Srinagar: অস্তিত্ব সংকটে শ্রীনগরের বিখ্যাত গোলাপ জল!

TV9 Bangla Digital | Edited By: megha

Sep 17, 2021 | 1:29 PM

এই বৃদ্ধ মানুষটির সঙ্গে ধীরে ধীরে অস্পষ্ট হয়ে উঠবে ইতিহাস, ভবিষ্যতে প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি গোলাপ জলের গুরুত্বও হ্রাস পাবে। হয়তো, অন্যান্য বিষয়গুলির মতই এটাও হয়ে উঠবে লোককথা। শুধু গোলাপ জল নয়, এই উপত্যকায় হ্রাস পাবে কোশুর গুলাবও।

Srinagar: অস্তিত্ব সংকটে শ্রীনগরের বিখ্যাত গোলাপ জল!
আব্দুল আজিজ কোজগার

Follow Us

আপনি সম্ভাবত কাশ্মীরের আব্দুল আজিজ কোজগারের সম্পর্কে জানেন না। এই বৃদ্ধ মানুষটির বাস শ্রীনগরে, যাঁর পরিবার প্রায় ৫০০ বছর ধরে গোলাপ জল তৈরি করে আসছে। এবং আব্দুল হলেন সেই পরিবারের সদস্য, যাঁর সঙ্গে শেষ হয়ে যাবে শ্রীনগরের গোলাপ জল তৈরির ইতিহাস।

এই বৃদ্ধ মানুষটির সঙ্গে ধীরে ধীরে অস্পষ্ট হয়ে উঠবে ইতিহাস, ভবিষ্যতে প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি গোলাপ জলের গুরুত্বও হ্রাস পাবে। হয়তো, অন্যান্য বিষয়গুলির মতই এটাও হয়ে উঠবে লোককথা। শুধু গোলাপ জল নয়, এই উপত্যকায় হ্রাস পাবে কোশুর গুলাবও। কোশুর গুলাব অর্থাৎ কাশ্মীরি গোলাপ।

গোলাপ জলের জার

শ্রীনগরের পুরানো শহরের একটি অ্যানাক্রোনিস্টিকের দোকানে বসেন কোজগার। সেই দোকান প্রাচীন কাচের জার এবং বাতাসে গোলাপের সুগন্ধ দ্বারা পরিবেষ্টিত। আব্দুল আজিজ কোজগারের পূর্ব পুরুষ ৫০০ বছর আগে তুরস্ক থেকে প্রথম কাশ্মীরে আসেন। সেই থেকে এই পরিবারে চলে আসছে গোলাপ জল তৈরির শিল্প।

তাঁর এই দোকানটি ১০০ বছরেরও বেশি পুরানো। জানা গিয়েছে পুরানো বাড়ির ভিতরে এর চেয়েও পুরানো একটি দোকান ছিল যা ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে ছিল। এটিতে গোলাপ জল তৈরির জন্য একটি বিশেষ ঘর ছিল। নতুন বাড়ি তৈরি হওয়ার পর, এই দোকানটি রাস্তার মুখোমুখি করার জন্য সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন আর এই ব্যবসায় লাভ দেখতে পান না আব্দুল। তিনি জানান যে, পাঁচ থেকে ছয় কিলোগ্রাম গোলাপ ব্যবহারের পরে যে পরিমাণ গোলাপ জল আসে তা অনেক কম। তাতে ব্যবসা চালানো সম্ভব নয়। তাই তিনি তাঁর সন্তানদের বাধ্য করেননি এই ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখার। তবে তিনি চান যে, এই ঐতিহ্য অব্যাহত থাকুক।

তৈরি হচ্ছে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে গোলাপ জল

আব্দুল আজিজ কোজগার এই গোলাপ জল তৈরির পদ্ধতি শিখেছিলেন তাঁর বাবার কাছ থেকে। আবার তাঁর বাবা শিখেছিলেন আব্দুলের পিতামহের থেকে। এই ভাবেই বংশ পরম্পরায় চলে আসছে গোলাপ জল তৈরির রীতি। এখানকার সম্প্রদায়ে কোজগারের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সাধুদের বার্ষিকীতে শুধুমাত্র তাঁর তৈরিই গোলাপ জল ব্যবহার করা হয়। এছাড়া মসজিদে বিভিন্ন সময়ে এই গোলাপ জলই স্প্রে করা হয়।

তবে শুধু গোলাপ জল নয়, কোজগারের এই দোকানে পাওয়া যায় এমন একটি সিরাপ, যার ওষুধি গুণ সম্পর্কে স্থানীয়রা বেশ পরিচিত। আব্দুলের এই দোকানে পাওয়া যায় একটি বিশেষ ধরনের সিরাপ, যা পেটকে ঠাণ্ডা করতে সহায়ক। অনেকে বিশ্বাস করেন যে এটি কিডনির জন্য একটি দুর্দান্ত ওষুধ। প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি, অ্যান্টিক এগুলো শুনে আপনি হয়তো ভাবতে পারেন যে এই গোলাপ জলের দাম অনেক বেশি। কিন্তু না, শিল্প দামি হলেও পণ্যের দাম বেশি নয়। আব্দুলের তৈরি ২০০ মিলি গোলাপ জলের বোতলের দাম মাত্র ৪০ টাকা।

শ্রীনগরের শেষ গোলাপ জল উৎপাদক

সময়ের সঙ্গে বদলায় অনেক কিছুই। এই দোকানে সুফি সাধুদের ছবি, সিরাপের তালিকা রয়েছে যা একসময় এখানে জনপ্রিয়ভাবে বিক্রি হত। এখন সেগুলি শুধুই ধ্বংসাবশেষ। তবে কঠিন বাস্তব এটাই যে, এই সমৃদ্ধশীল ঐতিহ্য যে কোনও দিন বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

আরও পড়ুন: পর্যটন শিল্পে আশা দেখছে লাদাখ! পালিত হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী জাঁস্কর উত্‍সব

Next Article