের টাকার মধ্যে